ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে এক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা

প্রকাশিত: ০০:১১, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

দিনাজপুরে এক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ এনে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে উপজেলার ১০ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান। লিখিত ভাবে অনাস্থা প্রস্তাবটি রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পাঠানো হয়েছে। ১৪ অক্টোবর শনিবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যানগণ বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন। অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম ওই আসনের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অনাস্থা প্রস্তাবের ৭টি কারণ উল্লেখ করা হয়। এগুলো হলো, উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম অবৈধভাবে পরিষদে কিছু লোকজনকে নিয়ে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপালকে অশ্লীল, অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ ও সরকারী উন্নয়নমূলক কাজে জনগনকে সহযোগিতা না করার জন্য সভা করেন। এছাড়াও তিনি উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদের সভাপতি আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলালকে মোবাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হত্যার হুমকি প্রদান করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান আইন পরিপন্থিভাবে ভিজিএফ এবং ভিজিডি কার্ডের নিজ পছন্দের নামের তালিকা প্রস্তুত করে চেয়ারম্যানদেরকে বিতরণ করতে বাধ্য করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান কোন আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে উগ্র, উদ্ভট ও স্বেচ্ছাচারী আচরনের পরিষদের সকল সদস্য আত্মমর্যাদার হানি করেন। এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ২০১৫ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে জঘন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন ও মর্যাদা ক্ষুন্ন করে। এর আগেও উপজেলা চেয়ারম্যানের আইন বর্হিভুত কাজে সহযোগিতা না করায় আব্দুর রহমান নামে এক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে শাররীকভাবে লাঞ্চিত করে এবং আহত করেন। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। এছাড়াও তিনি একজন প্রকৌশলীর কাছে চাঁদা না পেয়ে শাররীকভাবে নির্যাতন করেছিলেন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার অবৈধ্য কার্যকলাপের কোন প্রমান/সাক্ষী না রাখার জন্য সরকার নিযুক্ত তাকে প্রদত্ত গাড়ীর ড্রাইভারকে গাড়ী চালাতে না দিয়ে চেয়ারম্যান ব্যক্তিগতভাবে নিযুক্ত ড্রাইভারকে দিয়ে সার্বক্ষনিকভাবে গাড়ীটি চালান। কিন্তু ড্রাইভারকে বেতন ভাতাদী কৌশলে পরিষদের অর্থ থেকে প্রদান করেন। এমনিকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ব্যতিরেকে গাড়িটি ঢাকাসহ জেলার বাইরে নিজ কাজের জন্য ব্যবহার করেন আমিনুল ইসলাম। সাংবাদিক সম্মেলনে বীরগঞ্জ উপজেলা ১নং শিবরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনক চন্দ্র অধিকারী, ৩নং শতগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম কুতুব উদ্দিন, ৪নং পাল্টাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তছলিমুল আলম, ৫নং সুজালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহেশ চন্দ্র রায়, ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সরকার, ৭নং মাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র দেব শর্মা, ৮নং ভোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান পান্না, ৯নং সাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, ১০নং মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিদুল হক ও ১১ নং মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেয়া অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান জামায়াত-বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচিত হয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে কোন কারণ ছাড়াই এ ধরনের সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। যা উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
×