ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কেশবপুরে প্রভাবশালী ঘের মালিকের দখল করা সরকারি খাল উদ্ধার করেছে প্রশাসন

প্রকাশিত: ০২:৪৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কেশবপুরে প্রভাবশালী ঘের মালিকের দখল করা সরকারি খাল উদ্ধার করেছে প্রশাসন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ মঙ্গলবার দুপুরে কেশবপুরের বোয়ালিয়া বিলের আলোচিত সরকারি খাল প্রশাসন দখলমুক্ত করেছে। বোয়ালিয়া বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের সংযোগ খাল দখল করে কংক্রিটের বাঁধ দিয়ে গত তিন বছর প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী আসাদ মাছের ঘের করেছিল। জবরদখল করে নেয়া কৃষকদের জমিতে মাছের ঘের করায় এলকাবাসী এক বছর আগে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগে করায় মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসন ওই খালের ইট সিমেন্টের বাঁধ ভেঙ্গে দেয়। সরেজমিন বোয়ালিয়ার বিলে গিয়ে দেখা যায়, কেশবপুরের আলোচিত প্রভাবশালী ঘেরমালিক সেলিমউজজামান আসাদ বোয়ালিয়া বিলের প্রায় ১২শ’ বিঘা জমিতে গত তিন বছর ধরে মাছের চাষ করেছেন। কপোতাক্ষ নদের সংযোগ বোয়ালিয়া খাল ওই বিলে মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত। ঘের মালিক আসাদ ওই সরকারি খালের প্রায় দুইশত ফুট দখল করে কংক্রিটের বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের করছেন। উপস্থিত শতশত এলকাবাসী জানান, অনেকে জমি জোরপূর্বক দখল করে তাদের কোন টাকা না দিয়ে আসাদ গত তিন বছর ধরে মাছে ঘের করে আসছে। এলাকায় গরীব কৃষকদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে আসাদ জোর করে মাছের ঘের করেছে। ১৫/০৬/১৭ তারিখে যশোরের জেলা প্রশাসক ও কেশবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এলকাবাসি ঘের উচ্ছেদের জন্য লিখিত অভিযোগ করেন। তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন এলাকার কুষকদের জমির বিনিময়ে হারি দেওয়া হয় না। তাদেরকে ভয় ভীতি এমন কি কিছু বললে মারপিট করা হয়। মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করানো হয়। কেশবপুরের সহকারী কমিমনার ভূমি মোঃ কবির হোসেন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। পরে যশোরের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মঙ্গলবার বোয়ালিয়ার বিলের মধ্যে ঘের মালিকের দেওয়া কংক্রিটের বাঁধ অপসারণ করা হয়। বরনডালি গ্রামের, মোস্তফা, আব্দুল রাজ্জাক, আব্দুল মান্নানসহ বহু কৃষক বলেন তাদের কারো ৪ বিঘা, কারো ৬ বিঘা, কারো ৩ বিঘা জমি রয়েছে ওই বিলে অথচ তাদের এ পর্যন্ত কোন হারি দেওয়া হয়নি। তাছাড়া এ এলাকায় যারা ঘের করেন তারা বোরো মৌসুসেম ফসল আবাদ করতে দেয়। গত বছর ঘের মালিক তাদের ইরি ফসল ও এ বছর বোরো আবাদ করতে দেয়নি। বর্তমানে ওই মাছের ঘেরে প্রায় ৭ ফুট পানি জমিয়ে রাখা দেখা গেছে। আড়ে ১০ ফুট ও লম্বায় ১৫ ফুট চওড়া ইটের কংক্রিটের বাঁধ ভেঙ্গে দিলে হু হু করে ওই পানি কপোতাক্ষ নদের দিকে যেতে দেখা গেছে। র্যাব, পুলিশসহ সঙ্গীয় বাহিনী নিয়ে বাঁধ অপসারণের নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারি বলেন, হাই কোর্টে নির্দেশে আমরা এটা অপসারন করছি। এখানে উপস্থিত অনেক কৃষক অভিযোগ করেছেন, তাদের জমি জোর করে দখল করে নেয়া হয়েছে। মাছের ঘেরের ভেতরে ১’শ ৮০ ফুট লম্বা সরকারি খাল দখল করে মাছের করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিক ভাবে আজ কংক্রিটের বাঁধ অপসারণ করলাম। পরে খালের সীমানা নির্ধারন করে পৃথক করা হবে। এখন এলাকার কৃষকরা ফসল করতে পারবেন। তবে কৃষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, আজ ভেঙ্গে দিয়ে গেলেও প্রভাবশালী ঘের মালিক কাল আবারও বেঁধে দেবে।
×