ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্মাণের ৩০ দিনের মাথায় ধসে পড়েছে প্রাচীর

সোনাহাট স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৩ মে ২০১৭

সোনাহাট স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় সোনাহাট স্থলবন্দরের বালু ভরাট, সীমানা প্রাচীর ও অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধীন কুড়িগ্রাম সোনাহাট স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ৪৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে মাটি ভরাটসহ অবকাঠামো নির্মাণ, শেডঘর, ওয়েট স্কেল, ড্রেন নির্মাণ ও সীমানা প্রাচীরসহ অন্যান্য সকল কাজের মোট ব্যয়বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে সম্পন্ন সকল কাজের গুণগত মান নিয়ে এলাকাবাসী ও স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। এলাকাবাসী চাইছেন সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ যেন তদন্ত টিম পাঠায়। জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাটি ভরাট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ অনিক ট্রেডিং করপোরেশন মোহম্মদপুর ঢাকার লাইসেন্সে কাজ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সরকার রকীব আহম্মেদ জুয়েল ও আব্দুর রাজ্জাক। সীমানা প্রাচীর নির্মাণের ৩০ দিনের মাথায় ২শ’ ফিট ওয়াল ভেঙ্গে পড়েছে। গত ১৮ মে বিকেলে এই সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ায় স্থানীয়দের মাঝে নির্মাণ কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাটি থেকে ১৫ ফিট উচ্চতার ওয়াল ভেঙ্গে স্থানীয় কৃষক দেল মোহাম্মদ ও আব্দুল লোকমানের ধান ক্ষেতের ওপর পড়েছে। সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ার পর সাবঠিকাদার ইট, বালু ও নির্মাণ সামগ্রী সরানোর কাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, সীমানা প্রাচীরের ফাউন্ডেশন মাত্র ২ ফিট করে দেয়া হয়েছে এবং নির্মাণ কাজে প্রথম শ্রেণীর ইট ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণীর ইট। খোয়া ও পিকেট প্রথম শ্রেণীর ইটের হওয়ার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণীর ইট ও ইটভাঁটিার টুকরো রাবিশ দিয়ে। এছাড়াও সিমেন্ট কম দিয়ে বেশি করে বালু ব্যবহার করা হয়েছে। মাটি ভরাটের কাজ ভিটি বালু দিয়ে করার কথা থাকলেও এঁটেল মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয় আব্দুল মজিদ, রফিকুল ইসলাম, মিজু আহমেদ, জহুরুল হক, মফিজুল ইসলাম জানান, ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে কাজ হতে থাকলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। সোনাহাট স্থলবন্দরের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তমিজউদ্দিন জানান, ৪৩ কোটি টাকার কাজের ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সব কাজই নি¤œ মানের। কাজের মান নিয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। সোনাহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান প্রাচীর ভেঙ্গে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আপনি কোন কিছু লিখলে সাব ঠিকাদার সরকার রকীব আহমেদ জুয়েল ভাইয়ের সাথে কথা বলেন। স্থলবন্দর নির্মাণ কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী রুবেল আহমেদ সীমানা প্রাচীর ও মাটি ভরাট কাজের ব্যয়বরাদ্দ জানেন না বলে জানান। প্রাচীর ভাঙ্গার বিষয়ে সাব ঠিকাদার জুয়েলের সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন।
×