ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ডান্সবারে আয় ২০ হাজার থেকে লক্ষ!

প্রকাশিত: ১৮:৪১, ২৯ মার্চ ২০১৭

ডান্সবারে আয় ২০ হাজার থেকে লক্ষ!

অনলাইন ডেস্ক ॥ ডান্সবারের নিজস্ব ভাষা আছে। খদ্দের কাস্টমার, কিন্তু ঘনিষ্ঠ খদ্দের গেস্ট। উড়ন্ত টাকার নাম কালেকশন। পেশি ফুলিয়ে বা উত্তম-মধ্যমে মেয়েদের অবাঞ্ছিত কাস্টমারদের হাত থেকে রক্ষা করেন যাঁরা, তাঁরা বাউন্সার। কোন ডান্সবারের মান কেমন, তা বোঝা যায় বাইরে দাঁড়ানো চারচাকার মান দেখেই। কাস্টমার এবং গেস্টগণ যৌন আবেদনমূলক পোশাক এবং নাচই পছন্দ করেন। সে কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত স্বল্পবাসে নর্তকীরা ফ্লোরে আসেন এবং হাতে অচল মাইক্রোফোন নিয়ে উদ্দাম নাচেন। টাকা উড়তে থাকে। এর অধিকাংশই কাঁচা টাকা, কালো টাকা। প্রোমোটার-রাজ আর সিন্ডিকেটই ডান্সবারের প্রধান ভরসা। নর্তকীরা রোজগারের বেশীরভাগই ব্যান্ডলিডারকে দিয়ে দিতে চুক্তিবদ্ধ। গড়ে প্রায় ৬০ শতাংশ। থাকার ব্যবস্থা নিজে করে নিলে ৫০:৫০ কমিশনেও কাজ হয়। ব্যতিক্রমও আছে। কোনও নর্তকীর প্রতিরাতের কালেকশন যদি মারকাটারির চেয়েও বেশি মারকাটারি হয়, তখন ব্যান্ডলিডার ৩০ বা ৪০ শতাংশ কমিশনেও খুশি থাকেন। কমিশন বাদ দিয়ে কত রোজগার হয় রোজ এক একজন মেয়ের? সকলের এক নয়। গড়ে ২০ হাজার থেকে লক্ষাধিক। ফিক্সড গেস্টের সংখ্যা যত বেশি, রোজগারও তত বেশি। সঙ্গে রয়েছে এক্সট্রা সার্ভিসের টাকা। তবে, একস্ট্রা সার্ভিস নামের দেহদান প্রথায় সকলে যুক্ত নন। শতাংশের হিসাবে ১০ শতাংশও নয়। তবে সমাজসেবী সংস্থা ও বাউন্সারদের বক্তব্য, এই সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। যাঁদের ৯৯ শতাংশ এই পেশায় এসেছেন বা আসেন পরিবারের অনটনের কারণে। অথবা, পাচার হয়ে। ভিআইপি রোডের পানশালার এক নর্তকী এত রোজগার সত্ত্বেও ভুলতে পারেন না সেই দুঃস্বপ্ন! তাঁর কথায়, আমায় চাকরি দেওয়ার নাম করে হরিয়ানা থেকে আনা হয়েছিল। আরও বেশ কয়েকজনকে। এসে বুঝতে পারলাম, কী চাকরি! রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, গ্রামসভা, পঞ্চায়েত বা স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে। কে গেল, কে এল, তার খোঁজ রাখতে হবে। স্কুলেরও দায়িত্ব দেখা যে, কোন মেয়েটি হঠাৎ উধাও হয়ে গেল। মোদীর ডিমনিটাইজেশনের রেশ পড়েছিল ডান্সবারেও। কারণ, বৈধ নোট পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল। প্রতিদিন যে খুচরো নোটের জোগান তৈরি রাখতে হয় ডান্সবার-চালকদের, ভাটা পড়েছিল তাতেও। তবে কদিনের মধ্যেই ছাপিয়ে নেওয়া হয়েছিল নকল নোটের কুপন। তাই দেওয়া হতো খদ্দেরদের। যাওয়ার আগে খদ্দেরেরা অবৈধ পুরনো বড় নোটেই হাজার-লাখের হিসাব মিটিয়ে যেতেন। পুরনো বড় নোটের জন্য বেশি দিতে হতো ২০ শতাংশ। ব্যান্ডলিডার অবৈধ বড় নোটের ব্যবস্থা বুঝে নিতেন। সমস্যায় পড়েছিলেন বারগার্লেরা। ব্যান্ডলিডার তাঁদের পুরনো নোট ধরাচ্ছিলেন। অথচ ব্যাঙ্কে লাইন দেওয়ার মতো সময় রাতজাগা বারগার্লেদের নেই! তাঁদের দিনে ঘুমাতে হয়! সে সমস্যা এখন আর নেই।
×