ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি মাথায় নিয়ে জুমার নামাজে মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১১ জুলাই ২০১৫

বৃষ্টি মাথায় নিয়ে জুমার নামাজে মুসল্লিদের  উপচেপড়া  ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টি উপেক্ষা করেই রমজানের চতুর্থ জুমায়ও মুসল্লিদের ভিড় ছিল উপচেপড়া। গত দুদিন ধরেই সারাদেশে অবিরাম বৃষ্টি করে। শুক্রবারও এর কোন ব্যতিক্রম হয়নি। সকাল থেকে কখনও মুষলধারে আবার কখনও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই মুসল্লিরা হাজির হন জুমার নামাজে। মুসল্লিদের ভিড়ে কোন মসজিদেই তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। ছাতা মাথায় নিয়েই নামাজে দাঁড়াতে দেখা গেছে অনেককে। ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে রমজানে জুমার নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। এবারের রমজানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো শুক্রবার রমজানের শুরু। আবার রমজান শেষও শুক্রবার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অন্যবারে রমজানে চারটি জুমাবার থাকলেও এবারের রমজানের মধ্যে পাঁচটি জুমাবার পড়েছে। চার শুক্রবার পেরিয়ে শেষ সপ্তাহেও পড়েছে রমজান। আগামী শুক্রবার পালিত হবে জুমাতুল বিদা। ওইদিন রোজা শেষে খোঁজ করা হবে শাওয়ালের চাঁদ। চাঁদ দেখা গেলে আগামী শুক্রবারই হবে রমজানের শেষদিন। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে রমজান মাসের জুমার দিনের ফজিলত ও মর্যাদা অন্য সময়ের চেয়ে অবশ্যই ভিন্ন। তাই মুসল্লিরা রমজানের জুমার দিনগুলোকে একটু ভিন্নভাবেই পরিবেশেই দেখে থাকেন। এ কারণে অন্য সময়ের তুলনায় রমজানে জুমার নামাজে মুসল্লিদের ভিড় থাকে বেশি। রমজান এবং জুমাবার উভয় মিলেই এদিনের মর্যাদা অনেক বেশি। তাই এইদিনে রোজাদার ব্যক্তি নিজেদের আমলের ঝুড়িকে ভারি করতে আরও বেশি তৎপর হয়ে থাকেন। জুমার নামাজ বাদেও এইদিনে রোজাদার ব্যক্তি বেশি পরিমাণ দানের জন্য নিজেদের হাতকে প্রসারিত করে থাকেন। জুমার দিনের ফজিলত রোজার মাসে সবচেয়ে বেশি হওয়ায় মুসল্লিরা ইবাদতের মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকেন। বিশেষ করে এইদিনে গরিব অসহায় রোজাদারদেরও ইফতার করানোর সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে চান না। তাছাড়া মুসল্লিরা জুমার নামাজে শরিক হয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট নিজেদের পাপমোচনের জন্য ফরিয়াদ করে থাকেন। রমজান মাসকে কোরান নাজিলের মাস বলা হয়েছে। তাই এ মাসে বেশি বেশি কোরান তেলাওয়াত করে থাকেন মুসল্লিরা। রোজার জুমার দিনের ফজিলত থেকে কোন মুসল্লিই বঞ্চিত হতে চান না। এ কারণেই শুক্রবার বৃষ্টি উপেক্ষা করে জুমার নামাজে ভিড় ছিল উপচেপড়া। নামাজে ঢাকার প্রতিটি মসজিদেই মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কোন কোন মসজিদে এ ভিড় ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চারগুন বেশি। অতিরিক্ত পুণ্যের আশায় জুমার নামাজের আজানের আগ থেকেই মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি শুরু হয়। নামাজের আগেই তা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। জুমার নামাজে রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে খুৎবা পাঠ করেন খতিবরা। এছাড়া নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা এবং আল্লাহ্র দরবারে গুনাহ থেকে মুক্তি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বৃষ্টির মধ্যে আজানের আগ থেকেই মুসল্লিরা ভিড় করতে থাকেন। জুমার নামাজের আজানের আগে মসজিদের ভেতরটা কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। অনেকে বৃষ্টিতে ভিজেই মসজিদে উপস্থিত হন। জাতীয় মসজিদের খতিব অধ্যাপক মওলানা সালাহউদ্দিন তার জুমাপূর্ব বয়ানে মাহে রমজানের ফজিলত ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। রমজান বিষয়ে হাদিস উদ্ধৃত করে রমজানে ধৈর্য ও সহানুভূতির শিক্ষা গ্রহণ করতে তিনি মুসল্লিদের আহ্বান জানান।
×