ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

টুটুল মাহফুজ

অনলাইন মার্কেটপ্লেস

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

অনলাইন মার্কেটপ্লেস

ফিজিক্যালি মার্কেট বলতে একটি স্থানকে বুঝানো হয় কিন্তু আউটসোর্সিং জগতে মার্কেটপ্লেস একটি স্থানের পাশাপাশি এটি একটি তৃতীয় পক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকে। সব ধরনের মার্কেটপ্লেসেই বায়ার এবং ফ্রীল্যান্সার উভয়কেই রেজিস্ট্রেশন করে স্ব স্ব প্রোফাইল জমা দিতে হয়। এই প্রোফাইল দেখেই উভয়পক্ষ একে অপরের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারে। অনলাইন মার্কেটপ্লেস এমন একটা সাইট যেখানে বায়ার বা ক্লায়েন্ট তার কাজ এর বর্ণনা দিয়ে এবং সেই কাজের জন্য তিনি কত ডলার দিবেন তার বর্ণনা দিয়ে কাজ পোস্ট করেন এবং যারা সেই ধরনের কাজ পারেন তাদের আবেদন করতে বলেন। আর ফ্রীল্যান্সার এর কাজ হলো, কাজের বিবরণটি ভালভাবে পড়ে, বুঝে যদি তিনি মনে করেন তিনি কাজটি করে দিতে পারবেন তাহলে কাজটি পাওয়ার জন্য আবেদন দাখিল করা। আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে একে বলা হয় বিড করা বা প্রপোজড করা। অনেক আবেদনকারীর মধ্য থেকে বায়ার একজনকে নির্বাচন করে তাকে কাজটি করার অর্ডার দিয়ে থাকেন। অনেক মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে একজন কন্ট্রাক্টর কি কি কাজ পারেন এবং কত টাকার বিনিময়ে তা করে দিতে ইচ্ছুক সে বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করে পোস্ট করে রাখা হয়। ক্লায়েন্টরা ঐ সকল পোস্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্য থেকে পছন্দ মতো একজনকে বেছে নিয়ে কাজ দিয়ে থাকেন। সারাবিশ্বে বহুসংখ্যক মার্কেটপ্লেস রয়েছে তবে সবগুলো নির্ভরযোগ্য নয়। যে কয়টি নির্ভরযোগ্য সাইটে কাজ করে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ww.wupowrk.com ww.wfiverr.com ww.wfreelancer.com ww.wguru.com microowrkers.com মার্কেটপ্লেসগুলোতে যে ধরণের কাজ পাওয়া যায় আগেই বলেছি, কম্পিউটার ব্যবহার করে করা হয় এমন সব ধরণের কাজ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে করা যায়, চাই কেবল প্রয়োজনীয় দক্ষতা। আপনি কী কাজ করে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করবেন তা নির্ভর করবে আপনার যোগ্যতার ওপর। ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক ধরনের কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে কাজগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয় নিম্নে সে বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত করা হলো। ওয়েব ডিজাইন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে থাকে। কিন্তু এই ওয়েবসাইট বানানোর জন্য তাকে অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার বা তার প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে দেয়ার জন্য মার্কেটপ্লেসে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। আর এই ওয়েবসাইট আবার নানা ধরনের হতে পারে। তাই ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতে চাইলে অনেক বিষয়ে পারদর্শী হতে হয়। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট যদিও আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়, প্রকৃতপক্ষে এ দুটি আসলে হাতের এপিট-ওপিট। ওয়েব ডিজাইনাররা নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করেন অন্যদিকে ডেভেলপাররা বানানো সাইট কাস্টমাইজ বা মডিফাই করেন এটাই মূলত তফাত। তবে ডেভেলপার হিসেবে কাজ করতে চাইলে অবশ্যই ওয়েবসাইট তৈরির বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে ভাল দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কেননা, কোন প্রকার কোডিং সম্পর্কে জ্ঞান না থেকেও একজন ব্যক্তি ডড়ৎফঢ়ৎবং কিংবা ঔড়ড়সষধ দিয়ে সহজেই একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু ঐঞগখ, ঈঝঝ এবং চঐচ সম্পর্কে ভাল জ্ঞান না থাকলে কোন ভাবেই ওয়ার্ডপ্রেস থিম বা জুমলা টেমপ্লেট কাস্টমাইজ করতে পারবেন না। তাছাড়া ডাইনামিক সাইটে যেসব প্লাগইন ব্যবহার করা হয় প্রোগ্রামিং সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে সেগুলো কাস্টমাইজ করা অসম্ভব। গ্রাফিক্স / লোগো ডিজাইন ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন ধরনের লোগো, ব্যানার প্রয়োজন হয়। মার্কেটপ্লেসগুলোতে এরকম অনেক লোগো ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ পাওয়া যায়। লোগো ডিজাইনের কাজ করতে হলে ফটোশপ এবং ইলাস্ট্রেটর এ ভাল দক্ষতা থাকা আবশ্যক। ডাটা এন্ট্রি অনলাইনে যে সকল কাজ হয় তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ কাজ হলো ডাটা এন্ট্রি। তবে কাজ সহজ বলে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিয়োগিতা এখানে বেশি। যদিও ডাটা এন্ট্রির মূল বক্তব্য হলো দেখে দেখে টাইপ করা তবে আউটসোর্সিং জগতে এর পরিধি আরও একটু ব্যাপক। কাজেই ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে হলেও ডাটা এন্ট্রির ক্ষেত্রে কী কী ধরনের কাজ করা হয় সে বিষয়ে ভাল ধারণা থাকা আবশ্যক। ডাটা এন্ট্রি কাজের সবচেয়ে সহজ এবং সর্বনিম্ন স্তর হলো ক্যাপচা টাইপ। যেখানে প্রতি ১০০০ ক্যাপচার জন্য বিল পাওয়া যায় ০.৩০ ডলার থেকে ১.৫০ ডলার পর্যন্ত। এসইও/ ডিজিটাল মার্কেটিং/ এফিলিয়েট মার্কেটিং কথা একটাই যে কাজই করুন না কেন দক্ষতার সঙ্গে করতে হবে। মার্কেটপ্লেসগুলোতে এসইও/ ডিজিটাল মার্কেটিং/ এফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয়ে প্রচুর কাজ পাওয়া যায় এবং কাজের মূল্যমানও অনেক বেশি। তাই যে কেউ চাইলে এসইও/ ডিজিটাল মার্কেটিং/ এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মতো কোর্সগুলো করে আউটসোর্সিং জগতে ঠাঁই করে নিতে পারেন। আর্টিকেল লেখা মার্কটপ্লেসগুলোতে যারা সুন্দর আর্টিকেল লিখতে পারেন তাদের জন্য ঐ লেখনী গুনটাই হতে পারে অনলাইনে উপার্জনের একটি উত্তম হাতিয়ার। মার্কেটপ্লেসগুলোতে ৩০০ থেকে ১০০০ থেকে শব্দের মধ্যে বিষয়ভিত্তিক আর্টিকেল চাওয়া হয়। সৃজনশীল চিন্তন ক্ষমতা এবং ইংরেজীতে পারদর্শী দলে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে উপার্জন করা যায়। স্ক্রিপট লেখা/ অডিও শুনে লেখা কাজটি বেশ সহজ হলে এতে পারিশ্রমিকের পরিমাণ খুব বেশি নয়। তবে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে এটিও একটি উপায় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। মার্কেটপ্লেগুলোতে এ ধরনের কাজও পাওয়া যায়। মোটামুটি সব ধরনের মার্কেটপ্লেস এর কার্যক্রম প্রায় একই রকম। প্রত্যেক মার্কেটপ্লেসে কী কী ধরনের কাজ করার সুযোগ আছে তার তালিকা দেয়া থাকে। যোগ্যতা অনুসারে আপনাকে খুঁজে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মূলত মার্কেটপ্লেসগুলো বায়ার এবং ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে সংযোগস্থাপনকারী তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করে। বায়াররা এসব মার্কেটপ্লেসকে কাজের জন্য নির্ধারিত বিল পেমেন্ট করে থাকে। অতঃপর সেই পেমেন্ট কাজ করার পর নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে ফ্রিল্যান্সারদের মার্কেটপ্লেসের এ্যাকাউন্টে জমা হয়। পরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সেই বিল বা উপার্জিত ডলারগুলো উঠানো যায়।
×