ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি হয়নি ॥ ড. মঈন খান

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত চলবে আন্দোলন ॥ গয়েশ্বর

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৪, ২৭ মার্চ ২০২৪

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত চলবে আন্দোলন ॥ গয়েশ্বর

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। মঙ্গলবার সকালে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকায় ফিরে শেরেবাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। এর আগে সাভার স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি হয়নি।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে গয়েশ্বর বলেন, আমরা সন্তানহারা মায়ের কান্না থামাতে পেরেছিলাম। আমরা স্বামীহারা, বোনহারা স্বজনহারাদের ব্যথা একটি পর্যায় কাটিয়ে দেশের দিকে তাকিয়ে এই স্বাধীনতার কথা চিন্তা করে দুঃখ-কষ্ট যন্ত্রণা আমরা সেদিন নিরসন করতে না পারলেও এই স্বাধীনতায় অত্যন্ত আপ্লুত ছিলাম এবং আমাদের মধ্যে স্বাধীনতা অর্জনের আনন্দ ছিল। ক্রমান্বয়ে আজকে ৫৩ বছর পর আমরা কী দেখছি? আমরা দেখছি, যে কারণে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, সেই কারণটি এখনো বলবৎ।
গয়েশ্বর বলেন, এখনো দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের মৌলিক অধিকার নেই, মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি এবং এখনো মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি অর্থাৎ অর্থনীতির কোষাগার আজকে খালি হয়ে গেছে। আকাশচুম্বি জিনিসপত্রের দামে আজকে মানুষ দিশেহারা। আজকে এই প্রাঙ্গণ থেকে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, আমাদের কাক্সিক্ষত গণতন্ত্র অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে, লড়াই চলতে থাকবে।

সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, উলামা দলের নেতা নেছারুল হক, জাসাসের নেতা লিয়াকত আলী, ছাত্রদলের নেতা রাকিবুল ইসলাম রাকিব, নাছির উদ্দীন নাছির, তাঁতী দলের নেতা আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।

এর আগে সকাল নয়টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। এ সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। যদিও তারা মুখে বলে গণতন্ত্রের কথা। তারা বাস্তবে একদলীয় শাসন কায়েম করছে। আগে করেছিল বাকশাল-১ আর এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র বাদ দিয়ে করেছে বাকশাল-২। এটা আমার কথা নয়, এটা বিশ্ববাসীর কথা।

মঈন খান বলেন, ইতিহাসের যা সত্য, তা ইতিহাস নির্ধারণ করে। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন জিয়াউর রহমান, তিনি কলকাতায় পালিয়ে যায়নি। তিনি বলেন, আজকে দুঃখের সঙ্গে আমাদের বলতে হচ্ছে, যে আদর্শ নিয়ে দেশের লাখ লাখ মানুষ একাত্তরে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল তার নাম ছিল গণতন্ত্র এবং তার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।

কিন্তু আজকে ৫৩ বছর অতিক্রান্ত হবার পর দেশের ১৮ কোটি মানুষের একটি প্রশ্ন সেই গণতন্ত্র কোথায় গেল? সেই দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি কোথায়?
মঈন খান বলেন, আজকে দুর্নীতির মাধ্যমে কত হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে, মেগা উন্নয়নের নামে কীভাবে মেগা দুর্নীতি হয়েছে? আর ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য যারা বিরোধী দল করে তাদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে, তাদের ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে।

মঈন খান বলেন, মানুষের যদি ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকে, দেশে যদি মানুষের গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ না থাকে তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রশ্ন কেন তারা এ দেশ স্বাধীন করেছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর সরকারকে দিতে হবে।

×