ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির আহ্বান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী

বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করব

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ২৭ মার্চ ২০২৪

বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করব

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আলোচনা সভায় যোগ দেন

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি নেতারা সত্যিকারে ভারতীয় পণ্য বর্জন করছেন কি না জানতে চেয়ে বলেছেন, যারা ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করব না বলে ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন, তাদের বউদের কতগুলো ভারতীয় শাড়ি আছে? তারা কেন শাড়িগুলো এনে পুড়িয়ে দিচ্ছেন না? বউদের শাড়িগুলো পুড়িয়ে দিলে বুঝব সত্যিকারের পণ্য বর্জন করেছেন।

ভারতীয় মসলা তারা খেতে পারবে কি না এ উত্তর তাদের দিতে হবে। আপনারা (বিএনপি) রং-চং-সং করতে ওস্তাদ, এটা আমরা আগেও দেখেছি। বাস্তব কথায় আসেন, আপনারা এই পণ্যগুলো সত্যিকার বর্জন করছেন কি না, এ কথাটাই আমরা জানতে চাই।
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচারের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হবার আগে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান। যা ইপিআর এর ওয়্যারলেস, টেলিগ্রাম-টেলিপ্রিন্টার এবং দলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। অথচ ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর এই ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো হয়। কোন এক মেজর একটি ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে বাঁশিতে ফুঁক দিল আর অমনি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেল! এভাবে একটি দেশ স্বাধীন হয় না। এখনো ইতিহাস বিকৃতির সেই ভাঙা রেকর্ড তারা (বিএনপি)  বাজিয়েই যাচ্ছে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর  সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, দলের স্বাস্থ্য সম্পাদক ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।

ভারতীয় পণ্য নিয়ে বিএনপির দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকা-ের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা না বলে পারলাম না। বিএনপির এক নেতা চাদর খুলে পুড়ল। বিএনপির এক নেতা চাদর খুলে আগুন দিচ্ছেন যে ভারতীয় পণ্য ব্যবহার করবেন না। এরপর আবার দেখা গেলে কিছু চাদর কিনে এনে পোড়ানো হলো। আচ্ছা শীতকাল তো চলে গেছে এখন আর চাদর পোড়ালে কী এসে যায়?

যে নেতারা বলছেন ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন, তাদের বউদের কয়খানা ভারতীয় শাড়ি আছে? আমি জানি, ঈদের আগে বিএনপির মন্ত্রীদের বউরা ভারত থেকে শাড়ি এনে বিক্রি করত। আর আমাদের দেশে কিছু আঁতেল আছে। বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন যিনি। বাংলাদেশে একটা কাণ্ড আমরা দেখি, অতি বাম, অতি ডান। স্বাভাবিকভাবে গণতান্ত্রিক ধারাটা তারা পছন্দ করেন না।
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপি নেতাদের বলব, যারা যারা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন সবাই বাড়িতে গিয়ে তাদের বউরা যেন কোনো মতে কোনো ভারতীয় শাড়ি না পরেন; আলমারিতে যে কয়টা শাড়ি আছে সব এনে যেদিন ওই অফিসের সামনে পোড়াবেন, সেদিন বিশ্বাস করব আপনারা সত্যিকারে ভারতীয় পণ্য বর্জন করলেন।

বিএনপি নেতারা কি ভারতীয় মসলা ব্যবহার বন্ধ করতে পারবেন, এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে গরম মসলা, পেঁয়াজ; ভারত থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করছি, রসুন-আদা, মিজোরাম থেকে আমরা আদা আনি, মসলাপাতি, আদা; ভারত থেকে যা কিছু আসছে তাদের কারও রান্না ঘরে যেন এ ভারতীয় মসলা দেখা না যায়। তাদের মসলা ছাড়া রান্না করে খেতে হবে। এটা তারা খেতে পারবেন কি না সেই জবাবটা তাদের দিতে হবে।

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা রং-ঢং করতে ওস্তাদ, এটা আমরা আগেও দেখেছি। বাস্তব কথা হলো আপনারা সত্যিকারের পণ্যগুলো বর্জন করছেন কি না সেটাই আমরা জানতে চাই। বিএনপি নেতাদের পেলে তাদের বউদের শাড়ির কথা আর মসলার কথা বলবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের যে দলটি বড় বড় কথা বলে, ২৫ মার্চ আওয়ামী লীগের সবাই নাকি পালিয়ে গেছে! আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে যুদ্ধ পরিচালনা করল। শুধু যুদ্ধ পরিচালনা নয়, সশস্ত্র বাহিনীর গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশকে ভাগ করা হয়। এক একটা সেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সেক্টরের যিনি দায়িত্ব ছিলেন তিনি আহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমান দায়িত্ব পায়, জিয়াউর রহমান একটা বেতনভুক্ত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিল জিয়াউর রহমান। এই কথা নিশ্চয়ই তাদের ভুলে গেলে চলবে না। এটাও বললে চলবে না যে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন মেজর। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার করেছি। ৫৩ বছরের মধ্যে ২৯টা বছর এই জাতির দুর্ভাগ্যের বছর। এই দেশটি ছিল পরাধীন। এ দেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত। সেই জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধ করে, স্বাধীনতার বিজয় এনে দেওয়া একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারীর জন্য সম্ভব। ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর এ দেশে ইতিহাস বিকৃতির পালা দেখেছি। 
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্ম হলো কলকাতায়। ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হয়, তখন তারা কিন্তু পূর্ব বাংলায় আসেনি, তারা করাচিতে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সেখানে পড়াশোনা করে। সেখানেই আর্মিতে যোগ দেয়। সেখান থেকে কার্যাদেশ করে সামরিক অফিসার হিসাবে পূর্ব বাংলায় এসেছিল দায়িত্ব পালন করতে। এটাই হলো বাস্তবতা। কিন্তু তার মনে তো পাকিস্তানটাই রয়ে গেছে। তার প্রমাণও আছে। স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হলো, এই প্রমোশনগুলা একে একে কে দিয়েছে? এটাও তো আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দিয়েছেন। এই অকৃতজ্ঞরা সেটাও ভুলে যায়, যোগ করেন তিনি।
স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে সর্বপ্রথম ২৬ মার্চ দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার সময় মান্নান সাহেব, চট্টগ্রামের সেক্রেটারি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করা শুরু করেন।  একে একে আমাদের যারা নেতা সবাই ঘোষণা পাঠ করে। সে সময় জহুর আহমেদ সাহেব বলেন, আমাদের একজন মিলিটারি লোক দরকার।

তখন মেজর রফিককে বলা হয়, তিনি তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আটকানোর জন্য অ্যাম্বুস করে বসে আছেন। বলছেন, আমি এখান থেকে নড়লে এই জায়গাটা ওরা দখল করে নেবে। ওই সময় জিয়াউর রহমানকে ধরে আনা হয় এবং তাকে দিয়ে ২৭ তারিখ সন্ধ্যার পরে জাতির পিতার পক্ষে ঘোষণাটা পাঠ করানো হয়।  কাজেই এটা নিয়ে বড়াই করার তো কিছু নেই! তারা এটা নিয়েই বড়াই করে যাচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে এখনও ভাঙা রেকর্ডের মতো বলে যাচ্ছে।

ওদের কখনও আক্কেল হবে না। এখন তারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তখন তারা কে কোথায় ছিল? যিনি (মঈন খান) বলে যান যে, ২৫ মার্চ পালিয়ে গিয়েছিল, তার বাবা কে ছিল? স্বাধীনতার পর ’৭৪ সালে যে দুর্ভিক্ষ হয়, তখন সে খাদ্য সচিব ছিল। এই খাদ্য সচিব বেইমানি করে ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে এদেশে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়েছিল। জিয়াউর রহমান যখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তখন সে পুরস্কার পেয়েছিল। তাকে মন্ত্রীর মর্যাদায় উপদেষ্টা বানিয়েছিল।
তিনি বলেন, মঈন খানের বাবা, তার নাম হলো মোমিন খান। তিনি ছিল খাদ্য সচিব। জাহাজ ফিরিয়ে দিয়ে খাবার আসতে দেয়নি বাংলাদেশে, দুর্ভিক্ষ ঘটানো হয়েছিল। দুর্ভিক্ষ কিন্তু বাংলাদেশে ছিল। আমি ’৮১ সালে দেশে আসি। সারা বাংলাদেশ ঘুরি। তখন প্রতি বছর দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে পরিবর্তন তারা করতে পারেনি। কারণ তারা আমাদের বিজয় নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। এটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল।

যার কারণে জাতির পিতাকে হত্যা করল। এরপর ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করল, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী, তাদের গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়। এরপর দল গঠন করে। আজ রাজনৈতিক দল করে অনেক বড় বড় কথা বলে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ দেশে মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই দল ক্ষমতা থাকলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয় সেটা তো আজ প্রমাণিত।

ক্ষমতা দখলকারীরা অর্থাৎ টেলিভিশনে ঘোষণা দিয়ে আমি রাষ্ট্রপতি হলাম, এই হলাম পার্টিরা যখন ক্ষমতা ছিল, এ দেশের মানুষের ভাগ্যে কী ছিল? ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশনজট, এই তো অবস্থাটা ছিল। আজ যারা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল, আমি জিজ্ঞেস করি আপনারা কোথায় ছিলেন? সেটাও একটু বলেন! জবাব দিন!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন এখানে (ঢাকায়) গণহত্যা শুরু করে, তারা কিন্তু চট্টগ্রামেও হত্যাকা- শুরু করেছিল। যারা জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ব্যারিকেড দিচ্ছিল, তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। চট্টগ্রামের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে জিয়াউর রহমান ছিল। সেই সময় যারা ব্যারিকেড দিয়েছে, জিয়াউর রহমানও তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে। শুধু তাই নয়, সোয়াত জাহাজ এসেছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র নিয়ে, সেই অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিল জিয়াউর রহমান। ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যে আক্রমণ চালায় সেই আক্রমণকারীর একজন কিন্তু জিয়াউর রহমান। 
টানা চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের সময় আমাদের গেরিলারা ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারকে উদ্ধার করতে এসেছিল। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকেও নিতে গিয়েছিল। তখন খালেদা জিয়া তাদের বলেছিল, আজকে আমি যাব না, আপনারা পরের দিন আসেন। পরের দিন এসে দেখে কেউ নাই। কোথায়? খালেদা জিয়া চলে গেছে ক্যান্টনমেন্টে দুই ছেলেকে নিয়ে। ক্যান্টনমেন্টে দুই ছেলেকে নিয়ে বহাল তবিয়তে সে আছে। প্রশ্নটা হলো, সেখানে যে চলে গেল কীসের ভরসায়? 
তিনি বলেন, এখানে আমি একটা কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আসলাম বেগ সে সময় পাক সামরিক অফিসার হিসেবে বাংলাদেশে কর্মরত ছিল, পরে পাকিস্তানে বোধ হয় সেনাবাহিনীর প্রধানও হয়েছিল সে। এই আসলাম বেগ একটা চিঠি লিখেছিল জিয়াউর রহমানের কাছে। সেই চিঠিতে জিয়াউর রহমানের কার্যক্রমে সে সন্তুষ্টি জানিয়েছিল। তার কার্যক্রমে সে সন্তুষ্ট, তাকে ভবিষ্যতে আরও কাজ দেওয়া হবে এবং জিয়ার পরিবার তার স্ত্রী ও দুই ছেলে যে ভালোভাবে আছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সেই কথাটাও চিঠিতে জানিয়েছে। চিঠিটার কপিটা ছিল, পার্লামেন্টেও পাঠ করা হয়েছে। এটা ডকুমেন্ট হিসেবে আছে।
শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, যে (জিয়া) স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ফেলল, তার বউ ছেলেকে হেফাজতে রেখে দিলো পাকিস্তানিরা আর আসলাম বেগ চিঠিতে জানাল জিয়ার কার্যক্রমে তারা সন্তুষ্ট, কেন সন্তুষ্ট জানেন? যতগুলো সেক্টরে যুদ্ধ হয়েছে, আপনারা হিসাব করে দেখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সব থেকে বেশি হত্যা করা হয়েছে যেটার দায়িত্বে ছিল জিয়াউর রহমান। সব থেকে বেশি হতাহত ছিল সেখানে।

ভারতসহ সব মিত্র রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে কোনো যুদ্ধে যে কোনো বিপ্লবে মিত্র শক্তির সহায়তা প্রয়োজন হয়। কাজেই আমরাও সেই সহায়তা পেয়েছিলাম। আবার পেয়েছি অনেক বড় বড় দেশের বৈরিতা, যারা পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী যখন আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের সমর্থন দিয়েছিল, অস্ত্র দিয়েছিল, সাহায্য করেছিল। তবে সেসব দেশের নাগরিকদের সহায়তা, তাদের সমর্থন বাংলাদেশ পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর, যারা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে, সমর্থন দিয়েছে, আমাদের শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে- আমরা তাদের কিন্তু সম্মাননা দিয়েছি। আমরা বাঙালি, আমরা কৃতজ্ঞ জাতি। আমাদের যদি কেউ সহযোগিতা করে, আমরা তাদের প্রতি সম্মান দেখাতে জানি, আমরা সেটাই প্রমাণ করেছি। বোধ হয় বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশ এভাবে মিত্র শক্তিকে সব ধরনের সম্মান দিয়েছে। আমরা মনে করি, সম্মান দিয়ে আমরাই সম্মানিত হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি অদ্ভুত কাণ্ড আমরা দেখি- অতি ডান (ডানপন্থি) ও অতি বাম (বামপন্থী) তারা এখন এক জায়গায় হয়ে গেছে। তাদের আদর্শটা কি? তাদের নীতিটা কি? তারা কোনো কিছুতেই ভালো খুঁজে পায় না। অতি বামে বেশ কিছু দল আছে তারা একেবারে বিপ্লব করবে। যে বিপ্লব করতে করতে তারা এখন ক্ষয়িষ্ণু হয়ে গেছে।

×