স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা সাহিত্যের অনন্য এক কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ। আজ বুধবার এই লেখকের জন্মদিনের আগের দিন মঙ্গলবার প্রদান করা হলো তার নামাঙ্কিত সাহিত্য পুরস্কার ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’। এবার সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন। নবীন সাহিত্যশ্রেণীতে পুরস্কার পেয়েছেন ‘নিঃসঙ্গ নক্ষত্র’ উপন্যাসের জন্য সাদাত হোসাইন। পুরস্কার হিসেবে রাবেয়া খাতুনকে পাঁচ লাখ টাকা, পুরস্কারের স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়। সাদাত হোসাইনকে দেয়া হয় এক লাখ টাকা এবং স্মারক ও সনদ। পুরস্কার প্রদান মঞ্চটি এদিন হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে নানা কথামালায় ভরে উঠে।
মঙ্গলবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রবীণ ও নবীন দুজন কথাসাহিত্যিকের হাতে তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করেন এই পুরস্কারের জন্য গঠিত বিচারকম-লীর সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে অতিথিদের পাশাপাশি কথা বলেন হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও লেখকের ছোট ভাই শিক্ষাবিদ লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অন্যদিন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
আব্দুল মোমেন বলেন, বর্তমান সমাজে আমরা অবক্ষয় দেখি। আর এসব অবক্ষয় দূর করতে পারে সৃজনশীল নানা কর্ম। হুমায়ূন আহমেদের নামাঙ্কিত এ পুরস্কার এই অঙ্গনের মানুষদের অনুপ্রেরণা দেবে।
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিত্য শুধু অসংখ্য পাঠক তৈরি করেননি পাশাপাশি তার লেখা অনুপ্রাণিত করেছে অসংখ্য লেখককে। তার নামাঙ্কিত এ পুরস্কার তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করবে আশা করি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, হুমায়ূন আহমেদের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল ‘ডোন্ট কেয়ার’। তিনি সত্যি কাউকে তোয়াক্কা করতেন না। তিনি যা ভাল মনে করতেন তাই করতেন। সারা দেশে যখন রাজাকারদের কথা উচ্চারণ করা অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ ছিল তিনি তখন টিয়া পাখির মুখ দিয়ে ‘তুই রাজাকার’ উচ্চারণ করিয়েছিলেন। আসাদুজ্জামন নূর বলেন, হুমায়ূন আহমেদ এমন একজন মানুষ যিনি অবিস্মরণীয় কিছু সৃষ্টি করে গেছেন। তিনি সৃষ্টিগুলো করেছেন বলেই আমরা কাজগুলো করতে পেরেছি। একজন জনপ্রিয় লেখক ও উঁচুমানের লেখকের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। যদি লেখক উঁচু মানের না হন তাহলে তার লেখা জনপ্রিয় না হয়ে পারে না।
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, হুমায়ূন আহমেদ অমরতার আসন গ্রহণ করেছেন। এখন তার নামে নামাঙ্কিত পুরস্কার নিয়ে আমরা কতদূর যেতে পারি সেটি দেখার বিষয়। এই পাঁচ বছরে যারা এ পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন তারা এ পুরস্কারকে সম্মানিত করেছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: