নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল ২২ মে ॥ ২৩ মে ইতনাবাসীর শোকের দিন। ইতনা গণহত্যা দিবস। একাত্তর সালের এদিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদারবাহিনী নড়াইলের ইতনা গ্রামে ঢুকে ৩৯ স্বাধীনতাকামী মানুষকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। একের পর এক বাড়িঘর লন্ডভন্ড করে জ্বালিয়ে দেয়। এদিনটি নড়াইলের ইতিহাসে একটি ভয়াল দিন। স্বাধীনতার ৪৮ বছর অতিবাহিত হলেও নিহতদের পরিবার শহীদের স্বীকৃতি পায়নি। এমনকি কবরগুলোও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি। বিষাদময় সেইদিনের কথা মনে করে এ অঞ্চলের মানুষ আজও আঁতকে উঠেন। চোখের জলে বুক ভাসান স্বজনেরা। ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধকালীন সময়ে ইতনা হাইস্কুল মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং এখান থেকেই শত্রুপক্ষের ওপর আক্রমণের নানা কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হতো। এ গ্রামের উল্টো দিকে মধুমতির ওপারে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার চরভাটপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের বৃহৎ ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়। পাকবাহিনী বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ২২ মে দুপুরে চরভাটপাড়া গ্রামে ঢুকে পড়ে। তারা নিরীহ লোকজনের ওপর হামলা-নির্যাতন শুরু করে। এ সময় মুক্তিবাহিনী প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং হানাদার বাহিনীর সঙ্গে শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। পাকসেনারা পিছু হটে চরভাটপাড়া গ্রামের কৃষক অনিল কাপালীকে গুলি করতে গেলে গুলি শেষ হয়ে যায়।
এ সময় কৃষক অনিল কাপালী এক পাক সেনার কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে মধুমতি নদীতে ফেলে দিয়ে দ্রুত সাঁতার কেটে ইতনা গ্রামে আশ্রয় নেন। ক্ষিপ্ত পাক সেনারা ২৩ মে ভোরে ইতনা গ্রামে এসে ৫টি ভাগে বিভক্ত হয়ে একের পর এক বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করতে থাকে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: