ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীর ঢল

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ২৫ আগস্ট ২০১৮

নারায়ণগঞ্জে বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীর  ঢল

মোঃ খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ ॥ রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিনোদন প্রিয়াসী লোকজন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বিনোদন স্পটে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে আসেন। সোনারগাঁয়ের জাদুঘরের লেকে নৌকা ভ্রমণ, ডাঙ্গায় নাগরদোলায় ও চরকায় চড়ে, বায়োস্কোপ এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য, লোকশিল্প ও সংস্কৃতির অনন্য উপাদান অবলোকনসহ নানার ধরনের হস্তচালিত খেলনায় চড়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছে বিনোদন পিয়াসী লোকজন। ঈদের দিন থেকে শুরু করে ঈদের তৃতীয় দিন শুক্রবার নানা বয়সী লোকজন বিনোদনের জন্য ছুটে আসে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে। শুধু লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনই নয় নারায়ণগঞ্জ নগরীর খানপুর, সোনারগাঁও, ফতুল্লার পঞ্চবটি, লামাপাড়া ও রূপগঞ্জের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ঈদ-উল-আজহার ছুটিতে আনন্দ উপভোগ করতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। দিনভর শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী দর্শনার্থী ঈদের আনন্দ উপভোগে ছিল ব্যস্ত। বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র আলোকসজ্জাসহ বিভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, বাংলার তাজমহল, ঐতিহাসিক পানাম নগরী, নারায়ণগঞ্জ নগরীর খানপুরে বিআইডব্লিউটিএর ইকোপার্ক (চৌরঙ্গী পার্ক), ফতুল্লার পঞ্চবটির এ্যাডভেঞ্চারল্যান্ড পার্র্ক, নম পার্ক, রূপগঞ্জের জিন্দাপার্ক ও রাসেল পার্ক, নগরীর শীতলক্ষ্যা নদীর তীরের ওয়াকওয়ে (হাঁটাচলা রাস্তা)সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঈদের দিন থেকে শুক্রবারও দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। . রাজশাহী মামুন-অর-রশিদ রাজশাহী থেকে জানান, ঈদের দিনের বিকেল থেকেই ঘোরাঘুরি শুরু হয়েছে উৎসবপ্রিয় মানুষের। একটু বিনোদনের আশায় তীব্র রোদ, গরম আর কখনও কখনও বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বাইরে বেরিয়ে পড়ছে মানুষ। ঈদের টানা ছুটিতে তাই রাজশাহীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে জনস্রোত নেমেছে। ঈদের ছুটিতে অনেকটা পাল্টে গেছে কোলাহল আর যানবাহনে ঠাসা এই রাজশাহী মহানগরীর চেহারা। বুধবার ঈদ জামাতের পর সকাল থেকে সব ব্যস্ততা ছিল পশু কোরবানি নিয়েই। তারপর থেকে রোদ, কখনও মেঘ, কখনও বৃষ্টি। সেদিনই বিকেল থেকে ভিড় বাড়ে বিনোদনকেন্দ্রে। আর ঈদের দ্বিতীয় দিনে সকালেই অনেকে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। আবহাওয়া যাই হোক না বিনোদন পিপাসুদের আটকানো যায়নি। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের সূর্য পশ্চিমাকাশে নামার পর রাজশাহী মহানগরীর বিনোদন স্পটগুলোতে মানুষের ঢল নামে। মিলেমিশে ঈদ আনন্দ উপভোগের জন্য সবাই একযোগে বেরিয়ে পড়েন। শুক্রবার সকাল থেকেও রাজশাহীর সব বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এদিন সকালেও নগরীর সব বিনোদনকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে ভিড়। মহানগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, শহীদ জিয়া শিশু পার্ক, শহীদ মনসুর রহমান পার্ক, পদ্মা নদীর আই ও টি-বাঁধ, বড়কুঠি, শিমলা পার্ক, পদ্মা গার্ডেনসহ বিভিন্ন বিনোদন স্পট বিনোদন পিপাসুদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ভ্রাতৃত্ব আর সৌহার্দের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সবাই প্রাণভরে উপভোগ করেছেন ঈদের খুশি, ঈদের অনাবিল আনন্দ। . খাগড়াছড়ি পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি থেকে জানান, ঈদ-উল-আজহার টানা ছুটিতে খাগড়াছড়িতে এবার রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক এসেছে। প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে পাহাড়ী কন্যা খাগড়াছড়িতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন হাজারো সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটক। খাগড়াছড়ির রিছাং ঝর্ণা, তৈদুছড়া ঝরণা, হাজাছড়া ঝর্ণা,আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত সেতু, মায়াবিনী লেক, দেবতা পুকুর, জেলার সীমান্ত শহর রামগড়ে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস অর্থাৎ বিডিআর বর্তমানে বিজিবির ‘জন্ম স্থান’, কৃত্রিম লেক ও রামগড় ঝুলন্ত সেতুসহ প্রতিটি পর্যটন স্পট এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ছুটিতে খাগড়াছরি এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে বিপুল পর্যটক ছুটে এসেছেন। ফলে অতিরিক্ত পর্যটকের ভারে পরিবহন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। . মুন্সীগঞ্জ স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জে ঈদের ছুটিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। লৌহজং উপজেলার মাওয়া পদ্মার পার, মাওয়া রিসোর্ট, পদ্মা রিসোর্ট, সিরাজদিখান উপজেলার চালতাতলা এমজে হলিডে রিসোর্ট ও সিরাজদিখানে ঢালি এ্যাম্বারস রিসোর্ট ও গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দির মেঘনা ভিলেজ পর্যটকদের কোলাহলে ছিল মুখরিত। পদ্মা আর ধলেশ্বরী নদীর নির্মল পরিবেশ দেখতে সব বয়সী নারী-পুরুষ ছুটে আসেন। পদ্মাপারের মুক্ত বাতাস আর ধলেশ্বরী নদীর সুউচ্চ সেতু থেকে নৌকা, লঞ্চ, চাঁদের আলো এবং সূর্যাস্তের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে কার না ভাল লাগে! তাই তো দূর-দূরান্ত থেকে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এসকল পর্যটন কেন্দ্র। এদিকে মাওয়া পদ্মাপারেও ছিল পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদের দিন বিকেল থেকে পদ্মার পারে যেন মানুষের ঢল নেমেছে। তবে বৃষ্টিবাদল থাকার কারণে বুধ ও বৃহস্পতিবারের চেয়ে শুক্রবার ছিল বেশি ভিড়। ছুটির দিন শনিবারও এই ভিড় হবে বলে বুকিং লিস্ট দেখেই নিশ্চিত হওয়া যায়। পর্যটক মিজানুর রহমান জানান, ঈদের দিন কোরবানিসহ নানা কারণে বের হওয়া যায়নি। ঈদের পরদিন আবহাওয়া তেমন অনুকূলে ছিল না । তাই শুক্রবার পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হলাম। মাওয়া রিসোর্ট, পদ্মা রিসোর্টেও ছিল পর্যটকদের আনাগোনা। অনেকে আবার ঢাকা থেকে সপরিবারে এসেছেন রাতযাপন করতে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা শহরের কর্মব্যস্ততা আর সীসাযুক্ত বাতাস থেকে একটু পরিত্রাণ পেতেই পরিবার-পরিজনকে নিয়ে তারা এখানে বেড়াতে এসেছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরে ফিরছেন পদ্মার বেলাভূমিতে। প্রেমিক-প্রেমিকারাও এসেছেন হাতে হাত ধরে। . কিশোরগঞ্জ নিজস্ব সংবাদদাতা কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, শহরের নরসুন্দা মুক্তমঞ্চ এলাকা হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। ঈদের ছুটিতে এসে সকাল থেকে রাত অবধি সেখানে সব বয়সীদের ভিড় যেন লেগেই রয়েছে। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও এখানে এসেছে। শহরের একটু বুক ভরে নিশ্বাস নেয়ার জায়গা নরসুন্দা মুক্তমঞ্চ এলাকা। নির্মল পরিবেশে আনন্দময় সময় কাটানোর জন্য এলাকাটি দিন দিনই মানুষের পদভারে মুখরিত। . মাগুরা নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, নোমানী ময়দানে বিনোদন পিপাসু মানুষের ভিড় জমেছে। ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে বিনোদনপিপাসুরা আনন্দ উপভোগ করতে ভিড় করেন। এখানে বিনোদনের জন্য নাগরদোলা স্থাপন ও ঘোড়া আনা হয়েছে। বসেছে নানা ধরনের দোকানপাট। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ-শিশুরা আসেন নির্মল বিনোদনের জন্য। মাগুরা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীতে চালু হয়েছে বিনোদন লঞ্চ সার্ভিস। এছাড়া মহম্মদপুরের শেখ হাসিনা ব্রিজে বহু মানুষের সমাগম ঘটে ।
×