স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমাজসংলগ্ন বরেণ্য কথাশিল্পী শওকত ওসমানের ১৯তম প্রয়াণবার্ষিকী ছিল রবিবার। এ উপলক্ষে স্মরণ করা হলো তাকে। রবিবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় তাকে নিবেদিত আলোচনা সভা। আয়োজন করে কথাশিল্পী শওকত ওসমান স্মৃতি পরিষদ ।
অনুষ্ঠানে পিতৃস্মৃতিচারণ করেন শওকত ওসমানের ছেলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। ভাষাসংগ্রামী ও লেখক আহমদ রফিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আনিসুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেনÑ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাকিবুল ইসলাম লিটু। স্মরণের এ আয়োজনের শওকত ওসমানের সঙ্গে নিজ জীবনের খ- খ- কিছু স্মৃতি মেলে ধরেন ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, সাহিত্য রচনায় সাধারণ মানুষকে অসাধারণভাবে দেখেছেন শওকত ওসমান।
তাই সমাজে যখন একইসঙ্গে মূল্যবোধ ও সততার সঙ্কট দেখা দিয়েছে তখন নিজেদের পথ খুঁজতেই স্মরণ করতে হবে শওকত ওসমানকে। পাঠ করতে হবে তার সাহিত্যকর্ম।
আনিসুল হক বলেন, শওকত ওসমানের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে তার রচিত জননী উপন্যাসটি পাঠের মাধ্যমে। এ উপন্যাসটি পড়ার পর আমার মনে হয়েছে, বাংলা ভাষয় আধুনিক কথাসাহিত্যের সূত্রপাত ঘটানোর কথাসাহিত্যের মধ্যে এটি অন্যতম। গ্রামীণ জীবনের প্রেক্ষাপটে লেখা এ উপন্যাসটি এখনও সমান প্রাসঙ্গিক। সাহিত্য রচনায় সেই সময়েই তিনি ধারণ করেছিলেন আধুনিকতাকে। এ কারণে তার জন্মের শত বছরও প্রাসঙ্গিক হয়ে আছে তার সৃষ্টিকর্ম।
সভাপতির বক্তব্যে আহমদ রফিক বলেন, জননীর মতোই ক্রীতদাসের হাসি শওকত ওসমানের আরেক অবিস্মরণীয় সাহিত্যকর্ম। শুধু সাহস থাকলেই কোন লেখক এমন লেখা লিখতে পারেন। তাই যে কোন কিছুতেই নতুন প্রজন্মকে শওকত ওসমানের সেই সাহসী ধারাটি ধারণ করতে হবে। অন্যদিকে এ দেশের স্যাটায়ার বা বিদ্রƒপাত্মক সাহিত্যকে শাণিত করেছেন শওকত ওসমান। আর এভাবেই অবিস্মরণীয় সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে তিনি বেঁচে থাকবেন মানুষের মনে। তাই তার সাহিত্য পড়ে জীবনটাকে যদি একটু বদলাতে পারি, সেটাই হবে তার প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শওকত ওসমানের জীবনী পাঠ করেন উপস্থাপিকা মেরিন নাজনীন শিপা।
চিত্র কর্মশালা ‘মায়ের জন্য ভালবাসা’ ॥ রবিবার বিশ্ব মা দিবসে সকাল থেকে সচল হলো শিল্পীর রং-তুলির আঁচড়। মায়ের প্রতি ভালবাসায় দিনভর ক্যানভাসে চিত্রকর্ম সৃজন করলেন একঝাঁক নারী চিত্রশিল্পী। উঠে এলো মায়ের মমতাময়ী মুখসহ নানা প্রতিচ্ছবি। ধানম-ির গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানে অনুষ্ঠিত হলো ‘মায়ের জন্য ভালবাসা’ শীর্ষক দিনব্যাপী চিত্র কর্মশালা।
এ কর্মশালায় দিনভর মাকে কেন্দ্র করে নিজস্ব ভাবনায় ছবি এঁকেছেন দেশের নবীন-প্রবীণ ও বরেণ্য নারী শিল্পীরা। মা দিবসে মায়ের সম্মানে এবং সমাজে মায়েদের প্রভাব বিস্তারি ভাবনায় সৃজিত হয়েছে চিত্রকর্মগুলো। মাকে নিয়ে আঁকাআাঁকির এ কর্মশালায় অংশ নেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানা, কনকচাঁপা চাকমা, শামীম সুব্রানা, মিনি করিম, বিপাশা হায়াত, সামিনা নাফিজ, দিলরুবা লতিফ রোজী, ফারজানা ইসলাম মিল্কী, রেবেকা সুলতানা ও ইতি রাজবংশী।
ছবি আঁকার পাশাপাশি কর্মশালায় ছিল নারী শিল্পীদের পরিবেশিত মাকে নিয়ে সঙ্গীত পরিবেশনা ও কবিতা আবৃত্তি। সঙ্গীত পরিবেশনা ও কবিতা পাঠে অংশ নিয়েছেন শামীমা আলম চিনু, সাবা তন্বী শহীদ, নাসিমা আক্তার, জুলেখা আক্তার শীলা, হাবীব পাপ্পু, সাকিরা পারভীন, সাবেরা তাবাসসুম ও সুফি সুলতানা।
শিল্পকলায় গীতিনৃত্যনাট্য ‘ওয়াটারনেস’ ॥ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আধুনিক কবিতা লেখা শুরু করেছিলেন বউদি কাদম্বরী দেবীর সংস্পর্শে এসে। ধারণা করা হয়, তিনি সে সময়ের কবিদের থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নতুন কাব্যচর্চার সন্ধ্যানে আগ্রহী করেছিলেন। তাদের দুজনের সম্পর্ক প্রথাগত বউদি-দেবরের ছিল না। তা বিরাজ করত অন্য মাত্রায়। পাঠকের মনে রবীন্দ্রনাথ ও কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক রহস্যঘেরা এবং রোমান্টিকতায় আচ্ছন্ন। রহস্যময় এ সম্পর্ককে নতুন করে মঞ্চে এনেছেন তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। সঙ্গীতের সঙ্গে নৃত্য, এর সঙ্গে আরও মিলেছে আবৃত্তি, মাইম, চিঠি, চিত্র, মার্শাল আর্টস আরও অনেক কিছু। সবকিছুর সম্মিলনে এ আয়োজনের শিরোনাম ছিল ‘ওয়াটারনেস’। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ছিল এর প্রদর্শনী।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের ছায়া অবলম্বনে এ গীতিনৃত্যনাট্যের মূল অনুপ্রেরণা কাদম্বরী দেবী। রবীন্দ্রসৃজনে বারবার উঠে এসেছে নদী ও জল। ‘ওয়াটারনেস’-এ রবীন্দ্রনাথের গান, চিঠি, চিত্র ব্যবহারের পাশাপাশি রয়েছে তার জীবনে প্রভাব ফেলা তিন নারী কাদম্বরী, মৃণালিনী ও ইন্দিরা দেবীর ছায়াও। বাংলা ও ইংরেজী দুটি ভাষায় এতে দেখানো হয়েছে জল ও নারীর অন্তর্গত সম্পর্ক।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: