ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত হওয়া সখীপুরের বিবিসি বর্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুজন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান। ১২ শিক্ষকের ওই বিদ্যালয়টিতে ১০ শিক্ষক না থাকায় প্রতিদিন ওই দুই শিক্ষককে ৪৮টি ক্লাসের পাঠদান সারতে হচ্ছে। অফিসের কোন জরুরী কাজে অথবা অসুস্থতার কারণে একজন অনুপস্থিত থাকলে অপর এক শিক্ষকেই চলে বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম। ফলে ওই সব শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ের পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে পিইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় সখীপুরের সীমান্তবর্তী বাজাইল গ্রামে অবস্থিত বিবিসি বর্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পর্যায়ক্রমে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করা হয়। ওই সময় ওই প্রকল্পের আওতায় ৬০ ফুট লম্বা একটি দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে ষষ্ঠ, ২০১৪ সালে সপ্তম ও ২০১৫ সালে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত হলেও ১২ শিক্ষকের স্থলে শিক্ষক রয়েছে মাত্র দুজন। দুজনই সহকারী শিক্ষক।
একজন অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকলে অন্যজনকে একাই চালাতে হয় বিদ্যালয়ের সব শ্রেণীর পাঠদান। ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকে (শিশু শ্রেণী) হাবিবুর রহমান নামের একজন শিক্ষক রয়েছে। প্রাথমিক স্তরে তিনজন সহকারী শিক্ষক কাগজে-কলমে জানা গেলেও নাসরিন আক্তার নামের এক সহকারী শিক্ষক গত ১ জানুয়ারি ১৮ মাসের ডিপিএড প্রশিক্ষণে চলে যাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক গৌরাঙ্গ সরকার ও ফাতেমা খাতুনের কাঁধে ৪৮ ক্লাসের বোঝা পড়েছে। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে, স্থানটি সখীপুরের সীমান্তবর্তী হওয়ায় ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকার সুযোগে শিক্ষকরাও যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসেন না। ফলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী আশপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা গৌরাঙ্গ সরকার বলেন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখতে জরুরীভিত্তিতে চাহিদা মোতাবেক শিক্ষক প্রয়োজন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়মিত পাঠদান করছে। সখীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একাধিকবার বিএড ডিগ্রীধারী শিক্ষককে ওই বিদ্যালয়ে সংযুক্ত (ডেপুটেশন) করা হলেও রাজনৈতিক বা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের তদবির নিয়ে তারা সুবিধাজনক স্থানে চলে যান। সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষকের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সমাধান হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: