ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

আনিসুল হক সড়ক পুনরুদ্ধার!!

প্রকাশিত: ২০:৩১, ২৬ মে ২০২৪

আনিসুল হক সড়ক পুনরুদ্ধার!!

‘তেজগাঁও সাতরাস্তা-রেলগেট’ সড়ক

কী, আঁতকে উঠলেন? সম্প্রতি, আঁতকে উঠার মতই এক কাজ করেছে তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ। রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কের একটি ‘তেজগাঁও সাতরাস্তা-রেলগেট’ সড়ক, কিছুদিন আগেও সেটি ছিল পুরোপুরি ট্রাক-ভ্যানের দখলে। যতদূর চোখ যেত, দেখা যেত সারি সারি ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিক আপ দাঁড়িয়ে। যানজট, বিশৃঙ্খলা এবং ট্রাক কাভার্ডভ্যান যেন ছিল পারস্পরিক নিত্যসঙ্গী। অথচ গত কিছুদিন ধরেই যেন ভিন্ন এক চিত্র, বহুল আকাঙিক্ষত এক পরিবর্তনের ছোঁয়া। বলা যায়, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবং ক্রমাগতভাবে লেগে থাকায় মেয়র আনিসুল হক সড়ক ফিরে পেয়েছে তার প্রাণ, কমেছে লাখো মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি। 

উল্লেখ্য যে, সাতরাস্তা থেকে রেললাইন পর্যন্ত সড়কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বহু বছরের ট্রাকস্ট্যান্ডটি ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর উচ্ছেদ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হক। যে কারণে সে সময় বিক্ষুব্ধ চালক ও শ্রমিকদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। হতে হয় অবরুদ্ধ, নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি। তখন দখলদারদের ইটপাটকেল আর পুলিশের টিয়ারশেলের মধ্য দিয়ে সড়কটিকে 'পার্কিংমুক্ত' করে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেন তিনি। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেকে ফের দখলদারদের হাতে চলে যায় সড়কটি। 

তেজগাঁও ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার স্নেহাশীষ কুমার দাস বলেন, ডিসি ট্রাফিক তেজগাঁও মোস্তাক আহমেদ স্যারের নির্দেশনায় আমরা গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন মালিক সমিতি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে মেয়র আনিসুল হক সড়ক শতভাগ পরিষ্কার রাখছি, সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতি মানুষের মমত্ববোধ থেকে আজকের এই অবস্থা ধরে রাখতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

দেখা যায়, শুধু আনিসুল হক সড়কই নয়, ট্রাফিক পুলিশের পরিকল্পনায় রয়েছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার কিছু রাস্তা ওয়ানওয়ে করার মাধ্যমে সামগ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও উন্নত করার প্রচেষ্টাও। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান চালক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ মনির তালুকদার বলেন, আমরা জায়গার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি, টিএনটির জায়গা আমাদের দিয়ে দিলে ইনশাল্লাহ এই সমস্যা থাকবে না। আর আমরা ট্রাফিক পুলিশকে সবসময় সহায়তা করি এবং করব।

ইউসিবি শুলশান ব্রাঞ্চে কর্মরত ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,  গত সপ্তাহ থেকেই এই রাস্তাটি পরিষ্কার থাকায় আমি ১৫ মিনিটে ফার্মগেট থেকে গুলশান অফিসে চলে যেতে পারছি, এরকম ফাঁকা আগে দেখিনি। বছরের পর বছর যে সড়ক ছিল অবহেলিত, ট্রাফিক পুলিশের কাজে সেটি ফিরে পেয়েছি যান চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা। 

তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ থেকে জানানো হয়, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের ধারণক্ষমতা ৬৫০-৭০০ গাড়ির, অথচ প্রতিদিন প্রায় ৫ গুণ ট্রাক কাভার্ডভ্যানের যাতায়ত হয় এই রাস্তায়। শুক্রবার শনিবার অফিসিয়াল ট্রিপ না থাকায় সব গাড়ি বৃহস্পতিবার রাতে এসে শনিবার পর্যন্ত এখানে অপেক্ষা করে। এছাড়াও, ট্রাক কাভার্ডভ্যানের রুট পারমিট সারা বাংলাদেশ হওয়ায় সারা দেশ থেকেই ট্রাক, কাভার্ডভ্যান এবং পিকআপ রাত ১০ টার পর থেকে এই এলাকায় এসে জড়ো হয়। কেপিআইভুক্ত এলাকা হওয়ায় দিনের বেলায়ও কিছু ট্রাক কাভার্ডভ্যান এই কেন্দ্রিক অবস্থান করে। পরিপ্রেক্ষিতে, তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের ভাষ্য অনুযায়ী, সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে এবং প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতি মমত্ববোধ থেকে ওয়ার্কিং ডে গুলোতে মেয়র আনিসুল হক সড়ক ভোর ৭টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত শতভাগ পরিষ্কার রাখা হবে। 

ফজলু

×