ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ চীন সাগর বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনা

বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ১ জানুয়ারি ২০১৯

বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ

দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের সঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। চুক্তি হওয়ার আগে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে এখন চীনের আলোচনা চলছে। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বিরোধ দীর্ঘদিনের। বিরোধের অবসান ঘটিয়ে ওই অঞ্চলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করাই এ চুক্তির লক্ষ্য। ইয়াহু নিউজ। ভিয়েতনাম চুক্তির ধারায় এমন কিছু শর্ত আনতে চাচ্ছে যেগুলো চীন সমর্থন করে না। চুক্তির একটি খসড়া কপি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের কাছে এসেছে। এতে দেখা গেছে, ভিয়েতনাম বেশ কিছু শর্তের কথা বলেছে যেগুলো বেজিংয়ের জন্য যথেষ্ট অস্বস্তিকর। হ্যানয় চেয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমায় চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেসব বিতর্কিত কর্মকা- চালিয়েছে সেসব নিষিদ্ধ করা হোক। এর মধ্যে রয়েছে কৃত্রিমভাবে দ্বীপ তৈরি এবং সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মতো সামরিক সরঞ্জাম স্থাপনের মতো কাজ। আসিয়ান কোড অব কন্ডাক্টের (সিওসি) আওতায় খসড়া চুক্তিটি তৈরি করা হয়েছে। হ্যানয় দক্ষিণ চীন সাগরে নতুন যে কোন এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন প্রতিষ্ঠা নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে। ২০১৩ সালে চীন পূর্ব চীন সাগরে একতরফাভাবে ওই জোন প্রতিষ্ঠা করেছিল। চীনা কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে ওই ধরনের পদক্ষেপ পুনরায় নেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেননি। দক্ষিণ চীন সাগরে চীন সে রকম জোন প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা পোষণ করে। সেটি বাস্তবায়িত হলে ওই সাগরের ওপর দিয়ে চলাচলকারী প্রতিটি প্লেনকে চীনা কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে শনাক্ত করতে পারবে। খসড়া চুক্তিতে হ্যানয় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সাগরে নৌ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ রুটের বিষয়ে নিজেদের দাবি স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে। হ্যানয়ের এই দাবি স্পষ্টতই চীনের বিতর্কিত ‘নাইন-ড্যাশ-লাইন’ নীতির বিরোধী। ওই নীতি অনুসারে চীন দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন অংশের ওপর নিজের অধিকার দাবি করে এসেছে। সিঙ্গাপুর ভিত্তিক দক্ষিণ চীন সাগর বিশেষজ্ঞ আয়ান স্টোরি বলেন, ‘ভিয়েতনাম চুক্তির যে খসড়া উপস্থাপন করেছে সেটি নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে গেলে বেজিংয়ের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হবেই। চীন গত ১০ বছর সেখানে যা করেছে তার অনেক কিছুই ভিয়েতনাম নিষিদ্ধ করতে চায়।’ ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লে থি থু হ্যাং বলেন, সম্প্রতি কোড অব কনডাক্ট নিয়ে আলোচনায় কিছু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ভিয়েতনাম সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে। আন্তরিক ও সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে এসব আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম আশা করে এ বিষয়ে আলোচনায় সবগুলো দেশ অংশ নিক এবং আলোচনা এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখুক। ১৯৮২ সালে জাতিসংঘে গৃহীত কনভেনশনে সমুদ্র পথে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ওই কনভেনশনে বিশেষ করে পূর্ব চীন সাগরে (দক্ষিণ চীন সাগরকে এর একটি অংশ ধরা হয়েছে) আন্তর্জাতিক নৌপথ হিসেবে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল। সিঙ্গাপুর অবশ্য ভিয়েতনামের এসব প্রস্তাবের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি। উল্লেখ্য, ১০ জাতি আসিয়ান জোটের বর্তমান সভাপতি দায়িত্ব পালন করছে সিঙ্গাপুর। থাইল্যান্ডও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে না চাইলেও খসড়া প্রস্তাবকে ভিত্তি করে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছে। চীনও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চায়নি।
×