ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ধরতে তৎপর ছিল এক ডজনেরও বেশি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা

ফিলিপিন্সে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী জঙ্গী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২২ অক্টোবর ২০১৭

ফিলিপিন্সে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী জঙ্গী গ্রেফতার

ফিলিপিন্সের জাতীয় তদন্ত ব্যুরো (এনবিআই) ইসলামিক স্টেটের ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী জঙ্গী কারেন আয়সা হামিদানকে দেশটির রাজধানী থেকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে। এতে উগ্রপন্থা বিস্তার ও জঙ্গী সংগ্রহ নিয়ে ভারতীয় তদন্ত সংস্থার কার্যক্রম নতুন গতি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে আয়সা আইএসের হয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। ফিলিপিন্সের জঙ্গী নেতা মোহাম্মদ জাফর মাকুদের বিধবা স্ত্রী আয়সা ২০১৬ সালে উগ্রপন্থা বিস্তারের অভিযোগ কুখ্যাতি অর্জন করে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ওই সময় জানতে পারে, ওই নারী ফেসবুক, টেলিগ্রাম চ্যানেলস, হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপে ভারত ও অন্যান্য দেশ থেকে বিদেশী জঙ্গী সংগ্রহে সক্রিয় রয়েছে। এরপর এক ডজনেরও বেশি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ধরতে হন্নে হয়ে খুঁজে বেড়ায়। গেল বছর ভারতীয় তদন্ত সংস্থা কারেন আয়সা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ চেয়ে ফিলিপিন্সের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে কারেনের ঠিকানা ম্যানিলা মহানগরীর টাগুইগ শহরের শিলাং গ্রামে বলা হয়েছে। তার ফোন নম্বর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেই নামে (@কধৎধহঅরংধযধষঐধসরফড়হ) পরিচিত, চিঠিতে তাও উল্লেখ করে দেয়া হয়। সূত্র জানায়, ভারতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এখন জঙ্গীদের আইএস যোদ্ধাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ চেয়ে ফিলিপিন্স সরকারের কাছে আবারও অনুরোধ জানাবে। যেসব আইএস জঙ্গীকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, তাদের খুঁজে বের করতে এ জিজ্ঞাসাবাদ জরুরী। গোয়েন্দারা তাকে ভিডিও কনফারেন্স কিংবা ম্যানিলায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতির অপেক্ষায় আছে। জয়পুর থেকে একটি তেল কোম্পানির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সিরাজুদ্দিন ও সুদান থেকে ফেরত পাঠানো তেইশ বছরের মোহাম্মদ নাসের নামের এক কম্পিউটার প্রকৌশলীকে তামিলনাড়ু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনের দাবি, কারেন তাদের জঙ্গী কর্মকা-ে প্রভাবিত করেছে। গত বছরে দুটি মামলার অভিযোগপত্রে কারেন আয়সার নাম রয়েছে। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে বহু ভারতীয় যুবককে আইএসে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়ার ও বাংলাদেশের তরুণদের মাঝেও সে আইএস আদর্শ প্রচার করে। এনআইয়ের তথ্যমতে, সে ‘ওংষধসছ্অ’ এবং ‘টসসধয অভভধরৎং’ নামের বিশাল অনলাইন গ্রুপ পরিচালনা করে। সেখানে আইএস সদস্যরা খিলাফত ও জিহাদী মতাদর্শ প্রচার করে। আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে নিজেদের অঙ্গীকারের কথাও প্রকাশ করে তারা। সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গেল বছর সে নিজের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে উম্মাহ এ্যাফেয়ার্স নামের একটি হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপে যোগ দেয়। মজার বিষয় হলো, কারেন এক সময় হোয়াটসএ্যাপ থেকে সিরাজুদ্দিনকে ব্লক করে দেয়। তবে ভিন্ন কয়েকটি আইএস গ্রুপের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। তাদের অভিযোগ, কারেন বিশ্বাসঘাতক, সে নিজের সম্পর্কে যে তথ্য প্রচার করে, তাতে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের বলে মনে হয়।
×