অপহরণের শিকার বাংলাদেশি শ্রমিকরা।
সহায়-সম্বল বিক্রি করে লিবিয়ায় পাড়ি জমান লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ৪ শ্রমিক। তবে তাদের স্বপ্নে গুড়ে বালি, নিজ কর্মস্থল থেকে অপহরণের শিকার হয়েছেন তারা। এমন খবর শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাদের স্বজনরা। অপহরণকারী চক্রকে বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের টাকা না দিলে শ্রমিকদের হত্যা করে মরদেহ গুম করার হুমকি দেওয়া হয় তাদের পরিবারকে।
অপহরণের শিকার শ্রমিকরা হলেন- লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের সিন্দুরিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে আল আমিন (২৩), জয়নাল আবেদিনের জামাতা ও পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙার ইদ্রিস আলীর ছেলে হাফিজুল ইসলাম (৪০), রাজারহাটের ভীম শর্মা গ্রামের আবদুল মোতালেবের ছেলে আল-আমিন (২২) এবং তার খালাতো ভাই ও পঞ্চগ্রামের রামরাম গ্রামের শাহিনুর ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম (২৪)। তারা সবাই লিবিয়ার বেনগাজিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
এদিকে, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ করা হলেও এসআই রুহুল আমীন ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়িতে এসে অভিযোগের কপি ফেরত দেন। কিন্তু কেন ফেরত দেয়া হলো সে বিষয়ে কথা বলতে রাজি নন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, লিবিয়ায় অপহরণ হয়েছেন লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ওই চার নির্মাণ শ্রমিক। পরিবারের কাছে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দাবি করেছে অপহরণকারীরা। ঘটনার ২৭ দিন পার হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি তাদের।
তবে স্বজনদের দাবি, লিবিয়া প্রবাসী আরেক বাংলাদেশি মিজানের নেতৃত্বে তাদের অপহরণ করা হয়েছে। দেশের পুলিশের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও করেন তারা। অপহরণকারীরা বলছে ৫ লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেব, না দিলে ছাড়বো না।
আল আমিনের বাবা কৃষক জয়নাল আবেদিন জানান, গত ১১ মার্চ সকালে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি তার ইমো নম্বরে ফোন করেন। এ সময় জানানো হয়, তার ছেলে আল আমিন ও জামাতা হাফিজুল ইসলামকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তির জন্য এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। তা না হলে তাদের দুজনকে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়। আমি অনেক কষ্টে দুই লাখ টাকা যোগাড় করেছি; কিন্তু টাকাটা কার মধ্যমে কাকে দেব জানি না। তারা ব্যাংকের মাধ্যমেও নিতে চায় না।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, ‘জনশক্তি ব্যুরো ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়টি জানাতে হবে। এ সময় আইনি সহায়তারও আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।’
এম হাসান