ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু আবদুল গাফফারকে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাঠিয়েছিলেন

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ২০ মে ২০২২

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু আবদুল গাফফারকে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পাঠিয়েছিলেন

অনলাইন ডেস্ক ॥ সদ্য প্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধুরী আর সাংবাদিক শফিক রেহমান ছিলেন ঘনিষ্ট বন্ধু । ঢাকায় ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছাত্রদের মিছিলে যেদিন গুলি চলেছিল, তাপর পর থেকে ঢাকা হয়ে উঠেছিলো উত্তাল। প্রতিদিন ঢাকার রাজপথে দেখা যেতো প্রতিবাদ মিছিল । এই দুই বন্ধু ২৩ তারিখ এক প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। দু'জনেই তখন ঢাকা কলেজের ছাত্র, শফিক রেহমান তখন পরের মাসে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মিছিলটি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে দিয়ে যাচ্ছে, পুলিশের হামলায় আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। সেদিনের স্মৃতিচারণ করছিলেন সাংবাদিক এবং এক সময় ঢাকার সাড়া জাগানো পত্রিকা যায় যায় দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান। তিনি বলেন, ‘ও তখনই বেশ লম্বা-চওড়া, মোটা-সোটা ছিল। আমি ছুটে গিয়ে তাকে তুললাম, আমার কাঁধে ভর দিয়ে কিছুদূর হাঁটার পর একটা রিকশা পাওয়া গেল। সেই রিকশায় করে আমি তাকে নিয়ে গেলাম ৩৭ নম্বর বেচারাম দেউরিতে, সেই বাড়িতেই তখন আমরা থাকি। আমার বাবা তখন ঢাকা কলেজের হোস্টেলের সুপারিন্টেনডেন্ট’ । পরের কয়েক মাস আবদুল গাফফার চৌধুরী ঐ বাড়িতেই কাটিয়েছেন। এখানে বসেই তিনি লিখেছিলেন সেই কবিতা: "আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...", যেটি পরবর্তীকালে আলতাফ মাহমুদের সুরে পরিণত হয় বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের প্রধান সঙ্গীতে। এই গানটি প্রতিটি বাঙালীর হৃদয়ে এখনও নতুনভাবে প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টি করে। এই গান আমাদের জাতীয় জীবনের এমন এক প্রতীক যার আবেদন কখনও অতিক্রম করা সম্ভব নয়। খ্যাতিমান লেখক-সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী বৃহস্পতিবার ১৯শে মে লন্ডনে ৮৭-বছর বয়সে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সাত দশকের বেশি সময় ধরে দুই হাতে লিখে গেছেন। তাঁর এই লেখার বেশিরভাগই ছিল রাজনৈতিক ভাষ্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি যেটির জন্য সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন, তা হলো একেবারে তরুণ বয়সে লেখা একুশে ফেব্রুয়ারিকে নিয়ে লেখা তাঁর সেই কবিতা। ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে যে সর্বকালের সেরা বাংলা গান বলে যে ২০টি গানকে নির্বাচিত করেছিলেন, তার তিন নম্বরে ছিল এটি। কবি শামীম আজাদ বলেন, ‘তবে এটিই আবদুল গাফফার চৌধুরীর একমাত্র পরিচয় হওয়া উচিৎ নয়, তাকে মনে রাখার বহুবিধ কারণ আছে, আমার কাছে যেটা উল্লেখযোগ্য মনে হয়, অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ, দুর্নীতি, বাংলাদেশের সব ধরণের উত্থান-পতনকে বুকে ধরে যিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন।’ আবদুল গাফফার চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে। লন্ডনের আওয়ামী লীগের নেতা সুলতান শরিফ বলেন, ‘উনারা ছিলেন বরিশালের বেশ নামকরা পরিবার। উনার বাবা ওয়াহেদ রেজা চৌধুরী ব্রিটিশ ভারতে অবিভক্ত বাংলার আইন সভার সদস্য ছিলেন। আমাদের সঙ্গে তাদের পারিবারিকভাবে জানা-শোনা ছিল। আমরা বরিশালের একই এলাকার মানুষ। উনাদের বাড়ি এবং আমাদের বাড়ি পাশাপাশি রাস্তায় ছিল ।’ স্থানীয় মাদ্রাসায় এবং হাইস্কুলে পড়াশোনা শেষ করে আবদুল গাফফার চৌধুরী ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা কলেজে, পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। উনিশশো পঞ্চাশের দশকের ঢাকায় তার কর্মজীবন শুরু হয় দৈনিক ইনসাফে। এরপর একে একে কাজ করেছেন দৈনিক সংবাদ, মিল্লাত, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক আজাদ, দৈনিক পূর্বদেশসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। তিনি মূলত নাম করেছিলেন রাজনৈতিক কলাম লেখক হিসেবে, যদিও তার লেখা কলামের যেমন ছিল বহু অনুরাগী পাঠক, আবার এসব কলামে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের অনেক প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য এবং বিবরণের জন্য তুমুল বিতর্কিতও ছিলেন তিনি। উনিশশো একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ আর সবার মতো আবদুল গাফফার চৌধুরীর জীবনেও নানা ঘাত-প্রতিঘাত তৈরি করেছিল। যুদ্ধের পর তাঁর স্ত্রী যেভাবে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, সেটাই তাঁর জীবনের বাঁক ঘুরিয়ে দিয়েছিল। সুলতান শরিফ আরও বলেন, ‘শেষ কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়ার সময় তাঁর স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোন চিকিৎসা বাংলাদেশে করা যাচ্ছিল না। তখন বঙ্গবন্ধু তাকে বলেন, লন্ডনে নিয়ে যাও। এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আসেন। কিন্তু এরপর ১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধু নিহত হন, তারপর আর তাঁর দেশে ফিরে যাওয়া হয়নি।’ উনিশশো সত্তরের মাঝামাঝি সেই সময় আবদুল গাফফার চৌধুরীকে যারা ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছেন, তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, তখন লন্ডনে তাঁকে বেশ কষ্টকর জীবন কাটাতে হয়েছে। সুলতান শরিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পর এর প্রতিবাদ করে উনি লন্ডনের এক কাগজে প্রথম লেখেন। এর ফলে তাকে সরকারের রোষে পড়তে হয়। সে সময় উনার খুব কষ্টের জীবন গেছে। দোকানে কাজ করেছেন, এখানে ওখানে শিক্ষকতা করেছেন’ । লন্ডনের বাংলাদেশি লেখক এবং ছড়াকার দিলু নাসের আশির দশক থেকে ঘনিষ্ঠ ছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে। একসময় তারা লন্ডনে একই সংবাদপত্রে সহকর্মীও ছিলেন। অসুস্থ স্ত্রী, এবং পাঁচ সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে তাঁকে যেরকম হিমসিম খেতে হয়েছে, সেটি দেখেছেন তিনি। প্রবাসে এরকম কষ্টের জীবনের পরেও কেন দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবেননি তিনি? সুলতান শরিফ বলছেন, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি যেরকম প্রতিকূল হয়ে উঠেছিল, সেটা আর সম্ভব ছিল না। "বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যখন দেশে খুব প্রতিকূল অবস্থা, তখন লন্ডনে থেকে তিনি বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংগঠনে বড় ভূমিকা রাখেন। তাঁর এই ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।" বাকী জীবনের জন্য যে তাঁকে প্রবাসেই স্থায়ী হতে হয়েছিল, সেটা নিয়ে তার মধ্যে সেরকম দুঃখবোধ দেখেননি দিলু নাসের। "উনি যে কথাটা সবসময় বলতেন, আমি পৃথিবীর যে দেশেই থাকি না কেন, আমি তো বাংলা ভাষাতেই কাজ করে যাচ্ছি। লন্ডনে সবার সঙ্গেই ছিল উনার মধুর সম্পর্ক। এক সময় তিনি প্রতিদিনই পূর্ব লন্ডনে আসতেন আড্ডা দিতে। মানুষে সঙ্গ উনি খুব পছন্দ করতেন। মানুষ ছাড়া আসলে উনি থাকতে পারতেন না।" জীবনের বাকী সময়টা যদিও আবদুল গাফফার চৌধুরী লন্ডনেই কাটিয়েছেন স্থায়ীভাবে, তাঁর লেখালেখির প্রায় পুরোটাই ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে। তাঁর লেখা রাজনৈতিক কলাম একসময় বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে দীর্ঘ বিরতির পর বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের পাঠকদের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক কলামের নতুন করে পরিচয় ঘটিয়ে দিয়েছিলেন তরুণ বয়সের বন্ধু শফিক রেহমান। উনিশশো আশির দশকের শুরুর দিকে যখন বাংলাদেশে জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসন চলছে, তখন শফিক রেহমান লন্ডনে বিবিসিতে খন্ডকালীন কাজ করেন, সেখানে সহকর্মী হিসেবে আবার কাছে পেলেন তরুণ বয়সের বন্ধু আবদুল গাফফার চৌধুরীকে। "আমরা তখন ওসি, অর্থাৎ আউটসাইড কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতাম। আমাদের আরেক বন্ধু ফেরদৌস আহমেদ কোরেশিও কাজ করতেন এরকম খন্ডকালীন কর্মী হিসেবে," বলছিলেন শফিক রেহমান। ফেরদৌস আহমেদ কোরেশি ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন নেতাদের একজন। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস তখন লন্ডনের স্ট্র্যান্ডে বুশ হাউজে। শফিক রেহমান একদিন বুশ হাউজের ক্যান্টিনে গিয়ে দেখেন আবদুল গাফফার চৌধুরী এবং ফেরদৌস আহমেদ কোরেশির মধ্যে তুমুল রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক চলছে। "তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম। আমি দু'জনের ঝগড়া থামিয়ে বললাম, আমি দেশে ফিরে যাচ্ছি, তোমরা দুজন আমার কাগজে লিখবে," সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বলছিলেন শফিক রেহমান। "এই সময় আমি ঠিক করে ফেলেছিলাম যে আমি লন্ডনে আর থাকবো না, দেশে ফিরে যাব। তখন এরশাদের সেনা শাসনামল চলছে।" উনিশশো চুরাশি সালে শফিক রেহমান দেশে ফিরে বের করলেন 'যায় যায় দিন' নামের সাপ্তাহিক। এটি সাথে সাথেই বাজার মাত করেছিল, তরুণ পাঠকদের মধ্যে তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছিল। পত্রিকাটিতে পাশাপাশি ছাপা হতো একেবারেই ভিন্ন রাজনৈতিক মতের লেখকের কলাম। যায় যায় দিন পত্রিকার মাধ্যমেই আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে নতুন করে পরিচয় ঘটে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের পাঠকদের। জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তার লেখা রাজনৈতিক কলাম। "আমার যায় যায় দিন কাগজে এরা দু'জনেই কলাম লিখতেন, পাশাপাশি ছাপা হতো দুই ভিন্ন রাজনৈতিক মতের কলাম। ফেরদৌস আহমেদ কোরেশি লিখতেন স্বগত সংলাপ, আর গাফফার চৌধুরী লিখতেন তার রাজনৈতিক কলাম। এর পাশাপাশি "লন্ডন নকশা" নামেও তার একটি কলাম যেত।" "আজ তাদের দু'জনেই নেই, আমার মনটা আসলেই খুব খারাপ," বলছিলেন শফিক রেহমান। আবদুল গাফফার চৌধুরী যখন বিবিসিতে খন্ডকালীন কাজ করতে আসতেন, তখন তাঁকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন বিবিসির আরেক সাবেক কর্মী দীপঙ্কর ঘোষ। দীর্ঘদিন আগে অবসরে যাওয়া দীপঙ্কর ঘোষ এখন থাকেন কলকাতায়। "১৯৭৫ সালের দিকে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তখন তিনি লন্ডনে আরও কয়েকটি জায়গায় কাজ করতেন। ওঁনার স্ত্রী তখন হুইল চেয়ারে বন্দী, বাসায় হুইল চেয়ারে বসেই তাকে কাজকর্ম করতে হতো। পরে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।" উনিশশো তেতাল্লিশ সালে বাংলায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, তার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৯৯৩ সালে বিবিসিতে কিছু ধারাবাহিক অনুষ্ঠান হয়। তখন দীপঙ্কর ঘোষের সঙ্গে কাজ করেছিলেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। "তখন অমর্ত্য সেন, মৃণাল সেন, ঢাকার কিছু সাংবাদিক, আমলাকে নিয়ে আমরা সিরিজ অনুষ্ঠান করি। সেটিতে গাফফার ছিলেন অন্যতম কন্ট্রিবিউটর। কারণ এই দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে তিনি ভালো জানতেন। এই দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট যে তদন্ত করেছিল, তখন ব্রিটিশ সংবাদপত্রে এই দুর্ভিক্ষের খবর কতটা প্রকাশ করা হয়েছে, কতটা করা হয়নি, এটা নিয়ে উনি বেশ ভালো ওয়াকিবহাল ছিলেন। তার সেই কন্ট্রিবিউশন খুব বেশি করে মনে পড়ে।" লন্ডনে এক সঙ্গে কাজ করার সুবাদে আবদুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে দীপঙ্কর ঘোষের বেশ বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। তাদের শেষ কথা হয় জানুয়ারি মাসে, সেদিন তিনি মাত্র হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। "সাংবাদিক হিসেবে তার জ্ঞানের গভীরতা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। সাংবাদিকতার যে খুঁটিনাটি, কার কাছ থেকে কি তথ্য বের করে আনতে হবে, সেগুলো ছিল তার নখদর্পণে। গাফফার সেটা বেশ ভালো জানতেন। আর তিনি অনেক জানতেন, অনেক পড়াশোনাও করতেন।" সাংবাদিকতার বাইরে প্রথম জীবনে আবদুল গাফফার চৌধুরী যেসব লেখালেখি করেছিলেন, তার মধ্যে একজন শক্তিমান লেখকের সম্ভাবনা দেখেছিলেন অনেকেই, কিন্তু পরবর্তী জীবনে তাঁকে সেরকম লেখালেখিতে খুব বেশি মনোনিবেশ করতে দেখা যায় নি। তার লেখা বইয়ের মধ্যে আছে ভয়ংকরের হাতছানি, সম্রাটের ছবি, ডানপিটে শওকত, চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান, পলাশী থেকে ধানমন্ডি, শেষ রজনীর চাঁদ এবং কৃষ্ণপক্ষ। "আমি বলবো গাফফার চৌধুরী ছিলেন একজন সাহিত্যিক, কিন্তু তিনি কখনোই সেভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন না। তার অপার সম্ভাবনা ছিল সাহিত্যে," বলছিলেন শফিক রেহমান। "দেখুন, আজকে আবদুল গাফফার চৌধুরীকে সবাই চেনে আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো গানের লেখক আর কিছু বিতর্কিত রাজনৈতিক কলামের জন্য। কিন্তু সে তো আসলে একেবারেই ভিন্ন কিছু হতে পারতো। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণের মতো লেখকদের পঙক্তিতে জায়গা করে নিতে পারতো। আমার দুঃখ লাগে যে, এটা সে করলো না।" সূত্র: বিবিসি বাংলা (মোয়াজ্জেম হোসেন)
×