ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ ঘণ্টার মধ্যে আছড়ে পড়বে ভারত উপকূলে

অশনি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে উপকূলে একটানা বৃষ্টি

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ১০ মে ২০২২

অশনি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে উপকূলে একটানা বৃষ্টি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়া অশনি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। দুর্বল অবস্থায় এটি আগামী ২৪ ঘণ্টার ভেতর ভারত উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশে তা-ব চালানো প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণি বা আম্ফানের মতো ধ্বংসাত্মক হবে না অশনি। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি উপকূলে আছড়ে পড়ছে। বিরামহীন বৃষ্টিপাত হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলে। এতে উপকূলীয় জেলাগুলোর নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় চার সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী সংকেত এবং নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় বন্দরে ফিরেছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। সকাল থেকেই কয়েক শ’ ট্রলার বিষখালি, বলেশ্বর ও সুন্দরবনের খালগুলোতে নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করে। দিন শেষে সাগরের সব ট্রলার তীরে ফিরে এসেছে। ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলাগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে সব সরকারী আশ্রয়কেন্দ্র। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে চলছে সংস্কার কাজ। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে তিন বিভাগে ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এই তিন বিভাগে কোথাও কোথাও ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার থেকে ৮৯ মিলিমিটার বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে। বঙ্গোপসাগর-আরব সাগর নিয়ে গঠিত উত্তর ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তৈরি ২০২২ সালের প্রথম ঘূর্ণিঝড় অশনি। এর নামটি দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সিংহলী ভাষায় অশনি অর্থ ক্রোধ বা রোষ। তবে ভাগ্য ভাল উপকূলীয় বাসিন্দাদের। অশনির ‘ক্রোধ’ ধীরে ধীরে কমে আসছে! ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) তথ্যমতে, বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৬টার দিকে ঝড়টির অবস্থান ছিল ভারতের বিশাখাপট্টম থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং পুরি থেকে ৬৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে। সে সময় ঘণ্টায় প্রায় ২৫ কিলোমিটার বেগে অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোচ্ছিল অশনি। আইএমডি জানিয়েছে, প্রত্যাশিত গতিবিধি অনুসারে ঝড়টি মঙ্গলবারের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। তবে স্থলভাগে আঘাত হানার আশঙ্কা খুবই কম। ক্রমাগত শক্তি হারিয়ে ঝড়টি আগামী দুদিনের মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। সাধারণত মে মাসে গ্রীষ্মের চূড়ান্ত অবস্থায় বঙ্গোপসাগরের ওপর সৃষ্ট ঝড়গুলো উত্তর ভারত মহাসাগর অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী হয়। এসময় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও তার শক্তিবৃদ্ধির মতো আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে উষ্ণ সমুদ্র। তবে এখন সামুদ্রিক তাপমাত্রা সেরকম না হওয়ায় অশনি অতটা শক্তিশালী হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে ফণি ও তার পরের বছর ভারত-বাংলাদেশ উপকূলে তা-ব চালিয়েছিল সুপার সাইক্লোন আম্ফান। এতে প্রাণ হারান কয়েক শ’ মানুষ, ধ্বংস হয় অসংখ্য ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গাছপালা। উপকূলের সেই ক্ষত আজও মেটেনি। তবে ঘূর্ণিঝড় অশনি নিয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কোন আশঙ্কা নেই। এটি ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের মতোই উপকূলের কিনারা ছুঁয়ে দুর্বল গতিতে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুসারে, মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে অশনির শক্তি কমে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গতির ঝড়ে পরিণত হবে এবং ১২ মের মধ্যে সেটি আরও দুর্বল হয়ে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানায়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি (২৩-৪৩ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারি (৮৯ মিলিমিটার বা তারও বেশি) বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিন-৯ অনুযায়ী, এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। পূর্বাভাসে জানানো হয়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় অশনি পশ্চিম-উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি সোমবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। বাগেরহাটে বৃষ্টি শুরু ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, অশনির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টি ক্রমশ: বাড়ছে। এই বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন বোরো চাষীরা। যাদের ধান এখনও কাটা হয়নি এবং কাটার পর ঘরে তোলার অপেক্ষায় মাঠে রয়েছে, সে সকল কৃষক হাপিত্যেশ করছেন। অতিরিক্ত মূল্য দিয়েও ধান কাটা মজুর পাচ্ছেন না। বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের ধান চাষী নাজমুল শেখ, গোটাপাড়া ইউনিয়নের বাচ্চু মল্লিক ও মোড়েলগঞ্জের বনগ্রাম ইউনিয়নের ঝন্টিপুর গ্রামের চাষী উজ্জ্বল কুমার বলেন, ঈদের দিন অনেক বৃষ্টি ছিল। এরপর গত দুই তিন বৃষ্টি না থাকায় আমরা ধান কেটে মাঠে রেখেছিলাম। বাড়ি আনার আগেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। এবার ধানের বাম্পার ফলন হলেও শেষ সময়ে পোকার ব্যাপক আক্রমণ, মূল্যকম ও ক্ষেত মজুরের সঙ্কটে তারা বিপাকে পড়েছেন উল্লেখ করে দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক নির্মল ম-ল বলেন, দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। প্রায় দেড় মণ ধানের মূল্য দিতে হচ্ছে প্রতিদিন একজন ধান কাটা দিনমজুরকে (খেতমজুর)। তারপরেও দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে কিষান ঠিকমতো পাচ্ছেন না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, উপকূলীয় এ জেলায় এবার ৫৯ হাজার ২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এটা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই হাজার ৮৬০ হেক্টর বেশি। ইতোমধ্যে অধিকাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে যাদের ধান এখনও মাঠে আছে, তারা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন স্বীকার করে তিনি তাদের ধান দ্রুত ঘরে তোলার পরামর্শ দেন। নিরাপদে শতশত মাছ ধরা ট্রলার ॥ পাথরঘাটা থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় উপকূলের দিকে ফিরে আসতে শুরু করেছে শত শত মাছ ধরা ট্রলার। অশনির প্রভাবে রবিবার রাত থেকেই পাথরঘাটায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই কয়েক শ’ ট্রলার বিষখালী, বলেশ্বর, সুন্দরবনের খালগুলোর বিভিন্ন স্থানে ও উপকূলের খালগুলোতে নিরাপদ আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল থেকে দিন যতই গড়াচ্ছে আবহাওয়া আরও খরাপের দিকে যাচ্ছে। বিকেলে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিরামহীন ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এখনও কোন ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলে, কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। খুলনায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ॥ স্টাফ রিপোর্টার খুলনা অফিস থেকে জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে খুলনাজুড়ে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে দমকা বা ঝড়োবাতাস নেই। সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত জেলায় ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সূর্যের দেখা মিলেছে হাতে গোনা কিছু সময়ের জন্য। খুলনা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের উপকূলে আঘাত হানবে। এর প্রভাবে খুলনায় সোমবার বেলা ১১টা থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ ॥ স্টাফ রিপোর্টার সাতক্ষীরা থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভায় প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করে জাননো হয়, জেলায় মোট ২৮৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করতে পারবেন। উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরে ১৮১টি এবং আশাশুনিতে ১০৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনা খাবার মজুদ রাখার পাশাপাশি রাখা হয়েছে ৫ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ পর্যাপ্ত সুপেয় পানি। এছাড়া শ্যামনগর ও আশাশুনিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২ হাজার ৯৮০ স্বেচ্ছাসেবক ও ৮৬টি মেডিক্যাল টিম। হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাটে নৌ চলাচল বন্ধ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা হাতিয়া থেকে জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে সকল যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম হোসেনের নির্দেশে সকল নৌ চলাচল বন্ধ রেখেছেন ঘাট কর্তপক্ষ। জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদী উত্তাল রয়েছে। সকাল থেকে হাতিয়াতে বৃষ্টি হচ্ছে মূষলধারে। একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে দমকা হাওয়ার কারণে নদী পারাপারে ঝুঁকি রয়েছে। তাই সকাল থেকে সাময়িকভাবে নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ভোলায় বৈরী আবহাওয়া, মুষলধারে বৃষ্টি ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা ভোলা থেকে জানান, অশনির প্রভাবে ভোলায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে মাঝারি আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোলায় ৪.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভোলা আবহাওয়া অফিস। এদিকে যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে ভোলা জেলা প্রশাসন। ভোলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে সমুদ্রগামী জেলে ও ট্রলার মালিকদের নিরাপদে থাকার জন্য ইলিশা মেঘনা নদীর তীর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়েছে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আশনি মোকাবেলায় প্রস্তুতি সভা করেছে ভোলা জেলা কলেজ রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সদস্যরা। এ ছাড়াও ১৩ হাজার ৬শ’ স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বাগেরহাটে প্রস্তুত ৯১ আশ্রয় কেন্দ্র ॥ সংবাদদাতা শরণখোলা বাগেরহাট থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে মাঝারি বৃষ্টির সঙ্গে বইছে হাল্কা বাতাস। অশনি মোকাবেলায় দুপুরে জরুরী সভা করেছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা প্রশাসন। সভায় দুর্যোগপূর্ব ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সুন্দরবনসহ উপজেলার ৯১টি আশ্রয় কেন্দ্র। পটুয়াখালীতে দিনভর বৃষ্টি, জনজীবন বিপর্যস্ত ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা কলাপাড়া পটুয়াখালী থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে কলাপাড়ায় পায়রাবন্দরসহ গোটা উপকূলে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। বিরামহীন বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশে সোমবার দিনভর সূর্যের আলো দেখেনি কলাপাড়াবাসী। বৃষ্টির অঝোরধারা অব্যাহত রয়েছে। ভা-ারিয়া জরুরী সভা ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা পিরোজপুর থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আসনি পরিস্থিতি মোকাবেলায় পিরোজপুরের ভা-ারিয়া উপজেলা প্রশাসন সোমবার দুপুরে এক জরুরী সভা করেছে। জরুরী পরিস্থিতিতে আশ্রয়ের জন্য পৌরসভাসহ উপজেলার বাকি ৬টি ইউনিয়নে মোট ৫২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
×