সংসদ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত দেশ পাকিস্তান ক্রিকেটের বাংলাদেশী সমর্থক এবং দেশটির পতাকা ওড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংসদে বক্তৃতা দিয়ে রীতিমতো তোপের মুখে পড়েন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোঃ হারুনুর রশীদ। এ নিয়ে ব্যাপক হৈহট্টগোলে কিছু সময়ের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ অধিবেশন। এর জবাব দিতে উঠে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। তারা (বিএনপি) যে রাজাকার, আলবদর, আল শামসের পক্ষে কথা বলছে এবং রাজনীতি করছে; তারা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না, সেটা প্রমাণিত হয়েছে।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শনিবার সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে হারুনুর রশীদ অভিযোগ করেন, পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দেশটির প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হচ্ছে। পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ। পাকিস্তান ক্রিকেট টিম বাংলাদেশের সঙ্গে খেলছে। বাংলাদেশ যাই খেলুক না কেন, পাকিস্তানের সমর্থকরা তাদের পতাকা ওড়াচ্ছে। এটাকে কেন্দ্র করে একটা বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। মনে রাখতে হবে, তারা কিন্তু আমাদের দেশে মেহমান, অতিথি। আমাদের দেশের ক্রিকেট, আমাদের দেশের ফুটবল, আমাদের দেশের মেয়েরা সারা পৃথিবীতে খেলছে। সেখানে পতাকা ওড়ে না বাংলাদেশের? সেদিন একজন সদস্য দেখলাম সংসদে বিভিন্নভাবে বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলেছেন।
এ সময় সরকারী দলের সদস্যরা হইচই করে হারুনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এর মধ্যেও তিনি বক্তব্য দিতে থাকেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান টিম তো আসার দরকার ছিল না। পাকিস্তানী টিমকে কেন খেলতে দিয়েছেন? খেলতে দিতেন না। দরকারই ছিল না। আপনি তো তাদের অনুমতি দিয়েছেন। তারা এখানে এসেছে। এটি ঠিক নয়, একটি দেশের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ ঠিক নয়। এটি আমাদের জন্য সম্মানের নয়, গৌরবের নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় সরকারী দলের সদস্যরা আবারও হট্টগোল শুরু করলে বিএনপির এমপি হারুন স্পীকারের কাছে ‘প্রোটেকশন’ চেয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিয়ে কথা বললাম, এখানেও যদি বাধা দেন তাহলে আর কী বলব। আমি এমন কিছু বলিনি, আমি ওনার ভাষণ পড়ে শুনিয়েছি। এরপর হারুনুর রশীদ যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকার প্রসঙ্গ টানেন। কোরানের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, সাক্ষী-আলামত ছাড়া কাউকে হত্যা করা একেবারে গুনাহর কাজ। অষ্টম ও একাদশ সংসদের সদস্য আব্দুল মোমিন তালুকদার, তার বয়স তখন (১৯৭১ সালে) ১৮ বছর ছিল। উনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ২০১১ সালে জাতিসংঘের কনভেনশনে গিয়েছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: