ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে বছরে ডায়াবেটিক রোগী বাড়ছে এক লাখ

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেশে বছরে ডায়াবেটিক রোগী বাড়ছে এক লাখ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস এখন মহামারী হয়ে উঠছে। বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৪১ কোটি। দেশে প্রায় ৭১ লাখ, বছরে বাড়ছে আরও ১ লাখ রোগী। শুধু ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হয়। বিশ্বের সর্বত্র বয়সী মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ও ওইসব রোগের আক্রমণের পথ প্রশস্ত করে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে ৬৪ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করলে রোগী নিজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সচেতনতার অভাবে অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ রবিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, শতকরা ৭০ ভাগ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। ইচ্ছে থাকলেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ডায়াবেটিস যে হারে বাড়ছে তাতে আমাদের এখনই এ রোগ প্রতিরোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীর এমন বৃদ্ধির জন্য দায়ী মূলত জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, বার্ধক্য ও প্রবীণদের সংখ্যাবৃদ্ধি, নগরায়ন এবং তার বিভিন্ন প্রভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। এ রোগ শিশু কিশোরদেরও হতে পারে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, স্বাস্থ্যশিক্ষাই যার প্রধান চিকিৎসা। যথাযথ স্বাস্থ্যশিক্ষা পেলে একজন ডায়াবেটিস রোগী চিকিৎসকের ওপর নির্ভর না হয়ে এ রোগ ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিস এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। তবে উন্নত বিশ্বের তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডায়াবেটিস রোগীর বৃদ্ধির হার বেশি। ডায়াবেটিস সম্পর্কে অসচেতনতার কারণে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করছে অসংখ্য মানুষ। তিনি আরও বলেন, ডায়াবেটিসে মোট আক্রান্তের শতকরা ৫ ভাগ আক্রান্ত টাইপ-১ ডায়াবেটিসে। এই প্রকার ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা ইনসুলিন ছাড়া বাঁচতে পারেন না। তাদের ইনসুলিন প্রাপ্তি মানবাধিকার হয়ে দাঁড়ায়। ডায়াবেটিক সমিতির মাধ্যমে প্রতি বছর দেশের গরিব রোগীদের জন্য ৯ কোটি ইনসুলিন সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এরপরও ইনসুলিন পায় না টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শত শত রোগী। গরিব রোগীদের পক্ষে বছরের পর বছর ধরে ইনসুলিন গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন হাসপাতাল, ক্লিনিক, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা সেন্টারসমূহে সরকারী উদ্যোগে স্বল্প খরচে ইনসুলিন সরবরাহ এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, যা সুনিয়ন্ত্রণে না থাকলে রোগীর হৃদপিণ্ড, কিডনি ও চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের শতকরা ৫০ ভাগই জানেন না যে, তাদের ডায়াবেটিস আছে।
×