ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ২৭ জনকে মনোনয়ন বিএনপির

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ১ ডিসেম্বর ২০২০

পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ২৭ জনকে মনোনয়ন বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রথম দফায় পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ২৩ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। মনোনয়ন পাওয়া এসব প্রার্থীরা বিএনপির পক্ষ হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ২৫ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে। এজন্য প্রার্থীদের আজ মঙ্গলবারের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। এ নির্বাচনে অংশ নিতে সোমবার বিএনপি তাদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে। এর আগে সোমবার দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পৌরসভায় অংশ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় রবিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও বর্তমানে দেশে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূলে নয়, তথাপি স্থানীয় পর্যায়ে দলের সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫ পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সোমবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমে জানান, চেয়ারপার্সেনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার এবং ভারপ্রাপ্ত তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু দলের মহাসচিব স্বাক্ষরিত প্রত্যায়নপত্র প্রার্থীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ২৩ পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা ॥ পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় পৌরসভায় মোঃ তৌহিদুল ইসলাম; ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ মোঃ রেজাউল করিম (রাজা), দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে মোঃ শাহাদাৎ আলী, রংপুরের বদরগঞ্জে মোঃ ফিরোজ শাহ, কুড়িগ্রাম জেলার কুড়িগ্রাম পৌরসভায় মোঃ শফিকুল ইসলাম, রাজশাহীর পুঠিয়ায় মোঃ আল মামুন, কাটাখালীতে অধ্যাপক মোঃ সিরাজুল হক, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মোঃ মাহমুদুল হাসান, কুষ্টিয়ার খোকসায় রাজু আহমেদ; চুয়াডাঙ্গা জেলার চুয়াডাঙ্গায় মোঃ সিরাজুল ইসলাম (মনি); খুলনার চালনায় মোঃ আবুল খায়ের খান, বরগুনার বেতাগীতে মোঃ হুমায়ুন কবির, পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় মোঃ আবদুল আজিজ, বরিশালের উজিরপুরে মোঃ শহিদুল ইসলাম খান; বরিশালের বাকেরগঞ্জে এস এম মনিরুজ্জামান; ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে শাহ আব্দুল্লাহ আল-মামুন; নেত্রকোনার মদনে মোঃ এনামুল হক, মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ পৌরসভায় মোঃ আতাউর রহমান আতা, গাজীপুরের শ্রীপুরে মোঃ শহিদুল্লাহ শহিদ, সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে মোঃ ইকবাল হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আনোয়ারুল ইসলাম; হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে এমএফ আহমেদ অলি এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মোঃ আবুল মুনছুর মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। এবার পৌরসভা নির্বাচন ধাপে ধাপে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের ২৫ পৌরসভায় নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর এসব পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করা হবে। পৌরসভায় দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন বিধায় দলীয় মেয়র প্রার্থীকে আগে নিজের দল থেকেই মনোনয়ন নিশ্চিত করতে হবে। আইন অনুযায়ী দলের মনোনীত প্রার্থীকেই কেবল রিটার্নিং কর্মকর্তা দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেবেন। এর বাইরে যারা অংশ নেবে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবে। ভ্যাকসিন বণ্টনে সশস্ত্রবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান ॥ বিএনপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকেই সরকারের উদাসীনতা ও ব্যর্থতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও পরীক্ষার হার অত্যন্ত সীমিত। করোনার ভ্যাকসিন বণ্টন বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়ে উল্লেখ করে আরও বলা হয় বিএনপি মনে করে, বর্তমানে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দফতরের পক্ষে এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে পালন করা সম্ভব নয়। এই কাজ সশস্ত্রবাহিনী ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া উচিত। কয়েকটি উন্নত দেশেও সশস্ত্রবাহিনীকে কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের জন্য ৩২ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ প্রয়োজন হবে। ভ্যাকসিন সংগ্রহের সংরক্ষণ ও বিতরণের স্বচ্ছতা, কঠোর নজরদারি এবং জবাবদিহিতার ব্যবস্থা সংবলিত পরিকল্পনা জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। একই সঙ্গে এরই মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দাবিকৃত সংগৃহীত ভ্যাকসিন বিনামূল্যে বিতরণের জন্যও জোর দাবি জানানো হয়। রবিবার জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। ইচ্ছা করলেই জিয়ার নাম মোছা যাবে না- গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ॥ এদিকে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মন্তব্য করেন, এই দেশে বাস করতে হলে, ঢাকা শহরে বাস করতে হলে জিয়াউর রহমানের সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করব। যাদের হাতে সাইনবোর্ড খোলা হচ্ছে তাদেরই সাইনবোর্ড লাগাতে হবে। ইচ্ছা করলেই জিয়াউর রহমানের নাম মোছা যায় না। কারণ জিয়াউর রহমানের নাম ও তার ছবি স্বাধীনতাকামী, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, দেশপ্রেমিক জনগণের হৃদয়ে আঁকা। এই ছবি ছিঁড়ে ফেলা যায় না, মুছে ফেলা যায় না। কারণ এটা হৃদয়ে লেখা, কালিতে লেখা নয়। এই নাম যত স্পর্শ করবেন তত হাত ভারি হবে। আগামী দিন তাকে শাস্তি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দেয়া হচ্ছে, আবার প্রতিদিন টাকা খরচ করে আপনাদের নাম টয়লেট থেকে শুরু করে পাহাড়ের চূড়ায় লেখা হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ককে যদি মুছে ফেলতে চান, যেদিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকবেন না, সেদিন জনগণ শুধু আপনাদের নাম মুছবে না, সাদা চুন দিয়ে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলবে। তিনি আরও বলেন, পিতার ভাস্কর্য বানান, তার আপত্তি নেই। কিন্তু ১৫ আগস্ট যারা পিতার লাশ পড়ে থাকা অবস্থায় লুঙ্গি পড়ে দেশ ছেড়ে বিদেশ আশ্রয় নিল, তার সংখ্যা পাঁচ হাজারের মতো, এসব বেইমান কাপুরুষদের ব্যবহার করে যা খুশি করবেন, সেটা মানানসই কতটুকু বিবেচনা করতে হবে। যারা গায়েবি জানাজা পর্যন্ত পড়ল না তাদের কী অধিকার আছে এই নেতার নাম উচ্চারণ করার। তাদের পুরস্কৃত করেন কেন। শেখ মুজিবকে আমরা অপমান করি না, তার জায়গা ইতিহাসে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। তার যতটুকু অবদান আছে সেটা আমরা স্বীকার করব, এটাই নিয়ম। কিন্তু আপনার বাবার সঙ্গে যারা বেইমানি করেছে তাদের পুরস্কৃত করবেন না। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।
×