ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পিটিয়ে পুড়িয়ে হত্যা

বুড়িমারী মসজিদের খাদেমসহ ৫ জন তিনদিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ৪ নভেম্বর ২০২০

বুড়িমারী মসজিদের খাদেমসহ ৫ জন তিনদিনের রিমান্ডে

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ৩ নবেম্বর ॥ বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার গুজব রটিয়ে আবু ইউনুস মোহাম্মদ শহীদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মঙ্গলবার ছয়জনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ফেরদৌসী বেগম। এরা হচ্ছে পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউপির ঊফামারী গ্রামের মোঃ মন্টু মিয়ার ছেলে মোঃ আহিযুল ইসলাম (২৮), মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র মোঃ আদ্যার হোসেন (৪৫), সামছুল হকের ছেলে মোঃ নুরুজ্জামান (২৫), শফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ রশিদুল ইসলাম (১৬), হুমায়ুন কবিরের ছেলে জোবায়েদ হোসেন (১৯) ও মোঃ আইয়ুব আলীর ছেলে মোঃ বারি (১৭)। এক আসামি কিশোর হওয়ায় তাকে যশোর কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিকে সোমবার আটককৃত পাঁচজনের মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য ছিল। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩এর বিচারক রিমান্ড শুনানি শেষে পাঁচ আসামির প্রত্যেকের পৃথক পৃথক তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, তারা হলো বুড়িমারী জামে মসজিদের খাদেম জোবেদ আলী, রাজু (১৯), আনোয়ার হোসেন (৫৫), মানিক (২৬) ও মেরাজুল ইসলাম (১৭)। নারকীয় এ ঘটনায় তিন দিনে ১৬ আসামি গ্রেফতার হলো। এর আগে গত রবিবার প্রথম ধাপে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথম দফায় গ্রেফতারকৃতরা হলো ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউসুব আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক (২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী (৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)। জানা গেছে, মসজিদের খাদেম একেক সময় একেকভাবে কোরান অবমাননার গুজবের এবং পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার বক্তব্য তুলে ধরেছে। বিষয়টি খুবই সন্দেহজনক। তাই তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর রাতে পাটগ্রামের বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরান অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার দায়ে নিহতের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। বর্তমানে হত্যা মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। এদিকে এই কোরান অবমাননার গুজবের পৈশাচিক ঘটনায় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত করছে। কমিশন প্রথম দিন মাঠে তদন্তে নেমে কোরান অবমাননার কোন প্রমাণ পায়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পৈশাচিক এ ঘটনা ইসলামিক উগ্র মৌলবাদীর একটি সুপরিকল্পিত নৈরাজ্যের ঘটনা ছিল। এরা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারের ভাবমূর্তি সঙ্কটে ফেলতে এ বর্বর ঘটনাটি ঘটায়। উগ্র মৌলবাদীরা ছিল প্রশিক্ষিত। কারণ তারা খুব দক্ষতার সঙ্গে এবং দ্রুত ইউপি ভবনের ইটের ওয়াল ভেঙ্গে জুয়েলকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে। তখন তারা উগ্র মৌলবাদী সংগঠনের সেøাগান দিয়েছিল।
×