ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারকে সাবমেরিন দিল ভারত, প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে

প্রকাশিত: ০০:১২, ২৭ অক্টোবর ২০২০

মিয়ানমারকে সাবমেরিন দিল ভারত, প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি মিয়ানমার নৌবাহিনীকে রাশিয়ার তৈরি একটি পুরনো কিলো-ক্লাস সাবমেরিন দিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও প্রবৃদ্ধির জন্য ভারতের ‘সাগর’ ভিশনের সঙ্গে এই সাবমেরিন হস্তান্তর সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রতিবেশী দেশগুলোর সক্ষমতা ও আত্মনির্ভরশীলতার জন্য ভারতের যে প্রতিশ্রুতি, তা সহায়ক।’ খবর ওয়েবসাইটের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সামরিক সরঞ্জাম হস্তান্তরের মাধ্যমে মিয়ানমারকে তোয়াজ করছে ভারত। এর ফলে বঙ্গোপসাগরে বৃহৎ শক্তিগুলোর ভারসাম্যে তেমন প্রভাব না পড়লেও বাংলাদেশের ওপরে এর প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়ানমারে সাবেক ডিফেন্স এ্যাটাশে মোহাম্মাদ শহীদুল হক সোমবার বলেন, ‘অনেকে, বিশেষ করে ভারতের মিডিয়া বলছে, মিয়ানমারকে সাবমেরিন দেয়া হয়েছে চীনকে ঠেকানোর জন্য। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। কারণ, সাবমেরিনটি ভারতের কাছ থেকে এলেও সেটি চালানোর জন্য যেসব অবকাঠামো ও সুবিধা দরকার তার বেশিরভাগই চাইনিজ।’ তিনি বলেন, ‘ভারত হয়ত মনে করছে এ ধরনের সামরিক সরঞ্জাম দিলে মিয়ানমার চীনের বলয় থেকে বের হয়ে আসবে। আসলে তারা এটি তোয়াজ করার জন্য দিয়েছে। এর আগেও ভারত রাডার ও টর্পেডো মিয়ানমারকে দিয়েছে, তাদের উপস্থিতি প্রমাণ করার জন্য।’ সাবেক মেজর জেনারেল শহীদুল হক মনে করেন, এই সাবমেরিন হস্তান্তরের ফলে চীন-মিয়ানমার এবং ভারত-মিয়ানমার কৌশলগত সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে না। কিন্তু এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে। বঙ্গোপসাগরে এর কোন প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চীনের যে কৌশলগত স্বার্থ আছে বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে, সেটির জন্য তারা এখানে কোন কিছু হতে দেবে না। মিয়ানমারের চক্তো অঞ্চলে (রাখাইনে) চীনের স্বার্থ আছে এবং এই অঞ্চলকে তারা ব্যবহার করতে চায়, মালাক্কা স্ট্রেইটের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য।’ বঙ্গোপসাগরের ওপরে অবস্থিত চক্তো অঞ্চল থেকে চীন-মিয়ানমার ইকোনমিক করিডর শুরু হয়েছে জানিয়ে শহীদুল হক বলেন, ‘এখান থেকে রাখাইনের মধ্য দিয়ে ইউনান প্রদেশ পর্যন্ত গ্যাস লাইন ও তেল লাইন তৈরি হয়ে গেছে। এই পাইপলাইন দিয়ে ৪০ শতাংশ কম খরচে তেল যাচ্ছে চীনে। এছাড়া এরপরে শুরু হবে রেললাইন স্থাপনের কাজ।’ রাশিয়ায় তৈরি এই সাবমেরিন বঙ্গোপসাগরে ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা কম জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্দামান সমুদ্রে অর্থাৎ মিয়ানমার-থাই সমুদ্র সীমানায় এটিকে ব্যবহার করা হবে।’ সাবমেরিনটি প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্বেগের কারণ হচ্ছে এর ফলে দক্ষ সাবমেরিনারদের একটি দল তৈরি হবে মিয়ানমারে। তারা এরপরে রাশিয়া থেকে সাবমেরিন কিনতে পারে। কারণ, মস্কো নীতিগতভাবে প্রস্তুত।’
×