ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে মানবপাচার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

প্রকাশিত: ১৫:২৯, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

বরিশালে মানবপাচার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মানব পাচারের ঘটনায় দায়ের করা মামলার সাত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। একই সাথে বরিশাল থেকে ১৬ জনকে ভানুয়াতুতে অবৈধ পাচার মামলার আসামিদের মানবপাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত না করে শুধু প্রতারণায় অভিযুক্ত করায় তদন্ত কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই ঘটনায় ভানুয়াতুতে চলমান মামলার বর্তমান অবস্থা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চেয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ মঞ্জুরুল হোসেন এই আদেশ দিয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী কাইউম খান কায়সার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এজাহারের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত জেলার উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার ১৬ জন ব্যক্তিকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতুতে অবৈধভাবে পাচার করে বাবুগঞ্জের রাহুতকাঠী গ্রামের জসিম উদ্দিন, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান জুথি, ভাই এনামুল হক, বাবা হারুন-অর রশিদ, শ্বশুড় কাজী শামসুর রহমান, শ্যালক ইমান কাজী ও ভোট ভাই পলাশ হাওলাদার। সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রতিশ্রুতিত দেশে না পাঠিয়ে ভানুয়াতুতে নিয়ে ওই ১৬জনকে অনাহারে একটি জায়গায় আটক করে রাখা হয়। সেখান থেকে ১২জন পালিয়ে ওই দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চান। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবৈধ মানব পাচারের অন্যতম হোতা পলাশ হাওলদারসহ চারজনকে গ্রেফতার এবং অবৈধ পাচারের শিকার সকলকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ভানুয়াতুতে একটি মামলাও দায়ের করা হয়। ওই মামলায় পলাশ এখনও ভানুয়াতুর কারাগারে রয়েছে। পরে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন (আইওএম) সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ওই ১৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনেন। সূত্রে আরও জানা গেছে, ওই ১৬ জন বক্তি দেশে ফিরে তাদের টাকা ফেরত চাওয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুটো মামলা দায়ের করে হয়রানী শুরু করেন। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ১৬ জনের পক্ষে উজিরপুরের মোফাজ্জেল হোসেন বাদি হয়ে ২০১৯ সালের ১৮ নবেম্বর বরিশাল মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে জসিম উদ্দিন ও পলাশ হাওলাদারসহ তাদের নিকটাত্মীয় সাতজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলার অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়। পিবিআই উপ-পরিদর্শক সাইদুর রহমান চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালে দেয়া প্রতিবেদনে মানবপাচার সংক্রান্ত অপরাধের পাশ কাটিয়ে শুধু প্রতারণায় অভিযুক্ত করেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ট্রাইবু্যুনালে নারাজি দেন বাদি। ২৯ সেপ্টেম্বর ধার্য তারিখে নারাজি আবেদনের শুনানিকালে ট্রাইব্যুনালের বিচারক তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। পরে সাত আসামির সকলের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনের অভিযোগ গ্রহণ করে সকলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
×