ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙ্গাবালীর বেহাল সড়ক ॥ হাজারো মানুষের ভোগান্তি

প্রকাশিত: ২২:১৯, ৫ জুলাই ২০২০

রাঙ্গাবালীর বেহাল সড়ক ॥ হাজারো মানুষের ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ সাগরপারের ইউনিয়ন বড়বাইশদিয়া। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার এ ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ অধিকাংশ রাস্তা আজও কাঁচামাটির। দীর্ঘদিনেও উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা কাদামাটিতে একাকার হয়ে পড়ে। কোন কোন রাস্তায় জমে হাঁটুপানি। ইউনিয়নের কোথাও নেই পাকা সড়ক। এ কারণে নিত্য ভোগান্তি পোহাচ্ছে ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় যেতে বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের গাইয়াপাড়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত রাস্তা মাত্র একটি। খালগোড়া বাজারের খেয়াঘাট থেকে চরগঙ্গা ক্লোজারের ওপর দিয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে গাইয়াপাড়া লঞ্চঘাটে গিয়ে রাস্তাটি শেষ হয়েছে। অপরদিকে ক্লোজারের পশ্চিমপার দিয়ে অপর একটি রাস্তা কাটাখালী গ্রাম হয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বড়বাইশদিয়ায় হাকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পৌঁছেছে। দুটি রাস্তাই ইউনিয়নের প্রধানতম এবং ব্যস্ততম। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। দীর্ঘ কয়েকযুগ আগে নির্মিত মাটির এ রাস্তা আজ পর্যন্ত আর পুনঃসংস্কার হয়নি। তবে কেবলমাত্র চলতি বছর রাঙ্গাবালী সরকারী কলেজ সংলগ্ন সাইক্লোন শেল্টার নির্মিত হওয়ায় খালগোড়া খেয়াঘাট থেকে শুরু করে ২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক পাকা করা হয়। বাকি প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শুকনো মৌসুমে কাঁচা রাস্তায় কোনমতে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল ও টমটম ব্যবহার হয়। কিন্তু বর্ষা শুরু হলে তা বন্ধ হয়ে যায়। তখন চলাচলের ভরসা কেবল পা দুটো। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদামাটিতে একাকার হয়ে যাতায়াত অযোগ্য হয়ে পড়ে রাস্তা। ইউনিয়নের চারদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ থাকলেও মেরামতের অভাবে তাও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। উচ্চতার দিক দিয়ে বেড়িবাঁধও যথেষ্ট নয়। মাঝে মধ্যে বেড়িবাঁধ এত নিচু যে, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি একটু বেশি হলে তা তলিয়ে যায়। লোনাপানি ঢোকে ফসলি জমিতে। চরগঙ্গা বাজারের রাস্তায় নির্মিত স্লুইস গেটের দু’পাশে অন্তত ৩০০ মিটারের মতো রাস্তা তলিয়ে পানি ঢুকে যায় গোটা এলাকায়। এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিনেও রাস্তা উন্নয়ন বা সংস্কার করা হয়নি। বৃষ্টি হলে রাস্তার অবস্থা নদীর মতো হয়ে যায়। রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল দূরের কথা, হেঁটে চলা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে। বড়বাইশদিয়া ইউপি মেম্বার মোঃ সোনা মিয়া জানান, রাঙ্গাবালী এবং কলাপাড়া উপজেলায় যাতায়াত করতে হয় বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে। এখানের রাস্তাঘাট অনুন্নত থাকায় উপজেলার মানুষকে প্রচন্ড দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা এবং সোনারচর যেতেও হয় এ পথ দিয়ে। বড়বাইশদিয়ার অপরপাড়েই পায়রা সমুদ্রবন্দর। সেখানে যেতে হলেও এ পথ ব্যবহার করতে হয়। সবদিক বিবেচনায় রাস্তাগুলোর অতি দ্রুত উন্নয়ন করা দরকার। বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হাসানাত আব্দুল্লাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়ক উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী। সরকারের বিভিন্ন দফতরে বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
×