ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অদম্য প্রতিবন্ধী সুপনের লেখাপড়ায় বাধা দারিদ্র্য

প্রকাশিত: ০০:১৪, ১৩ জুন ২০২০

অদম্য প্রতিবন্ধী সুপনের লেখাপড়ায় বাধা দারিদ্র্য

সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী, ১২ জুন ॥ দুটো হাতই পোড়া সুপনের। ডান হাত অচল। তবে বাম হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে কোনরকম কলম বসিয়ে লিখে লিখে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। পোড়া ক্ষত আটকাতে পারেনি তার সফলতা। আর পোড়া ক্ষত নিয়েই একজন বড় প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। কিন্তু আদৌ কি সেই স্বপ্ন পূরণ হবে তার ! কারণ তার হতদরিদ্র বাবা-মায়ের পক্ষে এখন তার কলেজের খরচ মেটানো দায়। তাই তার কলেজে ভর্তি নিয়ে চরম দুশ্চিতায় পড়েছেন মেধাবী সুপনের পরিবার। সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাড়াইশাল নয়াপাড়ার বাসিন্দা দিনমজুর কৃষ্ণ রায় এবং গৃহিণী কল্পনা রানী রায় দম্পতি। ওই দম্পতির বসতভিটাও নেই। তাই খাস জায়গার বাস করেন। তাদেরই ৩য় সন্তান হলেন সুপন রায়। সুপন রায়ের মা কল্পনা রানী রায় বলেন, তার তিন ছেলে। সকলেই লেখাপড়ায় আগ্রহী। মেধাবীও। বড় ছেলে সুজন রায় সিভিলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছে। চাকরির চেষ্টা চালাচ্ছে। ভর্তি হয়েছে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। আর মেঝো ছেলে সুমন রায় পড়ে সৈয়দপুর সরকারী কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে। তিনি জানান, ছোট ছেলে সুপন তখন এক বছর বয়সী শিশু। যখন আগুন পানি কি তা বুঝে ওঠেনি। তাদের বাড়ির বাইরে প্রতিবেশীর রাখা আগুনে দুই হাত পুড়ে যায় সুপনের। এতে তার ডান হতের সবগুলো আঙ্গুলই পুড়ে যায়। আর বাঁ হাতের কয়েকটি আঙ্গুল একেবারে জড়িয়ে গেছে। সে সব দিয়ে ঠিকভাবে কলম ধরতে পারে না সুপন। ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ার প্রতি ভীষণ আগ্রহী সে। বাড়ির পাশের চৌমুহনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয় লক্ষণপুর স্কুল এ্যান্ড কলেজে। সেখান থেকে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।
×