স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষাটের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা, সাবেক ডাকসু ভিপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সোমবার ৭৭ বছরে পদার্পণ করবেন। করোনার কারণে এবারের জন্মদিনে তেমন কোন আনুষ্ঠানিকতা নেই। দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান মেনন। তিনি ১৯৪৩ সনের ১৮ মে পিতার কর্মস্থল ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে। পিতা বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান। মেননের ভাইদের মধ্যে মরহুম সাদেক খান, কিংবদন্তি কবি মরহুম আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান, প্রখ্যাত সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খান, বোন বেগম সেলিমা রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক শহিদুল্লাহ খান বাদল। তার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা খান এমপি, মেয়ে ড. সুবর্ণা খান ও ছেলে আইনের ছাত্র আনিক রাশেদ খান। রাশেদ খান মেনন ’৬০ দশকের সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। রাজনৈতিক কর্মকান্ড ছাড়াও গবেষণার কাজ, প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা, বিশেষ করে জাতীয় দৈনিকসমূহে তার নিয়মিত কলাম লেখায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণকে কার্যকর করতে তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ার কাজ শুরু করেন। ২৫ মার্চ পল্টনের শেষ জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ২৫ মার্চের কালরাতে গণহত্যার পর তিনি ঢাকার অদূরে নরসিংদী শিবপুরকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের কাজ শুরু করেন। ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদ সামরিক শাসন জারি করলে রাশেদ খান মেনন সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার জাতীয় সংগ্রামেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
বিএনপি জামায়াত জোটের দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক নীতির বিরুদ্ধে এগারো দল ও পরে আওয়ামী লীগ, জাসদ, ন্যাপসহ ১৪ দলের আন্দোলন গড়ে তোলেন। ২০০৮ সালে ডিসেম্বরে নির্বাচনে তিনি ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৩ সনের ১৮ নবেম্বর রাশেদ খান মেনন সর্বদলীয় সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি পার্লামেন্ট নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৮ আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং মহাজোট সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
