ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যুশূন্য চীন ॥ দ্বিতীয় দিনও করোনায়

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ২১ এপ্রিল ২০২০

মৃত্যুশূন্য চীন ॥ দ্বিতীয় দিনও করোনায়

গত দু’দিনে চীনের কোথাও প্রাণঘাতী নোভেল করোনাবাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের ঘটনা ঘটলেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এএফপি। চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, রবিবার নতুন করে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি। আগের দিনও করোনায় নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। রবিবার নতুন করে ১২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে আটজনই বহিরাগত। গত কয়েক সপ্তাহে স্থানীয়দের তুলনায় বহিরাগতদের আক্রান্তের হার বেশি। চীনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার ৭৪৭ এবং মারা গেছে ৪ হাজার ৬৩২ জন। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৭৭ হাজার ৮৪ জন। এছাড়া ৮১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনার প্রকোপ দেখা দেয়। এরপর থেকেই উহানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। কয়েক মাসেই করোনা মহামারী পরিস্থিতি তৈরি করেছে। একই সঙ্গে উহানে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে। চীনে করোনায় আক্রান্ত ও মারা যাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশই উহানের নাগরিক। তবে গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যেই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে চীন। তারা এই বিপর্যয় অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে। অন্যান্য দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও চীনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। ইতোমধ্যেই উহান থেকে লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। ফলে উহানে আটকা পড়া হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। এদিকে চীনের উহান শহরে প্রাদুর্ভাব ঘটার পর থেকেই করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ২১০ দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় দেশটির ধারে কাছে নেই কোন দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে তুরস্কে প্রথমদিকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। আক্রান্তের সংখ্যায় বর্তমানে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যেই চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তুরস্কে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৩০৬। অপরদিকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২ হাজার ১৭ জন। অন্যদিকে করোনাভাইরাস মহামারী চীনের ‘জ্ঞাতসারেই’ ঘটেছে এমন কোন প্রমাণ পাওয়া গেলে দেশটিকে কঠিন পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার হোয়াইট হাউসের দৈনিক ব্রিফিংয়ে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেজিংয়ের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে তিনি এ মন্তব্য করেন। ট্রাম্প বলেন, ‘শুরু হওয়ার আগে চীনেই এটি থামানো যেত, তা হয়নি আর এখন পুরো বিশ্ব এর কারণে ভুগছে।’ করোনাভাইরাসের এই সঙ্কটকালে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ দুটির মধ্যে যখন নজিরবিহীন সহযোগিতা দরকার, তখন দুই পক্ষের এই কথার লড়াই উল্টো বেজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত করে চলছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘যদি এটা ভুল হয়ে থাকে, ভুল ভুলই। কিন্তু তারা যদি জ্ঞানত দায়ী থাকে, হ্যাঁ, আমি বলছি, তখন অবশ্যই ফল ভোগ করতে হবে।’ তবে ওই রকম পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর চীন এ বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য দেয়নি বলে বেশ কিছুদিন ধরেই ট্রাম্প ও তার শীর্ষ সহযোগীরা অভিযোগ করে আসছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘চীন ঘেঁষা’ আখ্যা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত সপ্তাহে সংস্থাটির তহবিলও স্থগিত করেছেন।
×