ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্লেষকদের মতে সাময়িকভাবে দাম কিছুটা বাড়তে পারে

বিশ্ব বাজারে তেলের দাম খুব বেশি বাড়ার ঝুঁকি নেই

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ৬ জানুয়ারি ২০২০

 বিশ্ব বাজারে তেলের দাম খুব বেশি বাড়ার ঝুঁকি নেই

ইরাকে মার্কিন হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের রেভুল্যুশনারি গার্ডের অভিজাত কুদস ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল কাশেম সোলাইমানি। এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান টানাপোড়েনে বিশ্ব বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এই হামলার পরপর বিশ্বব্যাপী তেলের দাম প্রায় ৪ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে প্রায় ৭০ ডলারে পৌঁছেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দর। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দরপতন হচ্ছে বিশ্বের প্রধান প্রধান শেয়ার বাজারগুলোতে। সিএনবিসি। অর্থনীতিতে এখনই এর প্রভাব পড়েনি। মার্কিন হামলার জবাবে ইরানের পাল্টা পদক্ষেপের পরই বোঝা যাবে আর্থিক ক্ষতির খতিয়ান। শুধু তেলের বাজার নয়, শেয়ারবাজারেও বেশ তোলপাড় তুলেছে। মার্কিন ও এশীয় শেয়ারবাজারে দেখা গেছে মন্দাভাব। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, তারকা জেনারেল কাশেম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের দীর্ঘ দিনের বিরোধ আরও জোরালো হয়ে উঠতে পারে। এতে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি, বিশেষত হরমুজ প্রণালীকে ঘিরে অস্থিরতা বাড়তে পারে। এর প্রভাব পড়বে অঞ্চলটি থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সরবরাহে। এর জের ধরে আগামী দিনগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম উর্ধমুখী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সাংহাই ও হংকং শেয়ার মার্কেটের দর পতন হয়েছে। সূচক কমেছে তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরের শেয়ারবাজারে। মার্কিন সরকারের বন্ডের দাম পড়ে গেছে। কমে গেছে প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানি, স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান ও এয়ারলাইন্সগুলোর শেয়ারের দাম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি তেলের দাম বেড়েছে এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াতেও। হংকং স্টক মার্কেট বিশ্লেষক পল পং বলেন, ‘শেয়ার বাজারের বহু বিনিয়োগকারী ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের আশঙ্কায় আছে। যদিও এই যুদ্ধের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে মধ্যপ্রাচ্যে। তবে এটা ঠিক, পুরো বিশ্বের শেয়ারবাজারে এর একটা ধাক্কা লাগবে। যেমন খেয়াল করলে দেখবেন, হংকং শেয়ার বাজারের সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট কমে গেছে।’ ইরানে এখনও সোলাইমানির মৃত্যুর শোক। শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনী এ হামলার কঠোর জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি ছাড়া এখনও কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি ইরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কট কি মাত্রায় পড়বে তা নির্ভর করছে ইরানের নেয়া পাল্টা পদক্ষেপের পর। অন্যদিকে স্বর্ণ, ইয়েন ও সরকারী সঞ্চয়পত্রের বাজারে দেখা গেছে বড় ধরনের উল্লম্ফন। অনিশ্চিত পরিস্থিতির আশঙ্কায় শেয়ারবাজারের বদলে স্বর্ণের মতো মূল্যবান ধাতু কেনার প্রবণতায় এমনটি তৈরি হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। মধ্যপ্রাচ্যে যদি আরেকটি যুদ্ধ লেগেই যায়, সেক্ষেত্রে মুদ্রামান কমে যাবে এমনটি আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ হত্যাকাণ্ডের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশই আক্রান্ত হবে।
×