ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সঞ্চয়ের উপায় শিখুন

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

 সঞ্চয়ের উপায় শিখুন

বেতন হাতে আসতে না আসতেই চলে যায়? কোনভাবেই টাকা জমাতে পারছেন না? এই আফসোস অনেকেরই, কিন্তু টাকা জমানোর জন্য সঠিক পদক্ষেপ কয়জনই বা নিচ্ছে? হয়ত আপনার প্রতিমাসের বেতন এমন কিছুতে খরচ হয়ে যায়, যেখানে খরচ না করলেও চলত। আর সত্যিকারের প্রয়োজনের সময় সেই টাকাটা কাজে লাগত। হয়ত অনেকদিন ধরেই ভাবছেন কোথাও থেকে ঘুরে আসবেন, কিংবা খুব পছন্দের কিছু একটা কিনবেন, কিন্তু টাকা জমানো হচ্ছে না। তাহলে কী করবেন? আসুন টাকা জমানোর চমৎকার কিছু উপায় জেনে রাখি। জমানোর একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করুন আপনি টাকা কিসের জন্য জমাতে চাচ্ছেন, সেটা আগে ঠিক করুন। হয়ত কিছু টাকা জমিয়ে বিদেশ ঘুরে আসতে চান, কিংবা ঘরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিনতে চান। তাহলে সেই উদ্দেশ্যটা সব সময় মাথায় রাখুন। জেনে নিন কত টাকা হলে আপনি সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। প্রতি মাসে কমপক্ষে কত টাকা আলাদা করে রাখলে সেই টাকাটা দ্রুত জমাতে পারবেন সেটা হিসাব করে ফেলুন। তাহলে টাকা জমানো সহজ হয়ে যাবে। হুটহাট অপ্রয়োজনীয় জিনিসে টাকা খরচ হয়ে যাবে না। মাসের শুরুতেই খরচের একটা হিসাব করে ফেলুন প্রতিমাসে আপনার কোন্ খাতে কি রকম টাকা খরচ হয় তার একটা লিখিত হিসাব রাখা খুব দরকার। তাহলে আপনি একটা বাস্তবিক ধারণা পাবেন যে মাস শেষে কত টাকা আপনার কাছে জমানোর জন্য বাকি থাকবে। এ ছাড়া আপনি শনাক্ত করতে পারবেন কোন খরচগুলো আপনার না করলেও চলে, তারপর সেই খরচ আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন। এখন আমরা অনেকেই সরাসরি ব্যাংকে টাকা পাই, সেখান থেকে স্টেটমেন্ট দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন কোথায় কোথায় টাকা চলে যাচ্ছে। আপনার খরচের অভ্যাস সম্পর্কে আপনার পরিষ্কার ধারণা হয়ে যাবে। ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন এমন কতবার হয়েছে যে আপনি অনলাইনে কিছু একটা দেখে মনে করছেন এটা আমার চাই-ই চাই? আজকাল শপিং এত সহজ হয়ে গেছে যে আমরা হুটহাট করে এটা সেটা কিনে ফেলি, যেসব আসলে আমাদের না হলেও চলে। আলমারি ভর্তি কাপড় থাকা সত্ত্বে¡ও আমরা নতুন কোন জামা দেখলেই কিনে ফেলি। এভাবেই অনেকগুলো টাকা চলে যায়। তাই কোন কিছু কেনার আগে আপনি ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। যদি জিনিসটা সত্যিই আপনার দরকার হয়ে থাকে, তাহলে ২৪ ঘণ্টা পর সেটা কিনুন। এভাবে আপনি অপ্রয়োজনীয় কিছু কেনা থেকে নিজেকে থামাতে পারবেন। সেই টাকাটা আপনি জমিয়ে ফেলতে পারবেন। কিছু কেনার সময় সেটার প্রয়োজনীয়তা বিচার করুন ধরুন একটা ছোট কিছু কিনবেন, যার দাম খুব বেশি না। ধরলাম ৫০০ টাকা। কিন্তু আপনার মাসিক বেতনকে যদি অফিস আওয়ার দিয়ে ভাগ করেন, তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন সেই ৫০০ টাকা অর্জন করার জন্য আপনার কতটুকু পরিশ্রম আর সময় দিতে হয়েছে। তাহলে আর আপনার মনে হবে না জিনিসটার দাম কম। হয়ত সামান্য এই জিনিসের পেছনে আপনি আপনার জীবনে ৫ ঘণ্টার পরিশ্রমের মূল্য দিচ্ছেন। এভাবে ভাবলে আপনি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবেন। বার্ষিক ব্যয় খেয়াল রাখুন ধরুন আপনি খুব কাছের কোন দূরত্বের জন্য রিক্সায় যান, রিক্সা ভাড়া হয়ত ২০ টাকা। কিন্তু সেটুকু পথ যদি আপনি হেঁটে যেতে পারেন তাহলে বছরে আপনি ৭ হাজার টাকার বেশি জমিয়ে ফেলতে পারেন। প্রতিদিনের ২০ টাকা কম মনে হলেও ৭ হাজার টাকা কিন্তু অনেকগুলো টাকা। এভাবে আপনি একটু বুদ্ধি করে চললে অনেক খাতেই অনেক টাকা বাঁচিয়ে ফেলতে পারেন। সেই টাকা আপনি আপনার প্রয়োজন বা শখের পেছনে খরচ করতে পারেন। অটোমেটিক সেভিংয়ের ব্যবস্থা করুন ব্যাংকিং এখন এত সহজ হয়ে গিয়েছে যে সেভ মানি অনেকটাই সহজ। আপনার ব্যাংক থেকে প্রতিমাসে যদি নির্দিষ্ট কিছু টাকা অটোমেটিক কোন সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়, তা হলে মাসের শুরুতেই আপনি জমানোর টাকাটা আলাদা করে ফেলতে পারবেন। ধরুন প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা ব্যাংক একাই কোন সেভিংস এ্যাকাউন্টে নিয়ে যায়, তাহলে আপনি বুঝবেন বাকি মাস কতটুকু টাকা দিয়ে আপনাকে চলতে হবে। এভাবেই ধীরে ধীরে অনেক টাকা জমে যাবে। আপনাকে জমানো নিয়ে চিন্তাও করতে হবে না। বাইরে খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে ফেলুন শহরের জীবনটাই এমন হয়ে গেছে যে আমাদের হুটহাট বাইরে খেতে যাওয়াটাই বিনোদন। কিন্তু মাসে এক দুইবার আর বিশেষ উপলক্ষ ছাড়া বাইরে খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দিন। সেখানে এক কাপ কফির পেছনে আপনার ১০ টাকাও যায় না, সেখানে বাইরে খেলে কফির দাম হয়ে যায় ২০০ টাকারও বেশি। এর চেয়ে ঘরে বা ক্যাম্পাসে আড্ডা দিন, পার্কে বা ছাদে প্রাকৃতিক পরিবেশে গল্প করুন।
×