স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের ম্যাচ খেলতে ওমানগামী জাতীয় ফুটবল দলসহ ২৪১ যাত্রী নিয়ে ফের জরুরী অবতরণ করে বিমানের নতুন কেনা ড্রিমলাইনার ৭৮৭।
সোমবার রাতে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট (বিজি-০০২১) হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়ার এক ঘণ্টা পর আবার জরুরী অবতরণ করে। পরে সোমবার সকালে অপর একটি ড্রিমলাইনার তাদেরকে নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যায়। ওই ফ্লাইটে ২৬ ফুটবলার ও ২৪১ যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে মাস্ককাট পৌঁছেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন জানিয়েছেন, এটা বড় ধরনের কোন ত্রুটি বা সমস্যা ছিল না। ফ্লাইট টেক অফের পরে একটা সিগন্যাল পেয়ে আর কোন ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদে ফিরে আসেন। বিমান যাত্রীর নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দেয় বলেই এ ধরনের সাধারণ ত্রুটিতেও উড্ডয়ন থেকে বিরত থাকে।
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ ফুটবল দলের মিডিয়া অফিসার আহসান আহমেদ অমিত গণমাধ্যম কর্মীদেরকে জানিয়েছেন, রবিবার ফ্লাইটের সময় ছিল সাড়ে ৯টায়। কিন্তু সেটি ২ ঘণ্টা পিছিয়ে সাড়ে ১১টার দিকে ছাড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা আকাশে ওড়ার পর ধুপ করে শব্দ হয়ে, বিমানের ভেতরের বাতি বন্ধ হয়ে যায় এবং এসিও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন পাইলট ঘোষণা দেন, বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে এবং পুনরায় ঢাকায় ফিরে যাওয়া হচ্ছে। এ ঘোষণার পরপরই বিমানের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফুটবলাররা অনেকে ভয় পেয়ে যান। দোয়া-দরুদ পড়তে থাকেন। সাধারণ যাত্রীদের অনেকে ছোটাছুটি করতে থাকেন। রাত দেড়টার দিকে বিমানটি আবার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পরে ফুটবলারদের উত্তরার প্লাটিনাম হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সোমবার সকালে আবার তাদের এয়ারপোর্টে নেয়া হয়।
বিমান জানিয়েছে, ত্রুটি দেখা দেয়া ওই ড্রিমলাইনটি স্বাভাবিক হওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যায়।
এ সর্ম্পকে জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ওই ফ্লাইটের যান্ত্রিক ত্রুটি তেমন সিরিয়াস কিছু ছিল না। তবুও বিমান যেহেতু সেফটি ইস্যুতে কম্প্রাইজ করে না, যাত্রীদের নিরাপত্তাকেই প্রাধান্য দেয়, সেজন্য পাইলট আর ঝুঁকি না নিয়ে সিগন্যাল পাওয়া মাত্রই ফিরে আসে। রাতেই সেই ফ্লাইটটি চেক করে উড্ডয়নযোগ্য করা হয়। সকাল দশটায় সেটা ঢাকা ছেড়ে যায়। এখন প্রশ্ন ওঠতে পারে এত সময় দেরি হলো কেন। এ বিষয়ে বলতে চাই কেবিন ও ককপিট ক্রুদের রেস্টিং আউয়ার মেনে চলতে হয়। এজন্য ওই ফ্লাইটের ক্রুদের পরিবর্তে নতুন সেট দিয়ে সকালে পাঠানো হয়।
জানতে চাইলে বিমানের ডিএফও ক্যাপ্টেন এবিএম ইসমাইল বলেন, ড্রিমলাইনারটির ডানায় সামান্য শ্লটারিং হওয়ার সিগন্যাল পেয়ে পাইলট আর ঝুঁকি নিয়ে আকাশে থাকেননি। তিনি তাৎক্ষণিক ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন এবং নিরাপদে অবতরণ করেন।
দিন রাতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে বহন করা ওমানগামী বিমান মাঝ পথ থেকে আবার ফিরে আসে ঢাকায়। তবে আজ (সোমবার) সকালে বিমানের অন্য একটি ফ্লাইটে নিরাপদে ওমান পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল।
এদিকে বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ওমানে পৌঁছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ওমানে পৌঁছানোর পর জাতীয় দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু বলেছেন, রবিবার রাতের ফ্লাইটে এতটাও খারাপ পরিস্থিতি ছিল না। বিমানের ভেতরে বিদ্যুত ঠিকমতো কাজ করছিল না। বিমান ঝাঁকিও খাচ্ছিল। যে কারণে বিমান কর্তৃপক্ষ মনে করেছে চার ঘণ্টা ফ্লাই করা সম্ভব না। আমরা ঘণ্টা খানেক ফ্লাই করে আবার ঢাকায় ফিরে আসি। আমাদের কোন সমস্যা হয়নি। অবশ্য যখনই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত হয়েছে অনেকে। তবে এমন কোন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: