ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমারের ৩৭ ইয়াবা কারখানার একটিও আজ পর্যন্ত বন্ধ হয়নি

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

 মিয়ানমারের ৩৭ ইয়াবা  কারখানার একটিও   আজ পর্যন্ত বন্ধ হয়নি

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্য সংলগ্ন এলাকা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত ৩৭ ইয়াবা কারখানার একটিও আজ পর্যন্ত বন্ধ করেনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। রাষ্ট্রীয় পর্যায় ছাড়াও দুদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে দফায় দফায়। সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের পক্ষে তালিকাও দেয়া হয়েছে মিয়ানমার পক্ষকে। কিন্তু মিয়ানমার পক্ষ বরাবরই বিষয়টি দেখার আশ্বাসে রেখে বিহিত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যার ফলে সীমান্তের চোরাপথে এখনও ইয়াবার চালান আসছে বাংলাদেশে। ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে এপারে গ্রেফতার হয়েছে বহু। এছাড়া আত্মসমর্পণ করেছে ১০২ জন। আত্মসমর্পণের অপেক্ষায় রয়েছে আরেকটি গ্রুপ, যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ইয়াবার শীর্ষ গডফাদার সাইফুল করিম টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারানোর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের দুর্গ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। ইয়াবা ব্যবসা করে বিলাসবহুলভাবে নির্মিত টেকনাফের বহু ভবন উত্তেজিত জনতার হাতে ভাংচুর হয়ে বিধস্ত হয়েছে। এসব কিছুই মরণ নেশা মাদক ইয়াবার বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের সিন্টিমেন্টের বহির্প্রকাশ। এসব ঘটনার ফলে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শীর্ষস্থানীয় অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছে, আবার অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সীমান্তের মিয়ামার এলাকায় রাখাইন রাজ্য জুড়ে যে ৩৭ ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে এবং সেখান থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন মূল্যের ইয়াবার চালান সে দেশের সেনা, সীমান্তরক্ষী ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ভেদ করে কিভাবে পাচার হয়ে এদেশে আসছে তার কোন উত্তর মিয়ানমারের কোন কর্তৃপক্ষ এ যাবত সময়ে দিতে পারেনি। অথচ, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সচিব এমনকি বিজিবি ও বিজিপি পর্যায়ে বৈঠকে নিয়মিত আলোচনায় ইয়াবার বিষয়টি উঠে আসছে। কিন্তু ইয়াবা উৎপাদনবিরোধী কোন তৎপরতা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের নেই। শুধু তাই নয়, তাদের দেশে কারা ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারা এ ইয়াবা চালানের সঙ্গে জড়িত তাদের কারও বিরুদ্ধে কখনও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সর্বশেষ গত সোমবার টেকনাফে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে রিজিওন পর্যায়ে যে বৈঠক হয়েছে তাতেও ইয়াবা পাচার ঠেকানোর বিষয়টি উঠে এসেছে এবং যে সমঝোতা হয়েছে তাতে ইয়াবাসহ সকল মাদক প্রতিরোধ, নাফ নদীতে যৌথ টহল, স্থল মাইন, চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। ওই বৈঠকে মিয়ানমার পক্ষ পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে, সে দেশের কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইয়াবা পাচারে জড়িত। ইয়াবা পাচারের বিপরীতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তারা অস্ত্র জোগাড় করছে এবং এ অস্ত্র অবৈধ কর্মকান্ডে ব্যবহার করছে।
×