ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ পাল্টাপাল্টি হামলা ঢাবিতে

প্রকাশিত: ১০:৫০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ পাল্টাপাল্টি হামলা ঢাবিতে

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলার জন্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগকে দায়ী করলেও ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেছেন, বিষয়টি সত্য নয়। ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনায় কোন হামলা হয়নি। দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কর্মীরাও আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে এ হামলা হয়েছে বলে প্রথমে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। ছাত্রদলের ভাষ্যমতে, তাদের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত তিন সাংবাদিক ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলেও জানান তারা। হামলার প্রতিবাদে বেলা আড়াইটার দিকে শহীদ মিনার এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী। মিছিলটি টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়। ছাত্রদলের গত কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জল জানান, টিএসসি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রড লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলা করেছে। আহতদের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনে এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সোহেলসহ ৩০ জন রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন গুরুতর আহত। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, একটি বেসরকারী টেলিভিশনে সাক্ষাতকার দিয়ে তারা টিএসসির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি সনজিতের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা পেছন পেছন এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ৩০ জনের মতো আহত হয়েছেন। এছাড়া তাদের মোবাইল ও বাইক ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি হামলার বিচার দাবি করেন। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, তিনি লাইব্রেরির ওয়াশ রুমে গিয়েছিলেন। এসে অনেককেই জড়ো হতে দেখেন। এরপর মারামারির ঘটনা শুনতে পান। তিনি এসব জানতেন না। তবে পরে জেনেছি, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কটূক্তি করছিলেন, আর স্লোগান দিচ্ছিলেন। এটা দেখে ছাত্ররা এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরাও ওই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও যারা এসব ঘটিয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি। তবে এটা ছাত্রলীগের কোন হামলা না বলেই আমরা জানতে পেরেছি। দুই পক্ষের কর্মীরাই আহত হয়েছে। আমাদের জগন্নাথ হলের এক ছাত্রলীগ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাই আমরা নির্দেশ দিয়েছি বা আমাদের কথায় হামলা এ ধরনের কথা বলা মানে মিথ্যাচার করা। এদিকে স্টুডেন্ট জার্নাল নামে একটি গণমাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আনিসুর রহমান, বিজনেস বাংলাদেশের আফসার মুন্না ও প্রতিদিনের সংবাদের রাহাতুল ইসলাম রাফি এ সময় হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন তারা। তবে মারামারি মধ্যে পড়ে যাওয়ায় কারণে এমন হতে পারে বলে স্বীকার করেছেন নেতারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এসে নিজেদের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেন বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমাও চান সভাপতি। দুঃখ প্রকাশ করে সাদ্দাম বলেন, এটা সম্পূর্ণ একটি অঘটন। তারা সবসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে চান। কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী কর্মীদের জন্য সংগঠন কলঙ্কিত হচ্ছে। এটা আসলে নিজেদের ব্যর্থতা। ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
×