ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই ও পাঠ প্রতিযোগিতা শুরু

প্রকাশিত: ১০:০৪, ২৬ আগস্ট ২০১৯

 বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই ও পাঠ প্রতিযোগিতা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন প্রজন্মের কাছে জাতির পিতাকে ভিন্নভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চমৎকার এক আয়োজন। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার আত্মত্যাগের কথাসহ তার বর্ণিল জীবনের কথা বলা অজস্র্র বই নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। সেখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত সকল গ্রন্থের সম্ভার। শুধু কি তাই, বঙ্গবন্ধু রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থের পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। সঙ্গে রয়েছে শেখ মুজিবকে নিবেদিত কবিতা পাঠের আসর। সুন্দরের প্রতিচ্ছবিময় পাঁচ দিনব্যাপী এ আয়োজনের সূচনা হয় রবিবার। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই প্রদর্শনী ও বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ প্রতিযোগিতা। বইপ্রেমীদের জন্য পাঁচদিনই উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী ও পাঠ কার্যক্রম। আয়োজনটি উপভোগের পাশে প্রদর্শনী থেকে সংগ্রহ করা যাবে প্রয়োজনীয় বইটি। বই প্রদর্শনীতে রয়েছে বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টল। বর্তমান সময় পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গ্রন্থ প্রদর্শনীর পাশাপাশি ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ের পাঠ প্রতিযোগিতায়। প্রতিযোগীরা পাঠের পাশাপাশি স্বাধীনতার মহান স্থপতিকে নিয়ে নিজেদের মতামত উপস্থাপন করবে বিচারকমন্ডলীর সামনে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী স্কুলগুলো হচ্ছে রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, আজিমপুর গবর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বিয়াম স্কুল এ্যান্ড কলেজ এবং নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজ। রবিবার সকালে একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায় সংস্কৃতি সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মিলন কান্তি নাথ। স্বাগত বক্তব্য দেন গ্রন্থকেন্দ্রের উপ-পরিচালক সুহিতা সুলতানা। অতিথি ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশবিরোধী যে ষড়যন্ত্র চলমান তাকে রুখে দিতে হলে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চার কোন বিকল্প নেই। আর স্কুল কলেজ পর্যায় থেকেই এই কাজটি শুরু করতে হবে। তিনি প্রতিটি শিক্ষার্থীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন গড়ার আহ্বান জানান। মিনার মনসুর বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। দেশের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য বঙ্গবন্ধুকে বেশি বেশি পাঠ করা প্রয়োজন। এই পরিস্থিতি বদলে দিতে হলে তরুণ প্রজন্মেও বই পড়ার যেমন বিকল্প নেই। পাঠ্য বইয়ের বাইরে সৃজনশীল ও মননশীল বই পড়তে হবে। জানতে হবে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে। শিমুল মুস্তাফা পরিবেশিত বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় দ্বিতীয় অধিবেশন। এরপর বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের উপাধ্যক্ষ দেওয়ান মোঃ তমিজদুজ্জামান। পাঠ প্রতিযোগিতা নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন অভিনেত্রী চিত্রলেখা গুহ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর। আজ সোমবার সকালে দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে পাঠ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। আগামী বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী অনুষ্ঠানে পাঠ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করবেন। জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। স্মরণে বরণে কথা কবিতা গানে ॥ গানের সুরে, কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে সুন্দরতম হয়ে ওঠে সন্ধ্যাটি। সঙ্গে যুক্ত হয় জাতির পিতাকে নিবেদিত কথন ও কবিতা। পরিবেশনায় অংশ নিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা। রবিবার জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে স্মরণে বরণে কথা-কবিতা-গানে শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে আয়োজনে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করা হয়। পরিবেশনায় অংশ নেন বাংলাদেশের রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মহাদেব ঘোষ, ভারতের নজরুলসঙ্গীত শিল্পী সোমরিতা মল্লিক ও বাংলাদেশের আবৃত্তিকার শাহাদাত হোসেন নিপু। শিল্পী মহাদেব ঘোষ একে একে গেয়ে শোনান ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘তুমি আমাদের পিতা’, আছে দুঃখ আছে মৃত্যু’, ‘তুমি রবে নীরবে’ ও ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে’। ভারতের শিল্পী সোমরিতা মল্লিক গেয়ে শোনান ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব’, ‘যেদিন লব বিদায়’, ‘চুরির ডালে নুড়ির মাল্য’, ‘রব না কৈলাশপুরে’ ও ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’ গানগুলো। অনুষ্ঠানে সূচনা হয় শাহাদাত হোসেন নিপুর কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে।
×