ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে আর অর্থ বরাদ্দ নয় ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:০৩, ২৬ আগস্ট ২০১৯

  রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে আর অর্থ বরাদ্দ  নয় ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সোনালী, রূপালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংককে সরকারের পক্ষ থেকে আর কোন অর্থ বরাদ্দ (রিফাইন্যান্সিং) দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত এই চার ব্যাংককে আগামী সাত দিনের মধ্যে কর্মকৌশল জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রবিবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে আলোচনা শেষে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী। প্রতি অর্থবছরেই মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে বরাদ্দ (রিফাইন্যান্সিং) দিয়ে আসছে সরকার। তবে সেই সুযোগ আর রাখা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে এখন থেকে আর রিফাইন্যান্সিং নয়। প্রতিবছর যে রিফাইন্যান্সিং করতাম লস (ঘাটতি) কভার করার জন্য, দ্যাট ইজ অফ (তা বন্ধ)। দ্যাটস স্টোরি অব পাস্ট (এটা এখন থেকে অতীত)। আর কোনদিন রিফাইন্যান্সিং হবে না। ‘তাদের অর্থ আয় করতে হবে। এ দেশের মানুষকে দেখাশোনা করেই তাদের বেতন নিতে হবে।’ তিনি বলেন, তারা আমাদের একটি কর্মপরিকল্পনা দেবেন, কীভাবে এই ব্যাংকিং খাতকে আরও শক্তিশালী করা যায়, আরও বেগবান করা যায় এ বিষয়ে আজকে (রবিবার) তারা আমাদের অবহিত করবেন। এজন্য আজকে (রবিবার) আমরা এখানে বসেছি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকগুলোর জন্য বরাদ্দ আছে এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, এ বছরের বাজেটে কোন বরাদ্দ নেই। ব্যাংকগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে মন্ত্রী বলেন, তিন বছর ধরে আমাদের যে ধারাবাহিক কার্যক্রম চলছে, তাতে আগামীতে জিডিপি আট শতাংশের নিচে নামবে না। তবে ব্যাংকগুলোকে সম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে হবে এবং বুঝে শুনে ঋণ দিতে হবে। গত ছয় মাসে দেশে খেলাপী ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই বলেছিলেন, খেলাপী ঋণ এক টাকাও বাড়বে না। এখন এর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করবেন কি না? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, খেলাপী ঋণ এক টাকাও বাড়বে না। খেলাপী ঋণ বাড়ছে -এটা আমি মানব না। যেদিন আমি বলেছিলাম খেলাপী ঋণ বাড়বে না, সেদিনই আমি বলেছিলাম একটা এক্সিট প্ল্যান রাখব। সেই এক্সিট প্ল্যান কার্যকর হলে বলবেন যে, বাড়ছে কি বাড়েনি। শুধু কি এক্সিট প্ল্যান বাস্তবায়ন না হওয়াই খেলাপী ঋণ না কমার কারণ? এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অবশ্যই। ব্যবসায়ীরা তো এখন টাকাই দিচ্ছে না। এমনকি যারা দিত, তারাও এখন দিচ্ছে না। তারা এ সুযোগ নেবে, তারা তো ব্যবসায়ী।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাড়াতাড়ি এর সুরাহা করব। সুরাহা করলে আমাদের অবস্থা আপনারাই মূল্যায়ন করতে পারবেন। আপনারা খুশি হবেন। তখন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্রই বদলে যাবে।’ এ ছাড়াও তিন মাসের সময় দিয়ে সুদের হার কমিয়ে সিঙ্গেল ডিজিটে আনার কথাও বলেন তিনি। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, অনেকেই তারল্য সঙ্কট নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু আমাদের তারল্যের পরিমাণ প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আমানত এবং ওদিক থেকেও আমাদের অবস্থান খুব ভাল।
×