ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কোন সংলাপ নয়- উত্তর কোরিয়া ॥ আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ১৭ আগস্ট ২০১৯

শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যে কোন ধরনের শান্তি আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার পুরোপুরি ভ্রান্ত কার্যকলাপের কারণেই এ সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের দেয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্ত জানায় উত্তর কোরিয়া। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানায়, শুক্রবার ভোরে পূর্ব উপকূলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে এ ধরনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল দেশটি। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চীফস অব স্টাফ জানান, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল আটটায় অজ্ঞাত ক্ষেপণাস্ত্র দুটি উৎক্ষেপণ করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৩০ কিলোমিটার ওপরে উঠে ২৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। এর ছয়দিন আগে জাপান সাগরে স্বল্পপাল্লার দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে উত্তর কোরিয়া। গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের মধ্যে বৈঠকে পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করা হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিক ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল উত্তর কোরিয়া। পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়ন ঘটানোর কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে দেশটি। জাপানের শাসন থেকে কোরিয়ার স্বাধীনতা উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। ওই ভাষণে তিনি ২০৪৫ সালের মধ্যে কোরীয় উপদ্বীপ পুনর্একত্রীকরণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে কোরিয়া দুটি দেশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন ভাষণে বলেন, ‘কোরীয় উপদ্বীপ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে।’ যদিও উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সংলাপ নিয়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে মুন বলেন, নতুন কোরীয় উপদ্বীপ, যেটি সারাবিশ্বে, পূর্ব এশিয়ায় এবং উপদ্বীপটিতে শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে, সেটার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। উত্তর কোরিয়ার দেয়া বিবৃতিতে আলোচনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এতে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া শান্তিপূর্ণ অর্থনীতি ও শান্তিপূর্ণ সরকারের কথা বলছে, একই সঙ্গে দেশটি যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের এটা করার কোন অধিকার নেই। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যদি তার চিন্তার ধরন উন্নত হয় এবং যখন তিনি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করেন, তখন কিভাবে আমাদের অধিকাংশ সেনাকে ৯০ দিনের মধ্যে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করে মহড়া চালান। বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট মুনকে লজ্জাহীন মানুষ বলেও অভিহিত করা হয়। এতে বলা হয়, ‘সত্যিকার অর্থে তিনি লজ্জাহীন মানুষ।’ বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে যৌথ মহড়া চলছে। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে উত্তর কোরিয়া। দেশটি জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে সমঝোতার বরখেলাপ করছে তারা। এর আগে ‘যুদ্ধের জন্য মহড়া’ বলে অভিহিত করেছিল তাদের। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে লেখা এক চিঠিতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন অযৌক্তিক ও ব্যয়বহুল এই সামরিক মহড়া নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়া চালানোর সিদ্ধান্তের কারণেই পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সিকে (কেসিএনএ) দেয়া এক বিবৃতিতে ওই কর্মকর্তা জানান, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার মতো কোন শব্দ আমাদের নেই।’
×