ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড না নিউজিল্যান্ড ফয়সালা আজ

প্রকাশিত: ১০:১৪, ১৪ জুলাই ২০১৯

 নতুন চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড না নিউজিল্যান্ড ফয়সালা আজ

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে ১২তম বিশ্বকাপের গ্র্যান্ড ফাইনাল আজ। ওয়ানডে বিশ্বশ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। সেই ১৯৭৫ থেকে এ পর্যন্ত তিনবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি কুলিন ইংলিশদের। ১৯৯২ সালের পর আরেকটি ফাইনালের জন্য তাদের অপেক্ষাটা দীর্ঘ ২৭ বছরের। এবার ঘরের মাটিতে অন্যতম ফেবারিট ইয়ন মরগানের দল কী পারবে ৪৪ বছরের শিরোপার আক্ষেপ ঘোচাতে? অন্যদিকে চিরায়ত সেমিফাইনালের দল নিউজিল্যান্ডের এটি টানা দ্বিতীয় ফাইনাল। গতবার (২০১৫) অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠেও অস্ট্রেলিয়া-বাধায় স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। এবার বলতে গেলে অনেকটা ভাগ্যগুণে লীগপর্ব পেরিয়ে এ পর্যায়ে উঠে এসেছে উইলিয়ামসনের দল। তবে সেমিতে শক্তিশালী ভারতকে উড়িয়ে দেয়ার আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে তারাও এখন প্রথম শিরোপার স্বপ্নে বিভোর। আর নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বরণ করে নিতে প্রস্তুত ঐতিহাসিক লর্ডস। বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু পঞ্চাশ ওভারের একদিবসীয় ক্রিকেটের ধুন্ধুমার এ লড়াই। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপে (২০১৫) বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। ঐ বিদায়ের পর থেকে ক্রিকেট অঙ্গনে নিজেদের নতুনভাবে চেনাতে থাকে তারা। দুর্দান্ত ক্রিকেট নৈপুণ্যে উঠে আসে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। অধিনায়ক ইয়ন মরগান বলেন, ‘এটা স্পষ্ট, গত চার বছরে আমরা কতদূর এসেছি। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার পর যদি কেউ আমাকে বলতো চার বছর পর ফাইনালে ওঠার কথা তবে আমি তা বিশ্বাস করতাম না। কারণ ঐ আসরে যেভাবে আমরা বাদ পড়েছি তা ছিল দুঃখজনক। তবে আমরা গেল চার বছর অনেক পরিশ্রম করেছি। সেই ফল আজ দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব দেখছে আমরা এখন সেরার মুকুট পড়া থেকে একা ধাপ দূরে।’ দীর্ঘ ২৭ বছর পর ফাইনালে ওঠার আনন্দে উচ্ছ্বসিত হলেও শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ট্রফি জিতে ইতিহাস গড়ার সুযোগটা কাজে লাগাতে চান, ‘ফাইনালে উঠতে পেরে আমরা সত্যিই উচ্ছ্বসিত। লর্ডসের ফাইনালটা আমাদের জন্য বড় একটি সুযোগ। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। সেরা সাফল্য দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করতে চাই।’ লীগপর্বে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচেই হেরে সেমির পথ কঠিন করে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের সমান ১১ পয়েন্ট সত্ত্বেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় শেষ চারের টিকেট পায় তারা। সেমিতে ভারতের বিপক্ষে আন্ডারডগ হিসেবে খেলতে নেমে অসাধারণ এক জয় তুলে নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ব্ল্যাকক্যাপসরা। দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের সুযোগ তৈরি হওয়ায় দলের খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। যিনি ব্যাট হাতে বলতে গেলে একাই দলকে টানছেন। তবে গেলবার না পারলেও এবার শিরোপা জিততে বদ্ধপরিকর কিউই অধিনায়ক, ‘আবারও আমাদের সামনে বিশ্বমঞ্চে সেরা হওয়ার সুযোগ এসেছে। গেল আসরে আমরা সুযোগ হাতছাড়া করেছিলাম। এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। দলের সবাই শিরোপা জিততে মুখিয়ে আছে। আমি মনে করি আমরা সেরাটা দিতে পারলে এবারের শিরোপা আমাদেরই হবে।’ ১৯৭৩ থেকে এ পর্যন্ত মুখোমুখি ৯০ ওয়ানডের ৪৩টিতে জিতে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের জয় ৪১। টাই ২। পরিত্যক্ত ৪। সার্বিকভাবে বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানেও এগিয়ে কিউইরা। ৪৪ বছরের বিশ্বকাপের ইতিহাসে এ পর্যন্ত ৯ দেখায় ৫ জয় তাদের। ইংল্যান্ডের জয় ৪টি। ওয়েলিংটনে গতবার (২০১৫) ইংলিশদের মাত্র ১২৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তবে এবার চেস্টার লি স্ট্রিটে লীগপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই প্রতিশোধ নেয়া মরগানবাহিনীকে লর্ডসের ফাইনালে আজ বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে। লর্ডসের উইকেট সবসময়ই পেসবান্ধব। তার ওপর ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড দু’দলই ঐতিহ্যগতভাবে সিমিং কন্ডিশনে অভ্যস্ত। সুতরাং লড়াইটা জমে উঠতে পারে। ট্রেন্ট বোল্ট, লোকি ফুর্গুসন, ম্যাট হেনরিদের মোকাবেলায় জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, ইয়ন মরগান, জস বাটলার, বেন স্টোকসদের নিয়ে আয়োজকদের ব্যাটিং অত্যন্ত শক্তিশালী। সেই তুলনায় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং বলতে গেলে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আর সাবেক অধিনায়ক রস টেইলরের ওপর নির্ভরশীল। বড় মঞ্চে ভাল করতে হলে আজ মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, টম লাথামদেরও জ্বলে উঠতে হবে। জোফরা আরচার, ক্রিস ওকস, মার্ক উড, আদিল রশীদদের নিয়ে গড়া বৈচিত্র্যময় ইংলিশ বোলিংয়ের বিপক্ষে তারা কেমন করেন তার ওপর কিউইদের অনেক কিছু নির্ভর করবে।
×