ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি সিন্ডিকেট সভায় আজ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২৯ মে ২০১৯

ঢাবি সিন্ডিকেট সভায় আজ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের বিরুদ্ধে জাতির জনক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অবমাননার তথ্য প্রমাণ আজ উঠছে সিন্ডিকেট সভা। সন্ধ্যায় বসছে গুরুত্বপূর্ণ এ সিন্ডিকেট। জানা গেছে, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টার মতামতেও উঠে এসেছে বিএনপি-জামায়াতপন্থী এ শিক্ষক নেতার সংবিধান লঙ্ঘনের প্রমাণ। যাকে রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল বলেও মতামতে উঠে এসেছে। তবে অধিকাংশ সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ^বিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাবি কর্তৃপক্ষের একটি অংশের রহস্যজনক নীরবতা নিয়ে। জাতির জনক, তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির প্রমাণ পাওয়ার পরও এ শিক্ষককে কেউ কেউ রক্ষা করতে চায় বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রগতিশীল শিক্ষকরা। ব্যক্তিস্বার্থে জাতির জনকের অবমাননাকারীকেও চাকরিতে কৌশলে বহাল রাখার চেষ্টা হচ্ছে। সিন্ডিকেটের অন্তত ৫ জন সদস্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দলের অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে অভিনব কৌশলে এক গ্রেড পদাবনত দিয়ে হলেও চাকরিতে টিকিয়ে রাখার একটা চেষ্টা আছে। তবে এর চেয়ে কম অপরাধ করেও বিধান অনুসারে চাকরিচ্যুত হয়েছে রেজিস্ট্রার। সেখানে ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতিসহ নানা গুরুতর অপরাধ করার পরে মার্কেটিং বিভাগের এ শিক্ষককে রেহাই দেয়ার সুযোগ নেই। জানা গেছে, শিক্ষক মোর্শেদের বিরুদ্ধে গত সিন্ডিকেট সভার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উত্থাপনের পর অধিকাংশ সদস্য ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেন। তবে তার বিরুদ্ধে কি আইনী সিদ্ধান্ত নেয়া যায় তা জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের মতামতের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সদস্য এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে মতামত দিতে বলা হয়। আজ সিন্ডিকেটে এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার মত দেবেন বলে জানা গেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেছেন, এ্যাটর্নি জেনারেল যে মত দেবেন সে অনুসারেই সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করি। ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে ঢাবিতে। আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুতি করে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি জনকণ্ঠে ‘ইতিহাস বিকৃতিকারী ঢাবি শিক্ষককে রক্ষায় তৎপর একটি মহল’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তদন্ত কমিটি বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছিল। সোমবার তদন্ত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তদন্ত কমিটি ও আইন উপদেষ্টার মতামতে বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দলের অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের কর্মকা-কে সংবিধান ও আদালতের বিরুদ্ধে করা অপরাধ হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। এই রিপোর্টে তারা মার্কেটিং বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য জনকণ্ঠের কাছে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গত বছর ইতিহাস বিকৃতির অপরাধে ঢাবির রেজিস্ট্রার চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তার চেয়ে অনেক বেশি অপরাধ করেও কি বিএনপি-জামায়াতপন্থী এ শিক্ষক রক্ষা পেয়ে যাবেন? তাহলে কি করছে প্রশাসন? এমন প্রশ্ন এখন সামনে চলে এসেছে। তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ওই শিক্ষককেও কমিটি ডেকেছিল। তখন তিনি তার লেখা বলেই তা স্বীকার করেছেন।
×