ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘রক্ত ও উত্তরাধিকারের সম্মিলিত অনন্য আদর্শ শেখ হাসিনা’

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১৪ এপ্রিল ২০১৯

 ‘রক্ত ও উত্তরাধিকারের সম্মিলিত অনন্য আদর্শ  শেখ হাসিনা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রক্তের ও উত্তরাধিকারের সম্মিলিত এক অনন্য আদর্শের নাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই তিনি অসহায় রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের স্টেটসম্যানদের অতিক্রম করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাই তো তিনি মাদার অব হিউম্যানিটি। মূলত রাজনীতি হতে হবে নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য, অপরের কল্যাণে, দেশের মঙ্গলের জন্য। সে রাজনীতির ধারাবাহিকতা শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে কিছু ঘটনা ও রটনা’ এবং ‘মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক দুটির গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন। সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মারগুব মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, বশর গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও আবুল বশর আবু উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী বলেন, রক্তের উত্তরাধিকার ও আদর্শে উত্তরাধিকার যখন সম্মিলিত হয় তখন অনন্য, অসাধারণ, বর্ণাঢ্য অবস্থান সৃষ্টি হয়। সেটাই হচ্ছেন শেখ হাসিনা। মিয়ানমারের মানুষদের বিপন্ন অবস্থায় যখন সারা বিশ্ব শুধু বিবৃতি দিয়ে, উদ্বেগ প্রকাশ করে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেছে, সমুদ্রের বিশালতার মতো হৃদয় আর পাহাড়ের মতো উচ্চতার দৃঢ়তা ধারণ করা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেন, বর্ডার খুলে দাও। বিপন্ন মানুষদের মৃত্যুপুরী থেকে রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। সারা বিশ্ব দেখল উন্নয়নশীল একটি ছোট্ট রাষ্ট্র, সেই রাষ্ট্রের স্টেটসম্যান, সারা দুনিয়ার স্টেটসম্যানদের অতিক্রম করে মানবতার একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। সে কারণেই তাকে বলা হয় মাদর অব হিউম্যানিটি। মন্ত্রী বলেন, কীর্তির মধ্য থেকে যারা অমরত্ব লাভ করতে পারে তেমন মহৎ মানুষের আলোচনা থেকে নিজের জ্ঞান অর্জন করা যায়। অবক্ষয়ের স্রোত থেকে আমাদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য আমাদের স্মরণীয় ও বরণীয় মানুষদের জীবনকে অনুসরণ করা দরকার। আমাদের পূর্বপুরুষ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এ জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার জন্য বিভিন্নভাবে অবদান রেখে গেছেন। তাদের রাজনীতি যাকে ঘিরে বিকশিত হয়েছে, তিনি হলেন ইতিহাসের বরপুত্র, সমকালীন বিশ্বে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি, আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জঘন্যতম মিথ্যাচার হয়েছে। এক সময় প্রমাণিত হলো সেটি সত্য নয়। তাত্ত্বিক রাজনীতির কেউ কেউ বলেছিলেন শেখ মুজিব প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য আস্ফালন করছে। কিন্তু ইতিহাসের বর্ণাঢ্য ধারায় উজ্জ্বল হয়ে থাকল, শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দেয়ার পরও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বললেন, আমি চাই বাংলার মানুষের অধিকার। মন্ত্রী আরও বলেন, মনুষ্যত্ববোধ, চেতনা, মূল্যবোধ, সততা এ জায়গাগুলো বিসর্জন দিলে আমাদের আর পশুর সঙ্গে দূরত্ব থাকে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আইন করে বলা হলো বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার করা যাবে না। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি, এটাকে তখন সংবিধানের অংশ করা হলো। কত নিকৃষ্ট জায়গায় আমরা যেতে পারি যে, জাতির জনককে হত্যা করা হয়েছে, এর বিচার করা যাবে না। তিনি বলেন, আমরা ভয়ঙ্কর বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে ছিলাম। ৩০ লাখ মানুষকে খুন করা মানুষদের ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর তালা খুলে দিয়ে বের করে দেয়া হলো। তাদের বিচার হবে না। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে তাদের গাড়িতে পতাকা উড়ল। আজকে তাদের দাম্ভিকতা চূর্ণ হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধুর খুনীরা দাম্ভিকতা নিয়ে বলতে পারে না- খুন করেছি, আমাদের কেউ কিছু করতে পারবে না। ভালোত্বের নির্যাস আমরা সকলে মিলে নিতে চাই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা মহামানব, যারা বরপুত্র, যারা সূর্যসন্তান তাদেরকে আমাদের ধারণ করতে হবে, লালন করতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে। ইতিহাসের দায়বদ্ধতা কাউকে ক্ষমা করবে না। অস্থিতিশীলতার ভেতর থেকে বাংলাদেশে রাজনীতির একটা ভয়ঙ্কর চিত্র এসেছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলো। ২১ বছর পর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে পৌঁছে যাচ্ছি। এমন একটি সময়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে কিছু ঘটনা ও রটনা’ এবং ‘মাদার অব হিউম্যানিটি জননেত্রী শেখ হাসিনা’ গ্রন্থ দুটির প্রকাশনা অত্যন্ত সময়োপযোগী। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যতবার পড়া হয় ততবার তার ভেতর থেকে দার্শনিক চিন্তা বেরিয়ে আসে। একটি ভাষণে অতীতের কথা বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে কী করতে হবে সেটাও বলা হয়েছে। এটা বিশ্বের বিস্ময়। অপরদিকে মায়ের ভূমিকায় দেখি শেখ হাসিনাকে। রাস্তায় পড়ে থাকা মানুষকে যখন তিনি বুকে টেনে নেন তখন দেখি তিনি একজন মানবতাময়ী মা।
×