ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

অভয়নগর-মণিরামপুরে শিক্ষকের ২৪০ পদ শূন্য

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৭ জানুয়ারি ২০১৯

অভয়নগর-মণিরামপুরে শিক্ষকের ২৪০ পদ শূন্য

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ অভয়নগর-মণিরামপুরে শিক্ষক স্বল্পতায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আড়াই বছর বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) নানা জটিলতার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুপারিশ না করায় দুই উপজেলায় শিক্ষকের পদ শূন্য হয়েছে ২শ’ ৪০টি। প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয় পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছে। যে কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা বারবার অভিযোগ করে যাচ্ছে। শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভুল তথ্য দেয়ার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। প্রধানগণ প্রতিষ্ঠান নন-এমপিও হলেও, তিনি দিয়েছেন এমপিও, প্রতিষ্ঠানে শূন্যপদ রয়েছে গণিত, কিন্তু চাহিদা দিয়েছে ইংরেজী এসব কারণে নিয়োগে সমস্যা হচ্ছে। দু’একজন প্রতিষ্ঠান প্রধান জানান, বাজারের কম্পিউটারের দোকানে কাজ করায় এমন হয়েছে। অভয়নগর উপজেলা শিক্ষা অফিস ও এনটিআরসিএর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, উপজেলায় ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে ৬৩টি। উপজেলার দত্তগাতী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিনা খাতুন জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজীর মতো বিষয়ের শিক্ষক না থাকায় আমরা ওই বিষয়ে সঠিকভাবে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারছি না। প্রধান শিক্ষক অসিত কুমার সাহা জানায়, তার বিদ্যালয়ে বাংলা, ইংরেজী, সমাজ বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। যে কারণে শিক্ষকদের ক্লাস নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ কুমার বিশ্বাস জানায়, নিয়োগ দেবে এনটিআরসিএ, এ ব্যাপারে আমরা কিছু বলতে পারব না। ভুল তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভয়নগরে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভুল তথ্য দিয়েছে। যেমনÑ নন-এমপিও প্রতিষ্ঠান, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান লিখেছে। তাছাড়া আরও কিছু কিছু সাধারণ ভুল তারা করেছে। তাছাড়া এবার আমাদের এডিটের কোন সুযোগ ছিল না। অপরদিকে মণিরামপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে ১শ’ ৭৭টি। রতনদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার ওয়াহীদুর রহমান জানায়, মাদ্রাসায় গণিত, সহকারী মৌলভী, সহকারী জুনিয়ার শিক্ষক এর পদ শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন সরকার নিয়োগ না দেয়ায়, ৩টি পদ শূন্য হয়ে গেছে। ৩টি পদ শূন্য থাকায়, ওই বিষয়ের ক্লাসগুলো অন্য শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে। মাদ্রাসায় অঙ্কের শিক্ষক না থাকায় লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের মাদ্রাসায় গণিত ক্লাস নেয়ার মতো কোন শিক্ষক নেই। যে কারণে আমরা গণিতে দুর্বল। অন্য বিষয়ে জিপিএ-৫ পেলেও, আমরা গণিতে জিপিএ-৫ পাচ্ছি না। নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের বিকাশ চন্দ্রের ছেলে রুবেল জানায়, প্রথমে ২০০৫ সালে শুধু বেসরকারী শিক্ষকদের নিবন্ধনের জন্য প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ২০১৫ সালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও গবর্নিং বডির হাত থেকে শিক্ষক নিয়োগের এনটিআরসিএকে সুপারিশ করার দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর একবারই মাত্র নিয়োগের সুপারিশ করতে পেরেছিল সংস্থাটি। কিন্তু সেই সুপারিশও ছিল অনেকটা ভুলে ভরা ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি আরও জানান, সারাদেশে বর্তমান বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ৪০ হাজার পদ শূন্য রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ কুমার সরকার জানায়, নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। খুব তাড়াতাড়ি এনটিআরসিএ শিক্ষক নিয়োগ দেবে। প্রধান শিক্ষাকদের দেয়া তথ্য সংশোধনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, এনটিআরসিএ আমাদের দুবার সংশোধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু আমরা ওই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারিনি। জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়েছে।
×