ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বলেছেন তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা পার্লামেন্টে পাস না হলে তিনি দ্রুত একটি বিবৃতি দেবেন। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি স্বীকার করেন আগামী সপ্তাহে পার্লামেন্টে তার প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি এমপিদের ভোটে পাস নাও হতে পারে। তিনি বলেন, তার পরিকল্পনাটি পাস না হলে পরবর্তী অবস্থার জন্য তিনি তৈরি আছেন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
ডাউনিং স্ট্রিট ইঙ্গিত দিয়েছে, ব্রেক্সিট চুক্তি পার্লামেন্টে পাস না হলে ব্রিটেন কোন চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য তিন মাসের কম সময় হাতে থাকতে মে’কে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। পরিকল্পনাটি নিয়ে তিনি নিজের কনজারভেটিভ পার্টি ও পার্লামেন্টে অন্য গ্রুপের কাছ থেকেও তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছেন। তার মুখপাত্র বলেছেন, চুক্তি পাস হোক বা না হোক তিনি ২৯ মার্চ সময়সীমার মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে চান। পরিকল্পনাটি পার্লামেন্টে পাস হওয়া যে খুব প্রয়োজন সে বিষয়ে মে ইতিপূর্বে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন। একটি পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, এমপিরা যদি ২০১৬ সালে গণভোটের ফলকে সম্মান না দেখান তবে তারা গণতন্ত্রকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেবেন। মে’র মন্ত্রিসভার দুজন সদস্য বলেছেন, তারা কোন চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা সমর্থন করেন না। এমপিদের দুটো পৃথক গ্রুপও বলেছে তারা কোন চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে আসা সমর্থন করেন না। গ্রুপগুলোর মধ্যে পার্লামেন্টে উভয় দলের সদস্যরা আছেন। তাদের এসব বক্তব্যের পর মে’র জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। মে ও ব্রাসেলসের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে বুধবার থেকে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ১৫ জানুয়ারি পার্লামেন্টে তার প্রস্তাবিত পরিকল্পনা পাস না হলে তিনি কি করবেন। উত্তরে তিনি জানান, দ্রুত একটি বিবৃতি দেয়া হবে। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ব্রিফিংকালে মন্তব্য করা হয় যে এর অর্থ কোন চুক্তি ছাড়াই ইইউ ত্যাগ করা নয় কি, মে’র মুখপাত্র বলেন, সেটি কোন ভাল বিকল্প নয়। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ জনগণ ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছে, ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। এটিই সরকারের অবস্থান। আমরা চুক্তির মাধ্যমে ইইউ থেকে বিরিয়ে আসতে চাই। তবে কোন কারণে সেটি সম্ভব না হলে চুক্তি ছাড়াই বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।’ মে মন্ত্রিসভার সদস্যদের কাছে এটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, অনুচ্ছেদ ৫০-এর আর সম্প্রসারণ ঘটানো হবে না। দ্বিতীয় গণভোটের সম্ভাবনাও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার কোন কোন সদস্য নো ডিল ব্রেক্সিটের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। এদের মধ্যে আছেন বাণিজ্যমন্ত্রী গ্রেগ ক্লার্ক ও পেনসন মন্ত্রী এ্যাম্বার রুড। রুড মে’র ঘনিষ্ঠ মহলের একজন হিসেবে পরিচিত। বুধবার ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর পার্লামেন্টে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ব্রেক্সিট মন্ত্রী স্টেফেন বার্কলে এর সূচনা করেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোন চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট হলে সেটি ব্রিটিশ সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি করবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি থেকে শুরু করে যাতায়াত ও কর্মসংস্থান অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। এজন্য অনেক ব্রেক্সিট সমর্থকও নো ডিল ব্রেক্সিট সমর্থন করেন না। ব্রেক্সিট ডিল পাস না হলে মে সরকার তাই উভয় সঙ্কটে পড়তে পারে।