বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। তারেক রহমান এই টাকা আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
সোমবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নানক বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ বিএনপি জামায়াত অপশক্তির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। একইসঙ্গে ব্যালটের মাধ্যমে আগুন সন্ত্রাসী ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের বিরুদ্ধে রায় দেবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মদদদাতা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রায় দিবে। দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, অর্থ পাচারকারী, এতিমের টাকা আত্মসাতকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণ নৌকার পক্ষে গণরায় দেবে।
বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের আড়ালে বিএনপি কত টাকা বিদেশে পাচার করেছে এমন প্রশ্ন তুলে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মনোনয়ন বাণিজ্যের প্রতিবাদে তাদের চেয়ারপার্সনের কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রেখেছে। এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের অপদস্থ করা হয়েছে এবং দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করতে দেখা গেছে। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত ও অগণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালিত হয়েছে এবং ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্য সংগঠিত হয়েছে। তাদের নেতাকর্মীদের অভিযোগ অনুযায়ী পলাতক তারেক রহমান এই মনোনয়ন বাণিজ্য চালিয়েছে। তাহলে দেশবাসীর প্রশ্ন বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যে দেশ থেকে কত টাকা পাচার হয়েছে? আর এই টাকা আগামী নির্বাচনে ব্যবহার হলে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন নেতা আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। যা থেকে বুঝা যায় বিএনপি এবং জামায়াত নাশকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। আর জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার মতো কোন অর্জন তাদের নেই। তারা ক্ষমতা থাকতেও দেশের কল্যাণ, অগ্রগতিতে কোন ভূমিকা রাখেনি। বরং দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল এবং বিরোধীদলে থেকে নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশের শত শত নিরীহ নাগরিককে হত্যা করেছে। জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার মতো তাদের কোন নৈতিক ও যৌক্তিক ভিত্তি নেই। তাই নিজেদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা ষড়যন্ত্রের পথে, চক্রান্ত্রের মাধ্যমে, নাশকতা ও সন্ত্রাসের পথ ধরে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।
‘ঐক্যফ্রন্টের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ড. কামাল হোসেন সাহেবরা’ এমন মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এইসব ব্যক্তিরা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন, দুর্নীতিবাজ সংগঠন, আগুন সন্ত্রাস, এতিমের টাকা আত্মসাতকারী, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও জাতীয় চার নেতার খুনীদের পক্ষ অবলম্বন করছেন। ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে তাদের ভাওতাবাজির মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে বর্ণচোরা এসব রাজনীতিবিদরা জনগণের রায়ে প্রত্যাখ্যাত হবে। নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: