বিডিনিউজ ॥ বিএনপির গত শাসনামলে একই সঙ্গে দুটি সরকার চালু ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার জাতীয় যুব দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তিনি বলেন, সরকার একটি ছিল, তার পাশাপাশি আরেকটা সরকার থাকল। একটি হলো হাওয়া ভবনের সরকার, একটা প্রধানমন্ত্রীর দফতর সরকার। তার ফলে বাংলাদেশের সব উন্নয়ন ব্যাহত। আমরা আবার পিছিয়ে গেলাম। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর উন্নয়নযাত্রা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তার ফল কী হত্যা, দখল, চাঁদাবাজি, জঙ্গীবাদ, বাংলা ভাই, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, সংসদ সদস্যদের হত্যা, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী হত্যা এবং দেশব্যাপী একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করা। বাংলাদেশ বিশ্বে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। আর কিছুতে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ। বিদ্যুত উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা এবং সাক্ষরতা বাড়ানোর সব উদ্যোগ সে সময় ব্যাহত হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যা যা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, একে একে সবই বন্ধ হয়ে গেল। ক্ষুদ্র একটা গোষ্ঠী রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ। তারা হয়ে গেল সম্পদের মালিক, হাজার হাজার কোটি টাকা। যাদের জীবন শুরু হয়েছিল ভাঙ্গা স্যুটকেস দিয়ে তারা হয়ে গেল হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। মানি লন্ডারিং থেকে শুরু করে এতিমের টাকা চুরি পর্যন্ত সব ধরনের অপরাধ সে সময় করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, দেশের মানুষ যখন একটু সুখের মুখ দেখে তখন কিছু মানুষের মনে অসুখ সৃষ্টি হয়, কীভাবে একটি স্থিতিশীল পরিবেশকে ধ্বংস করবে, সেই চেষ্টাই করে। আগামীতে ১৫/১৬ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্যসীমা ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। ইনশা আল্লাহ, আশা করি আমরা আগামীতে দারিদ্র্যসীমা ১৫/১৬ এর মধ্যে নামিয়ে আনতে সক্ষম হব। বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে চলবে। বাংলাদেশকে এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে বাংলাদেশের নাম এক সময় মানুষ শুনলে বলত ঝড়, দুর্ভিক্ষ, র্দুীতির দেশ। আজকে সে দুর্নাম নেই। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আমাদের এই সম্মানটা ধরে রাখতে হবে। যুব সমাজকে কীভাবে দেশ গড়ার কাজে ব্যবহার করা যায় সে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যুবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। হাজার হাজার প্রকল্প চলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারী খাত উন্মুক্ত করে দিয়েছি। সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা কর্মসংস্থান তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। যুব সমাজ যাতে চাকরির অভিশাপ থেকে মুক্তি পায় এবং নিজেদের মেধা-মনন দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে সে উদ্যোগ তার সরকার নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: