ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন আজ

মধ্য নবেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

মধ্য নবেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকার পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের সুখবর মিলেছে। মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে অনুষ্ঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের তথা বাংলাদেশ-মিয়ানমার পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠক শেষে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন। মিয়ানমার পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ আনুষঙ্গিক সব বিষয় মাথা রেখে নবেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম ধাপে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে প্রত্যাবাসন শুরু করা হবে। মিয়ানমার পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেছেন, উত্তর রাখাইন রাজ্যে কোন ধরনের বৈষম্য যেন না হয় সে লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা ফিরে যাবেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মিয়ানমার পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে আরও জানিয়েছেন, বৈঠকে আমরা আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, নমনীয়তা ও সমঝোতার মনোভাব দেখিয়েছি যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়। কিন্তু প্রথম ধাপে কত সংখ্যক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা হবে তা তিনি ঘোষণা দেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দু’দফায় যে ৮ হাজার ৩২ রোহিঙ্গা তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে এদের সবাইকে মিয়ানমার স্বীকার করে নিয়েছে। তবে যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ৪শ’ জন। অপরদিকে, বৈঠকে নেতৃত্বদানকারী পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘আমরা আশা করছি নবেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব। এটা হবে প্রথম গ্রুপ। তিনি আরও জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মিয়ানমার পক্ষের দুই সদস্য আজ বুধবার কক্সবাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শনে যাবেন। শহীদুল হক জানান, এই দুই সদস্য রোহিঙ্গাদের বুঝাবেন যাতে তারা রাখাইনে ফিরে যায়।’ পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক আরও জানিয়েছেন, রাখাইনে তারা সার্বিক নিরাপত্তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের উভয় পক্ষের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। কিছু বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তও হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনের পর রোহিঙ্গাদের সেফটি ও সিকিউরিটি নিয়ে কথা বলা হয়েছে। মিয়ানমার পক্ষ আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, নবেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সেফটি ও সিকিউরিটির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরা শুরু হবে। তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে উভয় দেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এ সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশ পক্ষ সেভাবেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
×