ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্ট স্বীকৃত সন্ত্রাসীদের ঐক্য ॥ ১৪ দল

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

ঐক্যফ্রন্ট স্বীকৃত সন্ত্রাসীদের ঐক্য ॥ ১৪ দল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তিসহ আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবিকে ‘অবাস্তব, অযৌক্তিক ও সংবিধানবিরোধী’ উল্লেখ করে তাৎক্ষণিকভাবে এসব দাবি নাকচ করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে ১৪ দলের নেতারা এই ঐক্যকে স্বীকৃত সন্ত্রাসী-জঙ্গীবাদী-খুনী-স্বাধীনতাবিরোধী দলের সঙ্গে কিছু জনবিচ্ছিন্ন ও গণধিকৃত ব্যক্তিত্বের ঐক্য বলে মন্তব্য করে বলেছেন, নির্বাচন নয়, দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই ষড়যন্ত্রকারীরা মাঠে নেমেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জনকণ্ঠকে জানান, বিএনপি-জামায়াতসহ আত্মপ্রকাশ হওয়া জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের দেয়া সাত দফা দাবি ই সম্পূর্ণভাবে অবাস্তব, অযৌক্তিক ও কিছু কিছু অংশ সংবিধানবিরোধী। তাই এসব দাবি মেনে নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। সারাদেশের মানুষ এখন নির্বাচন মুডে রয়েছেন। সব দলই নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের এসব অবাস্তব ও সংবিধানপরিপন্থী দাবি মানার তো প্রশ্নই উঠে না। নির্বাচনকে বানচাল করতে ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা সম্পর্কে দেশের মানুষ অবগত। তাই দেশের জনগণও তাদের ওই বিতর্কিত ও সংবিধানবিরোধী দাবিগুলো সমর্থন করে না। ১৪ দলীয় জোটের প্রধান শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জনকণ্ঠকে বলেন, রেজিস্টার দুর্নীতিবাজ-সন্ত্রাসী দল বিএনপি, ড. কামাল হোসেনদের নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সাত দফা দাবির মধ্যে মূল সারবস্তু হচ্ছে দুটি। প্রথমটি হচ্ছে- রেজিস্টার্ড দুর্নীতিবাজ-দ-িত খালেদা-তারেকসহ সকল হত্যা-খুন-গ্রেনেড হামলাকারী- অগ্নিসন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িত ও দ-িত জঘন্য অপরাধীদের মুক্তি। দ্বিতীয়টি হচ্ছে- নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়, বরং অবাস্তব-অসাংবিধানিক নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা দিয়ে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে অস্বাভাবিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনার পাঁয়তারা মাত্র। এটা জাতির সামনে পরিষ্কার। তিনি বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, জঙ্গী, ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্টসহ সকল হত্যাকারীদের আশ্রয়স্থল হচ্ছে বিএনপি। এরা দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য বিপদজ্জনক। নির্বাচন নয়, নির্বাচন বানচাল করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিই তাদের প্রধান লক্ষ্য। দুর্নীতি ও রাজাকারদের কাছ থেকে এক হাজার মাইল দূরে থাকা ড. কামাল হোসেন তাঁর সকল ভদ্রতা ও মুখোশ ফেলে দিয়ে সেই স্বীকৃতি দুর্নীতিবাজ-সন্ত্রাসী খালেদা জিয়া-তারেক গংসহ স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গীবাদীসহ জামায়াত-শিবিরকে পুনরুদ্ধার ও আশ্রায়ণের জন্য মাঠে নেমেছেন। কিন্তু দেশের জনগণ অশুভ শক্তিদের এসব ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত কোনদিনই মেনে নেবে না। দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির কেউ চেষ্টা করলে জনগণই শক্তহাতে তা প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জনকণ্ঠকে বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে তা প্রমাণিত হয়েছে। ইতোপূর্বে কানাডার ফেডারেল কোর্ট বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে রায় দিয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি এমন একটি সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দলের (বিএনপি) সঙ্গে অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন ও গণধিকৃত ব্যক্তিবর্গের মিলে এই ঐক্য ফ্রন্ট জাতীয় কল্যাণের কি আসবে? সন্ত্রাসী দল ও জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিবর্গের এই ঐক্য নিয়ে দেশের জনগণের কোন মাথাব্যথা নেই। ঐক্যে আসা এসব ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে অশুভ তৎপরতা চালাতে পারে। কিন্তু দেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। এদের কোন ধরনের ষড়যন্ত্র কিংবা অশুভ তৎপরতা দেশের মানুষ মেনে নেবে না, বরদাস্তও করবে না। বরং দেশের বিরুদ্ধে যে কোন ষড়যন্ত্রের দাতভাঙ্গা জবাব দেশের জনগণই দেবে।
×