ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা ॥ চক্রের ৫ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১২ অক্টোবর ২০১৮

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা ॥ চক্রের ৫ জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে সিআইডি বলছে, প্রতারক চক্রের সদস্যরা এবার চেষ্টা করেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে পারেনি। প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর মনিটরিংয়ের কারণে চক্রের সদস্য প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য তারা ভুয়া প্রশ্নপত্র আসল প্রশ্নপত্র বলে ফাঁস করে অনেকের কাছ থেকেই মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ডিজিটাল আইনে দায়েরকৃত প্রথম মামলার আসামি হয়েছে গ্রেফতারকৃতরা। তাদের দুই দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলাপারের দনিয়া এলাকায় অভিযান চালায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের একটি বিশেষ দল। অভিযানে গ্রেফতার করা হয় বিকাশের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত দুজনকে। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় দুটি মোবাইল ও একটি বিকাশ রেজিস্টার খাতা। তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক বুধবার রাতেই বাড্ডা থানাধীন আলিফনগর থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও তিন জনকে। তাদের কাছ থেকে জব্দ হয় তিনটি মোবাইল ও দুটি ল্যাপটপ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, পিরোজপুর জেলার ভা-ারিয়ার বাসিন্দা কালাম গাজীর ছেলে কাউসার গাজী, চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাসিন্দা জাকির হোসেনের ছেলে সোহেল মিয়া, মাদারীপুরের কালকিনি থানার হাসানুর রশীদের ছেলে তারিকুল ইসলাম শোভন, নওগাঁ জেলার পতœীতলা থানার বাসিন্দা আলমের ছেলে রুবাইয়াত তানভির আদিত্য, টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি থানার বাসিন্দা আনসার আলীর ছেলে মাসুদুর রহমান ইমন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, এবার প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা জোরদার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর মনিটরিঙের কারণে এমবিবিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। পরীক্ষা শুরুর অনেক আগ থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমের ওপর নজর রাখা হচ্ছিল। যে কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্র আর সুবিধা করতে পারেনি। আসল প্রশ্ন ফাঁস করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ চক্রের সদস্যরা ভুয়া প্রশ্নপত্র আসল প্রশ্নপত্র বলে প্রচার করে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রেফতারকৃত চক্রটির মাস্টারমাইন্ড কাউসার গাজী। চক্রটি বহু বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। কাউসার গাজীর বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এবার এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে না পেরে নিজেদের মতো তারা প্রশ্ন তৈরি করে। এর পর বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে ভুয়া প্রশ্নপত্র আসল প্রশ্নপত্র বলে প্রচার করতে থাকে। এমন ফাঁদে পা দেয় অনেক শিক্ষার্থী। অনেক শিক্ষার্থী চক্রটির কবলে পড়ে বহু টাকা খুইয়েছেন। চক্রটি ভুয়া বিকাশ এ্যাকাউন্ট খুলে তার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত চক্রটির ১০টি ভুয়া ফেসবুক এ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল বলছেন, কাকতালীয় হলেও সত্য, ডিজিটাল আইনে পল্টন থানায় যে প্রথম মামলাটি দায়ের হয়েছে গ্রেফতারকৃতরা সেই মামলার আসামি হয়েছে। চক্রের আরও সদস্য আছে বলে জানা গেছে। তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শিব্বির আহমেদ আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সত্যব্রত শিকদার আসামিদের দুই দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
×