ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবাসিক গ্যাস গ্রাহকের কার্ড প্রিপেইড মিটারের বদলে স্মার্ট মিটার

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৫ অক্টোবর ২০১৮

আবাসিক গ্যাস গ্রাহকের কার্ড প্রিপেইড মিটারের বদলে স্মার্ট মিটার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আবাসিক গ্যাস গ্রাহকের কার্ড প্রিপেইড মিটারের পরিবর্তে স্মার্ট মিটার দিতে চায় সরবকার। সরাসরি মোবাইল থেকে রিচার্জ করার জন্য স্মার্ট মিটার দেয়ার পক্ষে মন্ত্রণালয়। রাজধানী ছাড়াও দেশের অন্যসব আবাসিক গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তিতাস এবং কর্ণফুলি গ্যাস বিতরণ এলাকার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের আওতায় আনার জন্য যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তার এখন অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জ¦ালানি খাতের প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনার বৈঠকে জ¦ালনি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, কার্ড পদ্ধতির মিটারে গ্রাহককে কার্ড কিনে মিটার রিচার্জ করতে হবে। অন্যদিকে স্মার্ট মিটারে সরাসরি মোবাইল থেকেই রিচার্জ করা যায়। কার্ড কেনা এবং রিচার্জের ঝামেলা থেকে মুক্তির জন্য স্মার্ট মিটারের বিকল্প নেই। সেজন্য কোন মিটার গ্রাহকের ব্যবহারের জন্য সুবিধাজনক তা তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিয়ে জানাতে হবে। বলা হচ্ছে এখন তিতাসের প্রিপেইড মিটারে বিল দিতে গিয়ে গ্রাহককে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সরকার এই বিড়ম্বনা থেকে মুক্তির জন্যই প্রিপেইড এর বদলে স্মার্ট মিটারের প্রচলন করতে চায়। তবে স্মার্ট মিটারের ক্ষেত্রে গ্রাহক কি কি সুবিধা পাবেন সেই সুবিধা গ্রাহক ঠিক মতো ব্যবহার করতে পারবেন কি না সে বিষয়ে শুরুতেই বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। এজন্যই প্রতিবেদনটি তৈরি করতে বলা হয়েছে। জ¦ালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, এখন যেহেতু কার্ড মিটারের পরবর্তী ধাপ হিসেবে স্মার্ট মিটার চলে এসেছে তাই নতুন করে কার্ড মিটারে গ্রাহককে গ্যাস দেয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, একবার গ্রাহকের আঙ্গিনায় কার্ড মিটার লেগে গেলে আর স্মার্ট মিটার লাগানোও সম্ভব না। এক্ষেত্রে গ্রাহককে ব্যবহার সহজ করার জন্য যে সুবিধা দেয়া যেত তা দেয়াও আর সম্ভব হবে না। সেজন্যই প্রতিবেদনটি তৈরি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন ও ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম এবং প্রিপেইড মিটারের প্রকল্প পরিচালক ফাইজার রহমানকে প্রতিবেদনটি তৈরি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফাইজার রহমান বলেন, আমাদের তিন দিনের মধ্যে গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কোন পদ্ধতির মিটার ভাল তা আমাদের জানাতে বলা হয়েছে। এখন তিতাস দুটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে লালমাটিয়া ও মোহাম্মদপুর -আদাবর এলাকায় যথাক্রমে চার হাজার ৫০০ ও ৮ হাজার ৬০০ গ্রাহকের আঙ্গিনায় প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করেছে। বর্তমানে আরও দুই লাখ গ্রাহকের আঙ্গিনায় মিটার স্থাপনের কাজ চলছে। রাজধানীতে বাড্ডা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, ক্যান্টনমেন্ট, মিরপুর, আজমপুর, কাফরুল, খিলক্ষেত, উত্তরখান ও উত্তরা এলাকায় ১ লাখ ৭০ হাজার আবাসিক গ্রাহকের আঙ্গিনায় প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হবে। অবশিষ্ট ৩০ হাজার প্রি -পেইড মিটার নতুন উপশহর এলাকা উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প, পূর্বাচল প্রকল্প ও ঝিলমিল প্রকল্প এলাকার আবাসিক গ্রাহকের আঙ্গিনায় স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার আশা করা হলেও এখন বলা হচ্ছে আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করতে চায় তিতাস। এ বিষয়ে তিতাসের প্রকল্প পরিচালক বলেন, বাস্তবে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হওয়াতে কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। আমরা এ কারণে সময় বৃদ্ধি করতে চাইছি। ৭১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে তিতাস। যার মধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ৪৫৩ কোটি, সরকার ২৩৬ কোটি ও তিতাসের নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে ২২ কোটি টাকা। জ্বালানি বিভাগ জানায়, তিতাসের দুই লাখের মধ্যে ৫৭ হাজার ৭২৯টি মিটার স্থাপন হয়ে গেছে। প্রকল্পের আওতায় ২৫০টি পয়েন্ট অব সেলস পরিচালনার জন্য ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরইমধ্যে ১২টি পিওএস স্থাপিত হয়েছে। এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মশিউর রহমান বলেন, এক চুলা বা দুই চুলার বিল পৃথক। সব গ্রাহকেরই উচিত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী মিটার নেয়া। এতে করে অপচয় কমে যাবে। তিনি বলেন, গ্যাসের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। এখন প্রি-পেইড মিটার স্থাপন খুবই জরুরী। জ্বালানি বিভাগ জানায়, চট্টগ্রামে ৬০ হাজার মিটারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৭০৮ টি প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। ২২ হাজার ২৭ গ্রাহকের আঙ্গিনায় স্থাপিত মিটারগুলোকে প্রি-পেইড মোডে কমিশনিং করা হয়েছে।
×