ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অযত্ন-অবহেলায় সীতারাম রায়ের রাজবাড়ী

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

অযত্ন-অবহেলায়  সীতারাম রায়ের রাজবাড়ী

মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার রাজা সীতারাম রায়ের রাজ বাড়িটি আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মাগুরা জেলা সদর থেকে ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মহম্মদপুর উপজেলা সদরে রাজা সীতারাম রায়ের রাজ বাড়ি অবস্থিত। মধুমতি পাড়ে অবস্থিত উপজেলা সদর সপ্তদশ শতাব্দীতে স্বাধীন চেতা ও প্রজাবৎসল রাজা সীতারাম রায় তার রাজধানী স্থাপন করেন। রাজা সীতারাম আজ নেই শুধু কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে রাজবাড়ি। সিতারাম রায়ের স্থাপনাগুলো অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংস প্রায় ভগ্ন স্তূপে পরিণত হবার পর সেগুলো প্রতœদফতর সংস্কার করেছে। দখলদারদের দখলে ইতোমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অনেক অমূল্য পুরাকীর্তি। অনেক স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়েছে। রাজা সীতারামের বাবা উদয় নারায়ন রায় ছিলেন তৎকালীন ভূষণা রাজ্যের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। উদয় নারায়ণ মহম্মদপুরের শ্যামনগরে জোত বন্দোবস্ত নিয়ে মধুমতি পাড়ের হরিহর নগরে বসতি স্থাপন করেন। ষোড়শ শতাব্দীর শেষ ভাগে সীতারাম সাতৈর পরগনার বিদ্রোহী পাঠান করিম খাঁকে শায়েস্তা করার পুরস্কার স্বরূপ ভূষণা রাজ্যের নলদী পরগনার জায়গীরদার নিযুক্ত করেন। সুবেদার শায়েস্তা খা তাকে রাজা উপাধিতে ভূষিত করেন। পরে দিল্লির বশ্যতা অস্বীকার করলে বাংলার নবাব মুর্শিদ কুলি খা রাজা সীতারামকে শায়েস্তা করতে সেনাপতি আবু তোরাবের নেতৃত্বে সৈন্য প্রেরণ করেন। এ যুদ্ধে তোরাব নিহত ও নবাব বাহিনী পরাজিত হয়। এর পর ক্ষিপ্ত নবাব সেনাপতি দয়ারাম ও বক্স আলী খাঁর নেতৃত্বে পুনরায় বিশাল সৈন্যদল পাঠান। বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করার এক পর্যায়ে রাজা সীতারাম পরাজিত ও নিহত হন। বর্তমানে রাজা সীতারাম রায়ের রাজধানীর রাজবাড়িটি অযত্ন-অবহেলায় প্রায় ভগ্ন স্তূপে পরিণত হবার পর আবার সংস্কার করা হয়েছে। রাজবাড়িটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। পর্যটন কেন্দ্র পরিণত করা হলে স্বাধীনচেতা রাজা সিতারাম রয়ের স্মৃতিকে ধরে রাখা সম্ভব হবে। -সঞ্জয় রায় চৌধুরী, মাগুরা থেকে
×