ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউএস বাংলা দুর্ঘটনা ॥ কাঠমান্ডুর পত্রিকার রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের

পাইলটের ওপর দায় চাপাতে চাইছে নেপাল!

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৮ আগস্ট ২০১৮

পাইলটের ওপর দায় চাপাতে চাইছে নেপাল!

আজাদ সুলায়মান ॥ তদন্তের আগেই কাঠমান্ডুতে ইউএস বাংলা দুর্ঘটনার জন্য পাইলটের ওপর দায় চাপানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে নেপাল। কাঠমান্ডুর একটি পত্রিকায় এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে ‘পাইলট আবিদ ককপিটে বসে ধূমপান করছিল’ বলে বিতর্কিত তথ্য প্রকাশ করেছে। তদন্তের মাঝপথে হঠাৎ এ ধরনের প্রতিবেদন বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছেন দেশী-বিদেশী এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকায় সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে এ সংবাদকে ভুয়া দাবি করে নেপাল সিভিল এভিয়েশনের কাছে সোমবার তাৎক্ষণিক এ ধরনের বিতর্কিত সংবাদ প্রকাশের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। জবাবে নেপাল সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছেÑ তারা এ সংবাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদলিপি পাঠাবে ‘কাঠমান্ডু পোস্ট’ অফিসে। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ তদন্ত প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে বলে নেপাল সিভিল এভিয়েশনও স্বীকার করেছে। উল্লেখ্য, সোমবার নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয় ফ্লাইটের পাইলট প্রচ- মানসিক চাপে ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি ককপিটে ক্রমাগত ধূমপান করছিলেন। এসব তথ্যের সূত্র হিসেবে ‘নেপাল সরকারের তদন্ত দলের প্রতিবেদন’ উল্লেখ করেছে কাঠমান্ডু পোস্ট। যদিও তদন্ত দলের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্ত থাকা এক সদস্য জানিয়েছেন-ইউএস বাংলার দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন এখনও শেষ হয়নি। তারা কীভাবে জানলেন-পাইলট ধূমপান করছিলেন। জানতে চাইলে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা এ সংবাদ পাওয়ার পর পরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। ওই তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য, আমাদের সিভিল এভিয়েশনের এআইজির প্রধান ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিনের মাধ্যমে কাঠমান্ডু পোস্টের বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। নেপাল সিভিল এভিয়েশন থেকে তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ পাঠানো হবে। তদন্ত চলা অবস্থায় এমন সংবাদ প্রকাশ করাটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর। এটা তাদের সমীচীন হয়নি। কাঠমান্ডু পোস্টের ওই প্রতিবেদনটিকে সম্পূর্ণ ভুয়া দাবি করে তদন্তটিমের অন্যতম সদস্য ক্যাপ্টেন সালাউদিদন বলেছেন- নেপালের কর্তৃপক্ষও ওই সংবাদটির গ্রহণযোগ্যতা খারিজ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও যেখানে শেষ হয়নি। ফলে এর প্রতিবেদন জনগণের সামনে উপস্থাপনের পর্যায়ে আসেনি। এই অবস্থায় নেপালি পত্রিকা কীভাবে তদন্ত প্রতিবেদনের সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করেছে, সেটা তার কাছে স্পষ্ট নয়। নেপালি পত্রিকায় এই প্রতিবেদন দেখে তিনি দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তারাও এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেনি। আমি এই কমিটির মেম্বার হিসেবে জানি, এই এ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। তদন্ত অর্ধেকের কিছুটা বেশি হয়েছে। তবে তা সাধারণ মানুষকে জানানোর মতো নয়। নেপাল এ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশনের যে চেয়ারপার্সন এবং উনার যে মেম্বার সেক্রেটারি, তাদের সঙ্গে আমি কথা বললাম। তারাও এটা স্বীকার করেছেন যে এটা সম্পূর্ণরূপে ভুয়া। আমি বলেছি কাঠমান্ডু পোস্টের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিতে। তখন নেপাল সিভিল এভিয়েশন সে আশ্বাসও দিয়েছে। সোমবার কাঠমান্ডু পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ দুর্ঘটনার জন্য উড়োযানটির ক্যাপ্টেন আবিদ হাসানকে দায়ী করা হয়। এতে বলা হয়, এই পাইলট ক্রমাগত ধূমপান করছিলেন। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্তও ছিলেন। আর কো পাইলট পৃথুলা রশীদের সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলছিলেন এবং এ কারণে পৃথুলা চাকরি ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। ক্যাপ্টেন আবিদ ‘ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মারাত্মক মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন এবং ওই অবস্থায় তিনি একের পর এক যেসব ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন। তার পথ ধরেই কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়। পত্রিকাটি দাবি করেছে, ওই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেপাল সরকারের গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের অনুলিপির ভিত্তিতেই তারা সংবাদটি প্রকাশ করেছে। কাঠমান্ডু পোস্ট লিখেছে, ফ্লাইটের পুরো সময়টায় প্রধান বৈমানিক আবিদের আচরণ তার স্বাভাবিক চরিত্রের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না’। তবে ইউএস বাংলার পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বিমান সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্ল্যাক বক্সের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট কি বের হয়েছে? ওই বক্সের রিপোর্ট তো নেপালের তরফ থেকে আসবে না। আসবে আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটির তরফ থেকে। আর এটাকে তদন্ত রিপোর্ট বলারও সুযোগ নেই। এটা একটা অবান্তর রিপোর্ট। ইউএস বাংলা ও পাইলট আবিদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এটা হয়েছে। গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত হয় এয়ারক্রাফট এ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ অব বাংলাদেশের (এএআইজি-বিডি) ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যুক্ত হয়। বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্সের তথ্য ডিকোডের কাজ শুরু হয় ২৩ এপ্রিল থেকে। এছাড়া তদন্তের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিমান, সেই ফ্লাইটের পাইলট ও কো-পাইলটসহ অন্যান্য বিষয়ের ২০০-এরও বেশি ডকুমেন্ট পাঠানো হয় নেপালে। বাংলাদেশ থেকে তদন্ত দলে যোগ দেয়া প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন এএআইজি-বিডির প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ। এছাড়াও তদন্তে ইউএস-বাংলার ড্যাস-৮-কিউ-৪০০ বিমানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কানাডার বোম্বারডিয়ারের দুই সদস্যও ছিলেন। কাঠমান্ডু দুর্ঘটনার তদন্তের সর্বশেষ চিত্র ও প্রক্রিয়া স¤পর্কে জানতে চাইলে প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহ্উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেনÑ এ ধরনের তদন্ত প্রক্রিয়ায় বেশ সময় লাগে। ইতোমধ্যে রিপোর্ট তৈরিতে আমরা অনেকটা এগিয়েছি। তারপরও তদন্ত শেষে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রস্তুত হতে আরও সময় লাগবে। ফলে এখনই কোন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। রিপোর্ট প্রস্তুত হওয়ার পর নেপালের সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রীর কাছে তা দেয়া হবে। তার কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর সেই রিপোর্ট ইন্টারন্যাশনাল বডিকে পাঠানো হবে। যাদের কাছ পাঠানো হবেÑ তাদের মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইকাও), যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং আরও কিছু প্রতিষ্ঠান। তাদের ৬০ দিন সময় দেয়া হবে প্রতিবেদনটি দেখে কোন কমেন্ট বা অভজারভেশন থাকলে তা দেয়ার জন্য। এরপর তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর কমপাইল করে ফাইনাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হবে এবং তারপর তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে। তখন আমি মিডিয়ায় পর্যবেক্ষণ বা মতামত দিব। তার আগেই কেন এ নিয়ে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ কিউ ৮০০ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজটিতে ৪ জন ক্রু ও ৬৭ যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশী পাইলট ও কো-পাইলটসহ চারজন ক্রু এবং আরও ২৩ জন বাংলাদেশী, ২৩ জন নেপালি ও একজন চীনা যাত্রী নিহত হন। আহত হন ৯ জন বাংলাদেশী, ১০ জন নেপালি ও একজন মালদ্বীপের নাগরিক। দুর্ঘটনার তদন্তও শুরু হয় যথারীতি। এখনও তদন্তের অর্ধেকও শেষ হয়নি। অথচ সোমবার এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গঠিত নেপাল সরকার কর্তৃক গঠিত তদন্ত দলের সূত্র দিয়ে ক্যাপ্টেন আবিদের ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশ করে কাঠমান্ডু পোস্ট। কাঠমান্ডু পোস্ট এই সংবাদ প্রকাশের পর ঢাকায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক পরিচালক ওই প্রতিবেদনটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর পরই ত্রিভুবন এয়ারপোর্টকে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ ও নেপাল এটিসির ভুল সিগন্যাল সিস্টেম নিয়ে দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক সমালোচনা করা হয়েছে। তখন নেপাল থেকে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানানে হয়েছিল- তদন্তের আগেই যেন নেপালকে দোষারোপ করে এ ধরনের কোন সংবাদ গণমাধ্যমে ছাপা না হয়। অথচ সেই নেপালের কাঠমান্ডু পোস্টই এ কা- ঘটিয়ে বসলো। এটা অবশ্যই মোটিভেটেড। কারণ তদন্ত প্রতিবেদন এখনও চূড়ান্ত হয়নি। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে একপেশেভাবে পাইলটকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনার আগে নেপালের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে পাইলটকে বিভ্রান্তিকর নির্দেশনা দেয়ার যে অভিযোগ ছিল, সে বিষযে কোন তথ্য প্রতিবেদনে নেই। দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও উদ্ধারকর্মীদের ব্যর্থতা নিয়েও নেপালের কোন গণমাধ্যমে কোন সংবাদ ছাপা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএস বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন- এটা নিয়ে কথা বলার পরিস্থিতি হয়নি। এখনও তদন্ত শেষ হয়নি, তদন্ত কমিটি এখনও আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। তাহলে রিপোর্ট কোথা থেকে পেল কাঠমান্ডু পোস্ট। ককপিটে ধূমপানের কথা বলা হয়েছে, তারা এটা কীভাবে জানালো? ককপিটে তো সিসি ক্যামেরা নেই। আবার বিমানের ভেতরে সামান্যতম ধোঁয়া হলে ফায়ার এ্যালার্ম বাজবে। ফলে ধূমপানের বিষয়টি কাল্পনিক। এছাড়া যে মানসিক চাপের কথা বলা হচ্ছে এটিও সঠিক নয়। মূলকথা- তদন্ত প্রতিবদেন প্রকাশের আগে কোন তথ্যই সঠিক বলা যাবে না। দুনিয়ায় এ ধরনের কোন নজির নেই। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতেই মূলত এ ধরনের সংবাদ ছাপিয়েছে কাঠমান্ডু পোস্ট। এদিকে নেপাল ট্র্যাজেডির দায়ভার পাইলট আবিদ সুলতানের ওপর চাপালেও ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার থেকে প্রায়ই ভুল এবং বিভ্রান্তিকর বার্তা দেয়। ত্রিভুবনের এটিসি টাওয়ার অবতরণের ভুল নির্দেশনা দেয়ার অতীত নজির রয়েছে। নেপালের ইংরেজী দৈনিক নেপালি টাইমস বিমান বিধ্বস্তের পরপরই (১২ মার্চ, ২০১৮) বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে পাইলটের সর্বশেষ কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ করে। নেপালি এ দৈনিক ওইদিন তাদের প্রতিবেদনে জানায়, কন্ট্রোল রুম থেকে ভুল বার্তা দেয়ার কারণেই ককপিটে দ্বিধায় পড়েন পাইলট আবিদ। অডিও রেকর্ডের শুরুতে শোনা যায়, কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানের পাইলটকে বিমানবন্দরের ডানদিকের দুই নম্বর রানওয়েতে অবতরণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। পরে পাইলট বলেন, ঠিক আছে স্যার। নির্দেশনা অনুযায়ী পাইলট বিমানটি বিমানবন্দরের ডানদিকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান কন্ট্রোল রুমে। কিন্তু ডানদিকে রানওয়ে ফ্রি না থাকায় পাইলট আবারো কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় তাকে ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এবারে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি বর্তমান অবস্থানে থাকতে পারবেন? এ সময় পাইলট দুই নম্বর রানওয়ে ফ্রি করার জন্য কন্ট্রোল রুমের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু তাকে আবারও ভিন্ন বার্তা দেয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর পাইলট বলেন, স্যার আমি আবারও অনুরোধ করছি রানওয়ে ফ্রি করুন। এর পরপরই বিমানটি বিকট শব্দ করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই বিমানটি ত্রিভুবন বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে আঁছড়ে পড়ে। এ দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছয় কর্মকর্তাকে পরদিন ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারের কার্যালয় থেকে বদলি সরিয়ে দেয়া হয় ত্রিভুবন বিমানবন্দরের ৬ কর্মকর্তাকে। শুধু এটিসি টাওয়ারই নয়- দেশটির আবহাওয়া বিভাগও (ডিএইচএম) নেপালের আবহাওয়া-সংক্রান্ত ভুল তথ্য অনেক সময় প্রকাশ করে। পাইলটদের কাছে নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এটিসি টাওয়ারের ভুল বার্তার ব্যাপারে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ দেশটির অপর ইংরেজী দৈনিক দ্য হিমালয়ান টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এটিসি টাওয়ার থেকে প্রায়ই পাইলটদের কাছে এ ধরনের ভুল বার্তা দেয়া হয়। ওই সময় হিমালয়ান টাইমসকে বিমানের একাধিক পাইলট জানান, তারা প্রায়ই এটিসি টাওয়ার থেকে আবহাওয়া-সংক্রান্ত ভুল বার্তা পান।
×